বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান বলেছেন- শেখ হাসিনা ছিলেন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে নিকৃষ্ট স্বৈরশাসক। শেখ মুজিব এদেশে বাকশালা কায়েম করেছিলেন, আর শেখ হাসিনা এদেশে কায়েম করেছিলো ডিজিটাল বাকশাল। বিগত ১৬ বছর কেমন ছিলো বাংলাদেশ, জামায়াত-শিবিরসহ এদেশের জনগণ তার স্বাক্ষী। এমন দেশ তো কেউ চাইনি। ৩ মেয়াদে আওয়ামী লীগ দেশ শাসন করলেও একবারও তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। যে কারণে তারা দেশ ও জনগণের কল্যাণে কোন কাজ করেনি। কোটি কোটি ডলার আওয়ামী লুটেরারা বিদেশে পাচার করেছে। এদেশের মেহনতি মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স তারা লুট করেছে। ব্যাংকগুলো অর্থশূণ্য হয়ে পড়েছে। কোন ব্যাংক গ্রাহকদের টাকা দিতে পারছে না।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রামু উপজেলা শাখার কর্মী সম্মেলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুহাম্মদ শাহজাহান এসব কথা বলেন। রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর বিকাল তিনটায় রামু সিটি পার্ক কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত এ সম্মলনে প্রধান বক্তা ছিলেন, কক্সবাজার জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা নুর আহমদ আনোয়ারী।
রামু উপজেলা জামায়াতের আমীর ও রামু উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফজলুল্লাহ মুহাম্মদ হাসানের সভাপতিত্বে আয়োজিত বিশাল কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- কক্সবাজার জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর মুফতি মাওলানা হাবিব উল্লাহ, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা এডভোকেট ফরিদ উদ্দিন ফারুকী, কক্সবাজার সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি ও কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শহীদুল আলম বাহাদুর।
সম্মেলনে সহকারী সেক্রেটারী মুহাম্মদ শাহজাহান আরও বলেন- শেখ মুজিবুর রহমান উপমহাদেশের অবিসংবাদিত নেতা ছিলেন, কিন্তু তিনি বাকশাল কায়েম করে সব দল নিষিদ্ধ করেছিলেন। যার কারণে মৃত্যুর পর শেখ মুজিবের জানাযা পড়ার লোক পাওয়া যায়নি। তার মেয়ে শেখ হাসিনাও পিতার মতো স্বৈরাচারী কায়দায় দেশ শাসন করে আস্তাকূড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। ১৬ বছরে জামায়াত শিবিরের অসংখ্য নেতাকর্মীকে হত্যা ও গুম করা হয়েছে। নির্যাতনের পর নির্যাতন করা হয়েছে। জামায়াতের প্রথম সারির সকল নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। এ কঠিন পরিস্থিতিতেও জামায়াত এদেশে সুপ্রতিষ্ঠিত ছিলো, শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী বাতিল শক্তির কাছে এক সেকেন্ডের জন্যও মাথা নত করেনি। কারণ জামায়াত কেবল আল্লাহকেই ভয় করে। যে কারণে নির্যাতন নিপীড়ন সত্ত্বেও জামায়াত ঠিকে ছিলো। অথচ আওয়ামী লীগ একটি প্রাচীন রাজনৈতিক দল। একটানা ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকার পরও ক্ষমতা হারানোর পর এক ঘন্টার জন্যও রাজনীতিতে ঠিকতে পারেনি। এতেই প্রমানিত হয়েছে, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে নিকৃষ্ট স্বৈরশাসক ছিলেন।
রামু উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আবু নাঈম মুহাম্মদ হারুনের সঞ্চালনায় আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন- নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা জামায়াতের আমীর ওমর ফারুক, রামু উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা মুহাম্মদ রফিক, উপজেলা সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা রফিকুল আলম, উপজেলা উপজেলা আইন বিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মদ তৈয়ব উল্লাহ, উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি মোক্তার আহমদ, কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি বাদশা আলম, গর্জনিয়া ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি আকতার কামাল, ফতেখারকুল ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি সোহরাব হোসেন, খুনিয়াপালং ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি মাওলানা জয়নাল আবেদীন, চাকমারকুল ইউনিয়ন সভাপতি মাওলানা শরীফুল হক, উপজেলা অফিস সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন সেলিম, উপজেলা যুব সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, উপজেলা কর্মপরিষদ সদস্য মাস্টার আবদুল মান্নান, ছাত্রশিবিরের উপজেলা সভাপতি ইরাক মিয়া প্রমূখ।
সম্মেলনে রামু উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের সহস্রাধিক জামায়াত ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। দুপুরের পর থেকে খন্ডখন্ড মিছিল সহকারে নেতাকর্মীরা সভাস্থলে আসতে থাকে।
পাঠকের মতামত: