অনলাইন ডেস্ক :: পুলিশকে উদ্দেশ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা বলেছেন, ‘বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের তথ্য সংগ্রহের নির্দেশনা আমরা দেইনি। এটা আপনারা করবেন না। কারণ এটা নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে। এতে ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাগণ বিব্রত হন। আমরা এটা চাই না। তাদের হয়রানি করবেন না।’
বৃহস্পতিবার আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক বিশেষ সভায় এসব কথা বলেন সিইসি।
তিনি আরও বলেন, ‘অধিকাংশ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা এর আগেও ভোটগ্রহণে কাজ করেছেন। যে কারণে তাদের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহের কিছু নেই। তবে নতুন কোনো ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার তথ্য যদি সংগ্রহ করার প্রয়োজন হয় তাহলে গোপন সূত্র বা সোর্স ব্যবহার করে সংগ্রহ করতে পারেন। বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তাদেরকে জিজ্ঞেস করার দরকার নেই। এটা আমরা চাই না।’
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে সিইসি বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার পর কাউকে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার করবেন না। মামলা করবেন না। কাউকে হয়রানিমূলক মামলা বা গ্রেফতার করা যাবে না। আশা করি আপনারা এটা করছেনও না।’
অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘আপনাদের কারণে যেন নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সে বিষয়টি লক্ষ্য রাখবেন। এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেন না সব দল অংশ নেবে। নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি একা করা সম্ভব নয়। প্রজাতন্ত্রের সকলে মিলেই নির্বাচন সুষ্ঠু করতে কাজ করবো। নির্বাচনের সিংহভাগ দায়িত্ব থাকে পুলিশের। ভোটারের নিরাপত্তা থেকে শুরু করে সব ধরনের নিরাপত্তার দায়িত্ব আপনাদের ওপরই।’
সিইসি আরও বলেন, ‘নির্বাচন যেন কোনোভাবে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়। আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব পালনে আমরা পূর্ণ স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। তবে কমিশন আপনাদের কর্মকাণ্ড নজরদারি করবে। অলরেডি অভিযোগ আসা শুরু হয়েছে। তবে আপনারা নির্বিঘ্নে দায়িত্ব পালন করবেন। উদ্বিগ্ন ও আতঙ্কিত হবার কিছু নেই। অভিযোগ আসলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে না। অভিযোগ যাচাই না করে আপনাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে না।’
পুলিশ বাহিনীকে উদ্দেশ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, নির্বাচন পরর্বতী সহিংসতা রোধ করাও আপনাদের দায়িত্ব। ঐতিহ্যগতভাবেই এই দায়িত্বও আপনাদের। এবারও দেশের বৃহত্তম স্বার্থে আপনারা দায়িত্ব পালন করবেন। সংবিধান মতে- কর্তৃত্ব নয়, বিবেক মতে কাজ করতে হবে। প্রজাতন্ত্রের সকলে নির্বাচন পরিচালনায় সহায়তা করবে। আমরা কারও ওপর কতৃত্ব করবো না। নির্বাচন পরিচালনায় সহায়তার বিষয়ে সংবিধানে যেমন বলা আছে। আইনশৃঙ্খলার বিভিন্ন পর্যায়ের তথ্য একমাত্র পুলিশেরই আছে। তাই বিভিন্ন বাহিনী পুলিশের কাছ থেকেই পরামর্শ নেবে। পুলিশকে এখনই কৌশলগত পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে বলেও জানান সিইসি।
সভায় চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, অতিরিক্ত সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, আইজিপি, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক, ডিএমপি কমিশনারসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পাঠকের মতামত: