ঢাকা,বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪

বিয়েতে সৌদি নারীদের পছন্দের শীর্ষে বাংলাদেশি পুরুষরা

ডেস্ক নিউজ ::
দেশে পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যা বেশি। ফলে দেশের বহু নারীই অবিবাহিত থেকে যান। এবার এই সমস্যা সমাধানে আদা-জল খেয়ে নেমেছে সৌদি সরকার। বিয়ে করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে ভিনদেশের ছেলেদেরকে। বংলাদেশিরাও এই সুযোগ পাবেন।

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এবার সৌদি নারীদের বিদেশিরাও বিয়ে করতে পারবেন। সুযোগ করে দিচ্ছে সৌদি সরকার।

এমনকি থাকছে রোজগারেরও সুযোগ। তবে এই সুবিধা পেতে ‘স্পেশাল এক্সপ্যাক্ট’ সিস্টেমে অগ্রিম রেজিস্ট্রি করাতে হবে। এরপর পেনশন-সহ বেতনের সুবিধাও ভোগ করতে পারবেন তারা।

তবে সৌদি আরবের সরকার বিদেশিদের বিয়ে করার ক্ষেত্রে নতুন শর্ত বেঁধে দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে তাদের নতুন কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে।

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজের খবরে বলা হয়, বিয়ের ক্ষেত্রে একজন সৌদি পুরুষ ও একজন বিদেশি স্ত্রীর মধ্যে অনুমোদিত বয়সের পার্থক্য হলো অর্ধেক। তবে সৌদি নারীদের মধ্যে যারা বিদেশিদের বিয়ে করতে চায় তাদের জন্য বয়স সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কমানো হয়েছে। এখন ২৫ বছর বয়সী সৌদি নারীরাও বিদেশি পুরুষদের বিয়ে করতে পারবেন। আগে এই সীমা ছিল ৩০ বছর বয়স।

এ ছাড়া ২০১৬ সালে বিদেশিদের সঙ্গে সৌদি নাগরিকদের বিয়ের ক্ষেত্রে করা ১৭টি পয়েন্ট তালিকায় সংশোধনী আনা হয়েছে। সংশোধনীতে বলা হয়েছে, দম্পতিদের বয়সের পার্থক্য ১৫ বছরের বেশি হওয়া যাবে না। এর আগে ছিল ৩০ বছর।

সৌদি ডেইলি ওকাজের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়, সৌদি নারীদের মধ্যে যিনি বিদেশি স্বামী নিতে চান তার বয়স কখনোই ৫০ বছরের বেশি হওয়া যাবে না। এর আগে সর্বোচ্চ ৫৫ বছরের কথা উল্লেখ ছিল। সৌদি আরবের আইন মন্ত্রণালয়ের মতে, বিবাহিত সৌদি নারীদের শতকরা ১০ ভাগ তথা প্রায় ৭ লাখের মতো সৌদি নারী বিদেশিদের বিয়ে করেন। তবে ঠিক কতজন সৌদি পুরুষ বিদেশিদের বিয়ে করেন তার প্রকৃত তথ্য জানা যায়নি।

সৌদি পরিবারগুলোর কল্যাণের জন্য চ্যারিটেবল সোসাইটির আওসিরের প্রধান তৌফিক আল সোয়ায়লেম বলেন, গত ২০ বছরে অ-সৌদি নারীদের সঙ্গে সৌদি পুরুষদের বিয়েও একটি সাধারণ ঘটনা হয়ে উঠেছে। যৌতুকের উচ্চ হার, বিয়ের খরচ, কম আয় এবং পারিবারিক জ্ঞানের অভাব প্রভৃতি কারণেই সৌদি পুরুষরা বিদেশিদের স্ত্রী রূপে গ্রহণ করছেন।

সৌদি পুরুষ নাগরিকদের অসৌদিদের বিয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ অনুমতি প্রয়োজন। সংশোধনীর নিয়ম অনুসারে, একজন সৌদি পুরুষের বয়স ৪০ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে হলে তিনি বিদেশি কোনো নারীকে বিয়ে করতে পারবেন। অন্যদিকে একজন সৌদি নারী বিদেশি কোনো পুরুষকে বিয়ে করতে চাইলে তার বয়স হতে হবে ৩০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে।

যদি পাত্রী যদি ডিভোর্সী হয় তাহলে বিচ্ছেদের পর কমপক্ষে দুই বছর অপেক্ষা করতে হবে। তার পর তিনি বিয়ে করার জন্য আবেদন করতে পারবেন। আবার কোনো সৌদি পুরুষ নিজে যদি সৌদি কোনো নারীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ থাকার পরও কোনো বিদেশিনিকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করতে চান তাহলে এর জন্য সরকারি একটি সার্টিফিকেট দাখিল করতে হবে। তাকে এটা প্রমাণ করতে হবে, বিয়ে সংক্রান্ত সব দায়িত্ব পালনে প্রথম স্ত্রী অক্ষম। সার্টিফিকেটটা অবশ্যই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদিত হতে হবে।

আবেদনকারীকে একটি ডকুমেন্টেও স্বাক্ষর করতে হবে; যেটি দ্বারা এটা বোঝায় যে, বিবাহের অনুমোদনের অর্থ এই নয় যে তার বিদেশি স্ত্রীকে সৌদি নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।

একজন অ-সৌদি পুরুষ যিনি এরই মধ্যে বিয়ে করেছেন তিনি কোনো সৌদি নারীদের বিয়ে করতে পারবেন না। কোনো বিদেশি পুরুষ যদি কোনো সৌদি নারীকে বিয়ে করতে চান তাহলে তার নিজ দেশ এবং সৌদিতে তিনি অপরাধের সঙ্গে জড়িত না এমন প্রমাণ দিতে হবে।

আবার তিনি সংক্রামক বা জেনেটিক রোগে ভুগছেন কি না তারও প্রমাণ দিতে হবে। তাকে অন্য কোনো দেশের সামরিক সদস্য হওয়া যাবে না। সৌদি আরবে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞাদের তালিকায়ও থাকা যাবে না তাকে। এ ছাড়া বিদেশি স্বামীকে কমপক্ষে পাঁচ হাজার সৌদি রিয়াল আয় করতে হবে এবং একটি বৈধ বাসস্থানের অনুমতি থাকতে হবে।

অ-সৌদি পুরুষদের সকল তথ্য অনুসন্ধান করার জন্য একটি কমিটি গঠনের কথাও বলা হয়েছে নতুন সংশোধনীতে। পরে আবেদনকারীর আবেদন গ্রহণের এক মাসের মধ্যে তথ্য যাচাই বাছাই শেষে কমিটির সদস্যরা তাদের অভিমত জানাবেন।

তবে বাংলাদেশসহ চারটি দেশের নারীদের বিয়ে করতে পারবে না সৌদি আরবের পুরুষরা। সৌদি সরকার ২০১৪ সালেই এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। অন্য তিনটি দেশ হলো- পাকিস্তান, চাদ ও মিয়ানমার।
সৌদি আরবে তিন কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশই বিদেশি। যারা কাজের জন্যই মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে এসেছেন।
সূত্রঃ কালের কণ্ঠ

পাঠকের মতামত: