নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: চকরিয়ার ডুলাহাজারায় চলমান পরিবেশ বিধ্বংসী অপতৎপরতা বন্ধে উচ্চ আদালত রুল জারি করেছে। একই সঙ্গে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন কর্তৃক ৬টি বালুমহাল ইজারা দেওয়ার পরিপত্রের কার্যকারিতা আগামী তিনমাস পর্যন্ত স্থগিত করেছে উচ্চ আদালত। এছাড়া ডুলাহাজারার রংমহল গ্রামের সন্নিকটে বিদ্যমান জলাধার, টিলা, কৃষিজমি, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক এবং সংরক্ষিত বনভূমি রক্ষায় কেন বিবাদীদের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হবে না তাও জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট।
গতকাল মঙ্গলবার উচ্চ আদালত এই সংক্রান্তে রুল জারিসহ উপরোক্ত নির্দেশনা দিয়ে তা বাস্তবায়নের নির্দেশ প্রদান করে। সেই সঙ্গে বালু উত্তোলনের ফলে উল্লেখিত এলাকার পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থার যে ক্ষতি সাধিত হয়েছে তা নিরূপন সাপেক্ষে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করে। আদেশে সরকারের দুই মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিভিন্ন সংস্থার প্রধানকে বিবাদী করে এই রুলের জবাব চাওয়া হয়েছে।
বিবাদীরা হলেন- ভূমি এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, প্রধান বনসংরক্ষক, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার, পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক, চট্টগ্রাম বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের উপ-পরিচালক, চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা, চকরিয়া থানার ওসি এবং ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চ বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) কর্তৃক দায়েরকৃত এক জনস্বার্থমূলক মামলার (নং- ৪২৭২/২০২২) প্রাথমিক শুনানির পর উল্লেখিত রুল ও আদেশ জারি করেন। বেলা এবং ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটির (ইয়েস) পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন ব্যারিস্টার আশরাফ আলী, অ্যাডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।
উল্লেখ্য, গত তিনবছর ধরে বালু উত্তোলনের নামে ডুলাহাজারায় বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের সীমানা দেয়াল ঘেঁষে সংরক্ষিত বনভূমির টিলা, সমতল ভূমি কেটে মাটি অপসারণের পর অর্ধ শতাধিক ড্রেজার ও শ্যালো মেশিন বসিয়ে ৫০-৬০ ফুট গভীর থেকে ভূ-গর্ভের বালু উত্তোলন, ছড়াখাল ভরাট, বালু পরিবহনসহ পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড চলমান রয়েছে। এ নিয়ে দৈনিক চকরিয়া নিউজ সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
পাঠকের মতামত: