ঢাকা,শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

ফাগুনে শিলাবৃষ্টি

image_149569_0নিউজ  ডেস্ক ::

ঢাকা: এখন ফাল্গুন মাস। ফাল্গুনেই রোদ আর মেঘের লুকোচুরি। বৃষ্টি যে হবে তার আলামত দেখা দিয়েছিল বুধবার সকালের দিকেই। ভোররাতেও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে রাজধানীতে হঠাৎ নেমে এলো কালবৈশাখীর মতো ঝড়ো বাতাস নিয়ে শিলাবৃষ্টি। বাতাসে ধুলার গন্ধ মুছে দিয়ে বৃষ্টি ঝরলো ধুলোবালির রাজধানীতে। হঠাৎ বৃষ্টি নগরের অনেককে ভিজিয়েছে।

কংক্রিটের রাজধানীর অনেক বাসিন্দাকে দেখা গেছে উল্লাসে বৃষ্টিধারা গায়ে মেখে নিতে। বিরক্তও হয়েছেন কেউ কেউ, বিশেষ করে পায়ে হেঁটে কিংবা রিকশায় কোথাও যাওয়ার তাড়া ছিল যাদের।
ষড়ঋতুর দেশ হলেও বাংলাদেশে এখন গ্রীষ্ম, বর্ষা আর শীত- এ তিন ঋতুর অস্তিত্বই প্রবল। আষাঢ়-শ্রাবণ বর্ষা হলেও বৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে এবং জ্যৈষ্ঠ মাসেই বৃষ্টি শুরু হয়। তবে এবার বসন্তেই বৃষ্টি ধরা দিল। আবহাওয়াবিদরা একে বলছেন অসময়ের বৃষ্টি। বর্ষার ভরা মৌসুমে বৃষ্টি নেই। আর অসময়ে আকাশ ভেঙে নামল তুমুল বৃষ্টি। শীত বিদায় নিয়েছে কয়েক দিন আগেই। চলছে ফাগুনের উদাসী হাওয়া। এর মধ্যে বুধবারের বৃষ্টি অবশ্য অনেকের মনে স্বস্তি এনে দিয়েছে। আগাম এ বৃষ্টি চলতি বোরো মৌসুমের সেচকাজে কৃষকের বাড়তি সুবিধা দিয়েছে। তবে কৃষকরা শঙ্কিত, এই মাত্রাতিরিক্ত বৃষ্টি আর শিলা তাদের কষ্টের ফসল নষ্ট হতে পারে। শিলাবৃষ্টিতে আলু ও গমের ক্ষতি হতে পারে। এমনিতেই বোরো মৌসুমে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি থাকে সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়াও এবার আমের প্রচুর মুুকুল দেখে কৃষকের মনে বেশি ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কা। কারণ খনার বচনে আছে, ‘আমের বছর বান, কাঁঠালের বছর ধান’।

আবহায়া অফিস জানায়, পূবালী লঘুচাপে বর্ধিতাংশ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বিস্তৃত রয়েছে। এর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে এই শীলাবৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়াবিদ আরিফ হাসান জানান, গত রাত থেকে দেশে বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এরমধ্যে বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ৩ ঘণ্টায় ফেনীতে ৩ মিলিমিটার, খুলনায় ২২ মিলিমিটার, পটুয়াখালী ১০ মিলিমিটার, বরিশালে ১৪ মিলিমিটার, হাতিয়ায় ১৯ মিলিমিটার, ভোলায় ১১ মিলিমিটার, মাদারীপুরে ১ মিলিমিটার, চাঁদপুরে ৬ মিলিমিটার, সন্দ্বীপে ২ মিলিমিটার, সাতক্ষীরায় ৬ মিলিমিটার, সীতাকণ্ডে ৫ মিলিমিটার, কুমিল্লায় ১ মিলিমিটার এবং মাইজদীকোর্টে ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
আরিফ হাসান জানান, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হতে পারে।

আবহাওয়া অফিস জানায়, বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা ১ মিলিমিটার, মাদারীপুরে ৪৭ মিলিমিটার, গোপালগঞ্জে ১৮ মিলিমিটার, সীতাকুন্ডে ৪২ মিলিমিটার, রাঙ্গামাটিতে ৬১ মিলিমিটার, কুমিল্লায় ১৭ মিলিমিটার, চাঁদপুরে ১১ মিলিমিটার, মাইজদীকোর্টে ৬ মিলিমিটার, ফেনীতে ৩০ মিলিমিটার, হাতিয়ায় ১ মিলিমিটার, সিলেটে ১ মিলিমিটার, শ্রীমঙ্গলে ১৪ মিলিমিটার, খুলনায় ২৩ মিলিমিটার, মংলায় ১০ মিলিমিটার এবং সাতক্ষীরায় ৭০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

পাঠকের মতামত: