ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

মামলার বাদীকেও হত্যার হুমকি, আসামীরা অধরা

পেকুয়ায় মালেক মাঝি হত্যার ঘটনায় ১৩জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা

পেকুয়া প্রতিনিধি ::  কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলায় আব্দুল মালেক প্রকাশ মালেক মাঝি (৩৫) নামে এক যুবককে রাতের আধারে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় অবশেষে ১৩জনের বিরেুদ্ধে পেকুয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে নিহতের ভাই আবদুল খালেক। অপরদিকে হত্যা মামলা দায়েরের পর হতে মামলার বাদীকেও এবার হত্যার হুমকি দিচ্ছে আসামীরা। উল্লেখ্য, গত ১৭জুলাই দিনগত রাত দেড়টার দিকে পেকুয়া উপজেলার টৈটং ইউনিয়নের গুদিকাটা ঘোনার মাথা এলাকায় হত্যাকান্ডের শিকার হন মালেক মাঝি। তিনি ওই গ্রামের নুরুল হকের পুত্র।

গতকাল ২০ জুলাই পেকুয়া থানায় নিহত মালেক মাঝির ভাই আবদুল খালেক বাদী হয়ে ১৩জনকে আসামী করে মামলাটি দায়ের করেছেন। যার মামলা নং ১৩। মামলার আসামীরা হলেন, মোহাম্মদ আলম প্রকাশ মাহমদ মাঝি (৫০) পিতা মৃত নুরুল ইসলাম, মনজুর আলম (৫০) পিতা মৃত ফজল করিম, মীর আহমদ (৫৫) পিতা মৃত কাছিম আলী, বাহাদুর (৪৮) পিতা মৃত কাহিম আলী, রাশেদুল ইসলাম (২৫) পিতা মীর আহমদ, এরশাদ (২৩) পিতা মীর আহমদ, আরফাত (২১) পিতা মীর আহমদ, সর্বসাং গুনিকাটা, মোঃ তারেক (২৫) পিতা আবু তাহের, সর্বসাং শেখেরকিল্লাঘোনা, ৫নং ওয়ার্ড, পেকুয়া, মোঃ সুজন (৩০) পিতা জহির, মোঃ এহেছান (৩৪) পিতা মোঃ হোছন, মোঃ হারুন (২৭) পিতা মনজুর আলম, বদি আলম (৪৮) পিতা মৃত মোজাহের আহমদ, সিকান্দর (৩৫) পিতা এজাহার মিয়া, সর্বসাং- গুদিকাটা, পূর্ব টইটসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪/৫জনকে আসামী করা হয়েছে। ৮ নং আসামী মো: তারেকের বিরুদ্ধে পেকুয়া থানায় জিআর ২০/২২৫, ৮৭/১৮ইংপেকুয়া থানায় মামলা নং ১০,তারিখ ১৪/১০/২০১৫ইং, জিআর মামলা নং ১৭৮সহ বহু মামলা থানা ও আদালতে বিরাচারাধীন রয়েছে। মালেক মাঝি হত্যা মামলা দায়েরের পর থেকে মামলার বাদিকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে হত্যা মামলার আসামী তারেক এমনটাই অভিযোগ করেছেন মামলার বাদি আবদুল খালেক।

পেকুয়া থানায় দায়েরকৃত হত্যা মামলার এজাহারে মামলার বাদি উল্লেখ করেছেন, আসামীরা সন্ত্রাসী, লাঠিয়াল, খুনি ও মাস্তান প্রকৃতির লোক হয়। তাহারা দেশের প্রচলিত আইন-কানুন কিছুই মানে না। আমার ভাই ভিকটিম মালেক মাঝি (৩৫) বিগত ইউপি নির্বাচনে এমইউপি পদপ্রার্থী ছিল এবং ২নং আসামী মনজুর আলমও গত ইউপি নির্বাচনে আমার ভাইয়ের সাথে প্রতিদ্বন্দিদ্বতা করে। আমার ডাই ভিকটিম মালেক মাঝি নির্বাচিত হলেও কারচুপির মাধ্যমে ২নং আসামী মনজুর আলম নির্বাচিত হয়। এসময় থেকে মনজুরের সাথে উক্ত ঘটনার জের ধরে আমার ভাইয়ের সাথে বিরোধ চলে আসছিল। আমার ভাইকে মনজুর আলমসহ অপরাপর আসামীরা হত্যার জন্য পরিকল্পনা করে এবং হুমকি ধমকি দেয়। ইতিপূর্বে ২নং আসামী মনজুর আলম আমার ভাইকে হত্যার পরিকল্পনা করে ব্যর্থ হয়। আমার অপর ভাই রহিম মাঝির মেয়েকে ৬নং আসামী এরশাদের সাথে বিবাহ দেয়া হয়। পূর্ব শত্রুতার আক্রোশে ১ ও ২নং আসামীর পরিকল্পনা করে ৩-১৩নং আসামীদের সাথে নিয়ে সুপরিকল্পিতভাবে গত ১৭/০/২০২৩ইংতারিখ রাত অনুমান ১১ঘটিকার সময় আমার ছোট ভাই ভিকটিম মালেক মাঝিকে আসামীরা বাড়ি থেকে ৩নং আসামীর বাড়িতে দাওয়াত দিয়ে ডেকে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ওইদিন ১৮/০৭/২০১৩ইং তারিখ দিবাগত রাত আনুমানিক ১ঘটিকার সময় আমাদের এলাকার কাসেম নামের এক লোক তাহার মোবাইলের মাধ্যমে জানায যে, আমার তাই ভিকটিম মালেক মাঝিকে আসামীরা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আমার ভাই মালেক মাঝিকে হাত পা রশি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় ৩ নং আসামীর বসতঘর তেকে উদ্ধার করি। পরে চিকিৎসার জন্য আমার ভাইকে পেকুয়া সরকারী হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে চমেকে রেফার করা হয়। আমার ভাই চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ঘটনার আগে ১-১৩ আসামীদের গুরুতর আঘাতের কারণে মারা যান।

মামলার বাদি আবদুল খালেক অভিযোগ করেছেন, পেকুয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হলেও মামলার পর তেকে একজন আসামীকেও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। মামলা নিতেও পুলিশ গড়িমসি করেছে। এখন মামলার আসামী তারেক আমাকেও হত্যার হুমকি দিচ্ছে। তাই আমি নিজের জীবনহানির শংকায় রয়েছি। এদিকে পেকুয়া থানায় দায়েরকৃত হত্যা মামলাটি তদন্ত করছেন থানার ওসি (তদন্ত) সুদীপ্ত শেখর ভট্টচার্য্য।

এ প্রসঙ্গে পেকুয়া থানার ওসি (তদন্ত) সুদীপ্ত শেখর ভট্টচার্য্য বলেন, নিহতের ভাই থানায় মামলা দায়েয়ের পর মামলটি তিনি তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন। মামলার পর তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং আসামীদের গ্রেফতারে চেষ্টা করছেন।

পাঠকের মতামত: