ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

পুলিশের তদন্তে গাফেলতি : এসআই বিভাসের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার নির্দেশ

কক্সবাজার প্রতিনিধি :: তদন্তে গাফলতি ও অবহেলা এবং আদালতে ত্রুটিপূর্ণ অভিযোগপত্র দেয়ায় কক্সবাজার সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বিভাস কুমার সাহার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কক্সবাজার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। একটি ডাকাতি প্রস্তুতি মামলার অভিযোগপত্রে নানা ত্রুটি ও তদন্ত কর্মকর্তা বিভাস কুমার সাহার গাফলতি দেখে কক্সবাজার চীফ জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আলমগীর মুহাম্মদ ফারুকী এ আদেশ দেন।

বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন। আদেশের কপিটি বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) কাছে পাঠানো হয়েছে।
এজাহার মতে, ২০২০ সালের ৩০ মে কক্সবাজার সদর থানার তৎকালীন এসআই সনৎ বড়ুয়া বাদী হয়ে ৩ জনকে আটক ও ৫-৬ জন অজ্ঞাত আসামী দেখিয়ে একটি ডাকাতি প্রস্তুতি মামলা করেন।

ওই মামলার এজাহার নামীয় আসামীরা হলেন, কক্সবাজার পৌরসভার বিজিবি ক্যাম্প এলাকার এসএমপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের মো. নাছিরের ছেলে আবদুল গফুর (২২), একই এলাকার বড়পুকুর সংলগ্ন আবদুল হকের ছেলে মোহাম্মদ তারেক (২২) ও লাইটহাউজপাড়ার উপরের মসজিদের পাশের মৃত আবুল বশরের ছেলে মোহাম্মদ জাহেদ (২৩)।

পরে সদর থানার এসআই বিভাস কুমার সাহা তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে ২০২১ সালের ৪ মার্চ আদালতে এজাহার নামীয় ৩ আসামীসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

অভিযোগ শুনানীকালে আদালতের পর্যবেক্ষণ মতে, এজাহারে নাম না থাকা সত্ত্বেও যে ৩ জনকে অভিযোগপত্রে আসামী করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষীরা ১৬১ ধারার জবানবন্দিতে কোন বক্তব্য তদন্ত কর্মকর্তার কাছে প্রদান করেননি। এমনকি ওই ৩ জনের নামও সাক্ষীরা তদন্ত কর্মকর্তার কাছে বলেনি। তাছাড়া আদালত অভিযোগপত্রে ও তদন্তে আরো অন্যান্য ত্রুটি লক্ষ্য করেন।

পর্যবেক্ষণে আরো উল্লেখ রয়েছে, তদন্ত কর্মকর্তা তদন্তকালে চরম অবহেলা ও গাফিলতি দেখিয়েছেন। তিনি কেন এবং কিভাবে সন্ধিগ্ধ ৩ জন আসামীকে অভিযোগপত্রে অন্তর্ভুক্তি করেছেন তা আদালতের নিকট বোধগম্য হয়নি। তদন্ত কর্মকর্তার এ ধরণের কার্যক্রম কাম্য নয়। তার এ ধরণের অবহেলা, ত্রুটি ও বিচ্যুতির বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসা আবশ্যক মনে করেছেন আদালত।

এবিষয়ে কক্সবাজার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আশেক ইলাহী শাহাজাহান নূরী বলেন, অভিযোগপত্র বিশ্লেষণ করে আদালত এজাহারনামীয় ৩ জন আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করলেও বাকি আসামীদেরকে অব্যাহতি প্রদান করেছেন।
তিনি আরো বলেন, তদন্তে গাফলতি, অবেহেলা এবং নানা ত্রুটিতে ভরপুর অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করায় তদন্ত কর্মকর্তা এসআই বিভাস কুমার সাহার বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আলমগীর মুহাম্মদ ফারুকী। আদেশের কপি আইজিপিকে পাঠানো হয়েছে।
আদালতের আদেশ বিষয়ে কক্সবাজার সদর থানার এসআই ও ডাকাতি প্রস্তুতি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিভাস কুমার সাহা বলেন, মামলাটি ১৪০০ পুলিশ একযোগে বদলি হওয়া আমলে দায়ের করা। আমি যোগদানের পর এ মামলাসহ ৩৫টি মামলা তদন্তের ভার পায়। নবাগত হিসেবে শহরের রাস্তাঘাট, মানুষজন কিছুই চিনতাম না। এ কারণে অনিচ্ছাকৃত ভাবে আমার প্রতিবেদনটি ভূল হয়েছে। এর পেছনে আমার কোন অনৈতিক উদ্দেশ্য ছিলো না। আমি লিখিত ক্ষমা চাইবো।

পাঠকের মতামত: