এম.আর মাহমুদ :: কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মহোদয়কে সাধুবাদ। তিনি মহাসড়কের যাত্রী ও চালকদের সচেতন করতে প্রচারপত্র বিতরণের কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। গেল ১৭ সেপ্টেম্বর আশ্বিন মাসের কাঠফাঁটা রোদ উপেক্ষা করে বাড়ি থেকে চকরিয়া সদরে পৌঁছার পর পর প্রিয় সহকর্মী অনুজ কালের কণ্ঠের চকরিয়া প্রতিনিধি ছোটন কান্তি নাথ মোবাইল ফোনে জানতে চাইলেন দাদা কোথায়? জবাবে বললাম জনতা মার্কেটের দিকে আছি। সে বলল বিলম্ব না করে থানা রাস্তার মাথায় চলে আসুন। মনে করেছি কোন অঘটন ঘটেছে। কারণ “ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায়” এসে দেখি ব্যতিক্রম এক আয়োজন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ শিবলী নোমান ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) খন্দকার মোহাম্মদ ইখতিয়ার উদ্দিন আরাফাত গাড়ী নিয়ে উপস্থিত। মনে করেছি মহাসড়কে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করবেন, কিন্তু তা নয়। তারা এসেছে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের ছাপানো সচেতনতা মূলক একগাদা প্রচারপত্র ও ষ্টিকার বিতরণ করতে। থানা রাস্তার মাথা থেকে সোজা চলে গেলেন চিরিংগা মডেল প্রাইমারী স্কুলে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্কাউটের একটি দল। সাথে ছিলাম আমি, ছোটন, হানিফ, মুকুল, জিয়া উদ্দিন। চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরীসহ বেশক’জন কাউন্সিলর। সকলেই প্রহররোদ উপেক্ষা করে মহাসড়কে যাত্রীবাহী গাড়ীতে প্রচারপত্র ও ষ্টিকার লাগানোর কাজ শুরু করেন। উদ্যোগটা ভালই লেগেছে কারণ এ ধরণের প্রচারপত্র বিলি করে যাত্রী ও চালকদের সচেতন করতে পারলে সকলের জন্য কল্যাণকর। চলতি মাসের ১২ ও ১৩ তারিখ দু’দিনে মহিলাসহ ১১ জন যাত্রী সড়ক দূর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে। যা সকলের জন্য বেদনাদায়ক। হঠাৎ চকরিয়া উপজেলাধীন আজিজনগর থেকে ফুলছড়ি পর্যন্ত ৩৯ কিলোমিটার মহাসড়ক মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এ ধরণের দূর্ঘটনা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের মত একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের জন্য কাম্য নয়। যাত্রীরা চায় স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি। কিন্তু কে দেবে? মানুষ মরণশীল। জন্ম ও মৃত্যু আল্লাহর হাতে নিয়ন্ত্রিত। সব মানুষকে মৃত্যুর স্বাদ অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে। তবে স্বাভাবিক মৃত্যু মেনে নেয়া গেলেও অস্বাভাবিক মৃত্যু মেনে নেয়া বড়ই বেদনাদায়ক। ভূক্তভোগী পরিবার ছাড়া কারো পক্ষে এ ধরণের প্রত্যাশিত মৃত্যুর বেদনা বর্ণনা করা কারো পক্ষে সম্ভব নয়। মহাসড়কে অনেক যাত্রী প্রাণ হারিয়েছে। আমাদের সাংবাদিকতা জগতের অগ্রজ মুজিবুল হক চৌধুরী মাতামুহুরী নদীর ব্রিজের সন্নিকটে সড়ক দূর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে। যা এখনও স্মরণ হলে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ি। এছাড়া পর্যটকবাহী একটি বাস মাতামুহুরী নদীর ব্রীজের র্যালিং ভেঙ্গে পড়ে ২০ যাত্রীর প্রাণহানির কথা বার বার বিবেকে নাড়া দেয়। অপ্রত্যাশিত মৃত্যু কারো কাম্য নয়। এমনকি পরম শত্র“রও অপ্রত্যাশিত মৃত্যু কেউ কামনা করে না। মূলকথা হচ্ছে মহাসড়কে যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে প্রশিক্ষিত চালক প্রয়োজন। দেশে প্রশিক্ষিত চালক তৈরীর কোন প্রতিষ্ঠান আছে কি-না জানি না। প্রশিক্ষিত চালক তৈরীর প্রতিষ্ঠান অতীব জরুরী। কারণ রাতারাতি দক্ষ চালক সৃষ্টি হবে এমন আশা করা যায় না। কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চকরিয়া অংশে বেশক’টি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ রয়েছে এগুলো সোজা ও সড়ক প্রশস্ত করা দরকার। কারণ এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিনই অসংখ্য পর্যটক যাতায়াত করে। সরকার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক প্রশস্ত করেছে বলে মানুষ সুফল ভোগ করছে। অপরদিকে মহাসড়কে নিষিদ্ধ ঘোষিত গাড়ীগুলো চলাচল করায় সমস্যা হচ্ছে না এমন কথা বলা যায় না। দূরপাল্লার বড় যানবাহনের সাথে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছোট যানের প্রতিযোগিতা অনেকটা “মোমবাতি জেলে সূর্যের সাথে প্রতিযোগিতার শামিল” রাষ্ট্রীয় নিষিদ্ধ ঘোষিত গাড়ীগুলো আমদানীতে অনুৎসাহিত করা খুবই প্রয়োজন। এছাড়া মহাসড়কের পাশে বিকল্প সড়ক তৈরীর মাধ্যমে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় যাত্রীদের যাতায়াতে প্রতিবন্ধকতা দূর করার পদক্ষেপ নেয়া প্রশাসনের নৈতিক দায়িত্ব। কারণ হাত-পা বেঁধে সাঁতার কাটতে বললে যেমন সাঁতার কাটা সম্ভব নয়, তেমনি বিকল্প ব্যবস্থা না করে ছোট যানবাহনগুলো মহাসড়ক থেকে উচ্ছেদ করাও কষ্টকর হবে। হাইওয়ে পুলিশ দিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত গাড়ী আটকিয়ে নদীতে বা পুকুরে নিক্ষেপ করলে এ সমস্যা সমাধান হবে বলে জনসাধারণ মনে করে না। কারণ এসব গাড়ী চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে হাজার হাজার চালক। তাদের আয়ের উপর নির্ভর করছে ওইসব চালকের পরিবার-পরিজন। সব কথার শেষ কথা হচ্ছে, বেপরোয়া গাড়ী চলাচলে চালকদের সচেতন হতে হবে। কারণ কথায় আছে “যাত্রী পাগল হলে সমস্যা হয় না, কিন্তু চালক পাগল হলে বিপদ অনিবার্য”। সব শেষে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে এ ধরণের প্রচার-প্রচারণা আরো গতিশীল করা প্রয়োজন। নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের জনক চিত্রজগতের খ্যাতিমান নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে জড়িত হয়েছে সড়ক দূর্ঘটনায় প্রিয়তমা স্ত্রীকে হারিয়ে। তিনি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেছেন “কি যাতনা বিষে বুঝিবে সে কিসে, ………”। অতএব, ‘নিজে বাঁচি, অপরকে বাঁচাই’- শ্লোগানটি নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের মত সব স্তরে ছড়িয়ে পড়–ক। ##
প্রকাশ:
২০১৮-০৯-১৮ ১১:৫৯:৫৯
আপডেট:২০১৮-০৯-১৮ ১১:৫৯:৫৯
- চকরিয়ায় আঞ্চলিক সড়কে যানবাহনে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে পুলিশের জালে
- চকরিয়ায় মসজিদের নামে অর্ধকোটি টাকা আত্মসাৎ
- নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিতে চকরিয়ায় কৃষিজমির সর্বোচ্চ ব্যবহার বাড়ানোর তাগিদ
- চকরিয়ায় বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ
- ইসলামের বৃহৎ স্বার্থে চকরিয়া জামায়াতে ইসলামীর সাথে একটেবিলে বসতে চায়
- চকরিয়ায় চিংড়িঘের দখল নিয়ে দু-গ্রুপে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ১, অস্ত্রসহ ৪ সন্ত্রাসী আটক
- চকরিয়ায় পৌরশহরের তিনটি আবাসিক হোটেল ও চারটি রেস্টুরেন্টে অভিযান
- কিশলয় শিক্ষা নিকেতন স্কুলে বিলুপ্ত কমিটির স্বাক্ষর নিয়ে বিল ভাউচার করার অভিযোগ
- শীতের কম্বল দিতে বেড়িয়ে পড়েন চকরিয়ার মানবিক ইউএনও আতিকুর রহমান
- চকরিয়ায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ইউপি মেম্বারসহ আহত ৪
- কক্সবাজার সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আকতার চৌধুরী
- জমজম হাসপাতালে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু ডাক্তারের বক্তব্য
- শীতের কম্বল দিতে বেড়িয়ে পড়েন চকরিয়ার মানবিক ইউএনও আতিকুর রহমান
- চকরিয়ায় পৌরশহরের তিনটি আবাসিক হোটেল ও চারটি রেস্টুরেন্টে অভিযান
- খুটাখালীতে শতাধিক পরিবারে শীতবস্ত্র বিতরণ
- চকরিয়ায় বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ
- চকরিয়ায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণরর মামলার অন্যতম আসামি ফারুককে গ্রেফতার করেছে র্যাব
- পেকুয়ায় রব্বত আলী পাড়া সড়কে গাড়ি চলে না ২০ বছর!
- কক্সবাজার সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আকতার চৌধুরী
- কিশলয় শিক্ষা নিকেতন স্কুলে বিলুপ্ত কমিটির স্বাক্ষর নিয়ে বিল ভাউচার করার অভিযোগ
- ইসলামের বৃহৎ স্বার্থে চকরিয়া জামায়াতে ইসলামীর সাথে একটেবিলে বসতে চায়
- চকরিয়ায় মৎস্য অধিদপ্তরের উদোগে নৌযান মালিক ও সারেং দের নিয়ে কর্মশালা
পাঠকের মতামত: