নাইক্ষংছড়ি প্রতিনিধি :: পাহাড়ি জনপদ নাইক্ষ্যংছড়িতে বই বিতরণ উৎসবে মাতোয়ারা ২০ হাজার শিক্ষার্থী। তারা বছরের শুরুতে নতুন বই হাতে নিয়ে আনন্দে ঘরে ফিরেছে । আর এ নিয়ে অনেক প্রতিষ্ঠান আয়োজন করে নানা উৎসবের ।
রোববার ১ জানয়ারী সারা দিন উপজেলার ৫ ইউনিয়নের দেড়শত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশতেই এই বই বিতরণ উৎসব চলে। উৎসব উপলক্ষ্যে নাইক্ষ্যংছড়ি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, নাইক্ষ্যংছড়ি মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভিন্নধর্মী ও আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজনের মাধ্যমে পালন করা হয়। যেখানে উপজেলার ৩ কর্ণধার উপস্থিত থেকে এ উৎসবকে আলোকিত করেছেন।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্র গুলো জানান, উপজেলা সদরে মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় মিলনায়তনে বেলা সাড়ে ১১ টায় আয়োজন করে বই বিতরণের এ উৎসব। এ উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নাসরিন আক্তার।
উদ্বোধক ছিলেন নবাগত উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোমেন শর্মা। প্রধান অতিথি উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোঃ শফিউল্লাহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও প্রেস ক্লাব প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাঈনুদ্দিন খালেদ। উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আবদুস চ্ছাত্তার,সাংবাদিক হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী, সাংবাদিক জয়নাল আবেদীন টুক্কু ও সাংবাদিক সানজিদা আক্তার রুনা প্রমূখ।
দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সততা সংঘের সদস্যদের সহায়তায় নবাগত ইউএনওকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয় আলোচনার সভা শুরুর আগে। এরপর বই বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়। একই সময় উৎসবের অংশ হিসেবে স্কুলের ফুলবাগানে ফুলের চারা রোপণ, অতিথিদের নিয়ে গ্রুপ ছবি উত্তোলনসহ নানা কর্মসূচি পালিত হয়।
পৃথক ব্যবস্থাপনায় উপজেলা সদরের মডেল সরকারী বিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানের অতিথি ছিলেন অনুরূপ। বেলা ১০ টায় অনুষ্ঠিত সভায় উপজেলা শিক্ষা অফিসার ত্রিরতণ চাকমার তত্বাবধানে অনুষ্ঠানে সভাপতি ছিলেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ওসমান গণি। আরো বক্তব্য রাখেন স্কুলের এসএমসির কমিটির সভাপতি মুহিবুল ইসলাম ।
সকাল সাড়ে ৯ টায় ১১ বিজিবি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মিলনায়তনে প্রধান শিক্ষক নুরুল বশরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন ১১ বিজিবি জোন কমান্ডার ও অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল রেজাউল করিম। এভাবে উপজেলার মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্তরের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বই বিতরণ উৎসব পালন করা হয়। যাতে স্ব স্ব স্কুল কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সকাল সাড়ে ৯ টা ও সাড়ে ১১ টার অনুষ্ঠানে নবাগত উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোমেন শর্মা বলেন, নতুন বই এর আলাদা গন্ধ থাকে। যে গন্ধ ছড়িযে দেয় মেধা ও মননের স্রোত। তিনি আরো বলেন, এ কারণে মেধা বিকাশে দরকার মনযোগ। এছাড়া সংবাদ পত্র ও পাঠ্যবই ছাড়া অন্যান্য বইও পড়তে হবে। যে সব বই বর্তমান সরকার প্রতিটি স্কুলে দিয়ে আসছে। আর স্কুলের কম্পিউটার ল্যাব চালু থাকতে হবে। শিক্ষার্থীদের সততা শিখাতে হবে। সব মিলে শিক্ষা বান্ধব প্রতিষ্ঠান গড়তে সবার আন্তরিকতা দরকার। তবে জাতি উন্নত হবে। উল্লেখ্য, বছরের শুরুর দিনে নতুন বই হাতে পেয়ে উৎসবে মেতে উঠেছে উপজেলার সবক’টি মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এভাবে গত একযুগ ধরে প্রতিবছরই ১ জানুয়ারীতে নতুন বই শিশুদের হাতে তুলে দিয়ে আসছে সরকার। তাই এই দিনটিকে ‘বই বিতরণ উৎসব’ হিসেবে পালন করে আসছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার ত্রিরতন চাকমা এই প্রতিবেদকে জানান, বই বিতরণ উৎসবের প্রথম দিনেই বিদ্যালয়ের শতভাগ শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেয়া হয়েছে। একই কথা জানিয়েছেন সহকারি শিক্ষা অফিসার আকতার উদ্দিনও। এদিকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোমেন শর্মা বলেন, উপজেলায় মোট ১৮ হাজার ৩ শত ৬০ জন শিক্ষার্থীকে ১ লক্ষ ৩৮ হাজার ৬ শত বই বিতরণ করেন ১ জানুয়ারী রোববার।
পাঠকের মতামত: