নিষিদ্ধ হলে নতুন নেতৃত্বে সংগঠিত হবে জামায়াতে ইসলামী। নেতৃত্বে থাকবে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী প্রজন্ম পরিবর্তন হবে নাম ও লোগো। চেষ্টা করবে এরইমধ্যে নির্বাচন কমিশন থেকে নিবন্ধন লাভ করতে। ২০১৯ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবে। পরবর্তী কেন্দ্রীয় আমির হওয়ার দৌড়ে নতুন ও পুরনো মিলিয়ে তিন নেতা রয়েছেন। তারা হলেন দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক, ঢাকা মহানগর সভাপতি ও দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মাওলানা রফিকুল ইসলাম এবং বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মকবুল আহমাদ। জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাত্তর পরবর্তী প্রজন্মের এক নির্বাহী পরিষদ সদস্য বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমার কাছে যে তথ্য আছে, তাতে জামায়াত-শিবিরের তরুণ নেতৃত্ব এখন আর পুরনোদের দায় নিতে চান না। একাত্তরে যারা স্বাধীনতাবিরোধী এবং মানবতাবিরোধী ভূমিকা নিয়েছে, তাদের দায়মুক্ত হতে চান তারা। তারা চান নতুন নামে এক ইসলামী রাজনৈতিক দল, যেখানে অতীতের কোনো দায় থাকবে না। কীভাবে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেই প্রক্রিয়া কেমন হবে তা এখনো স্পষ্ট নয়। নতুন নেতৃত্বের জন্য জামায়াতের তরুণরা কাজ করছেন। জানা যায়, একাত্তরে দেশের স্বাধীনতা বিরোধিতাকারী সংগঠনটি সাংগঠনিকভাবে নিষিদ্ধ হওয়ার আতঙ্কেও ভুগছে। শেষ পর্যন্ত নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলে সংগঠনটি নতুন নামে আত্মপ্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছেন অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতারা। সে অনুযায়ী আগাম প্রস্তুতিও রয়েছে। দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। সাত বছর ধরে ভারপ্রাপ্তদের দিয়ে দল চালানোর পর শেষ পর্যন্ত সাংগঠনিক অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থেই নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের তত্পরতা শুরু হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় শিগগিরই দলের আমিরসহ গুরুত্বপূর্ণ ও শীর্ষস্থানীয় পদগুলোয় নতুন মুখ দেখা যাবে। দলটির অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতারা বলছেন, মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের বিরোধিতা করে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা যে ভুল করেছেন তার দায় নতুন প্রজন্মের নেতা-কর্মীরা নিতে চান না। সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হলে নতুন কৌশলে অগ্রসর হবে দল। সে ক্ষেত্রে সংগঠনের নাম পরিবর্তন করে টিকে থাকবে জামায়াত। আর দলের নেতৃত্বে আসবে মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী প্রজন্ম। তারা আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবে। একই সঙ্গে ত্যাগ করবে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত নেতাদের। এক সময়ের সুসংগঠিত এ দলটির বর্তমানে বেহাল দশা। প্রকাশ্য সাংগঠনিক তত্পরতা নেই। ইতিমধ্যে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দলটির আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা ও কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় কার্যকর হয়েছে। আর সাবেক আমির ও থিংক ট্যাংক গোলাম আযম আজীবন কারাদণ্ড মাথায় নিয়ে কারাগারেই মারা গেছেন। আজীবন কারাদণ্ড ভোগ করছেন দলটির নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। একই অপরাধের দায়ে জামায়াতের আরেক নায়েবে আমির আবদুস সুবহান, নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলী ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আজহারুল ইসলামের ফাঁসির রায় হয়েছে
–বাংলােদশ প্রতিদিন
পাঠকের মতামত: