অনলাইন ডেস্ক ::
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিগুলো যেভাবে বারবার আঘাত প্রাপ্ত হচ্ছে এটা একটা অবিশ্বাস্য ব্যাপার । বাংলাদেশের মানুষ স্বৈরাচারী সরকার দেখেছে কিন্তু এই ধরনের বর্বর হামলা আগে তারা দেখেনি । শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের বিপরীতে বিএমএ ভবনের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি একথা বলেন । বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সকল মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এ মানববন্ধনের আয়োজন করে ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) । এসময় সরকারকে উদ্দেশ্য করে আমির খসরু বলেন, মিথ্যা মামলা দিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুই কোটি টাকার দুর্নীতি মামলার বিচার করেছেন । দুই লক্ষ কোটি টাকা যে প্রশ্নবিদ্ধ তার উত্তর আপনাদের কে দেবে? তিনি বলেন, চার লক্ষ কোটি যে প্রশ্নবিদ্ধ তার উত্তর কে দেবে? এগুলোর উত্তর দিতে হবে বলেই রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে আপনারা জনগণকে বাইরে রেখে ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করছেন ।
এই চেষ্টা ব্যর্থ হবে । আমির খসরু বলেন, খালেদা জিয়া আজ জেলে। কি কারণে জেলে এটা বাংলাদেশের মানুষকে বলার প্রয়োজন নাই। দেশের মানুষের কাছে পরিস্কার হয়েছে নির্বাচনের আগে বেগম খালেদা জিয়া জেলে আছেন কেন? বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, জনসভা দূরের কথা মানুষ আজ মানববন্ধন, কালো পতাকা মিছিল, অবস্থানসহ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে পারছে না । কিন্তু কি কারণে বিএনপিসহ বিরোধীদল কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারছে না সেটাও সবার জানা আছে। এর পিছনে কারণ একটাই জনগণকে বাইরে রেখে ক্ষমতা দখলের প্রক্রিয়া । এ দেশের মানুষকে বাইরে রেখে সরকার আবারও ক্ষমতা দখল করতে চায় মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, এই প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়া আজ জেলে। এই প্রক্রিয়ায় শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি আজ আঘাত প্রাপ্ত দিনের পর দিন। আওয়ামী লীগের রাজনীতি উশৃঙ্খল দাবি করে খসরু বলেন, গণতন্ত্রের, আইনের শাসনের, বাক-স্বাধীনতার ভীতির কারণেই শান্তিপূর্ণ এই কর্মসূচিতে তারা বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে। সরকার শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে ভীত সন্ত্রস্ত। এ কারণেই দেশে একটা অস্থিরতা সৃষ্টি করে জনগণকে ভয় দেখিয়ে ক্ষমতা দখল, অব্যাহতভাবে ধরে রাখা। সুতরাং তারা কোনোদিন গণতান্ত্রিক পরিবেশ চায়না। তারা কোনোদিন আইনের শাসন চাইবে না। তারা কোনোদিন জনগণের নিরাপত্তা কথা ভাবে না। এই হামলা জনগণকে বাইরে রেখে আবারও ক্ষমতায় যাওয়ার পায়তারা। যেই ববর্রতা ঘটেছে তা বাংলাদেশে নজিরবিহীন বলেও মন্তব্য করেন তিনি। আগামীর যে আন্দোলন, মুক্তির যে আন্দোলন সেটাকে প্রভাবিত করার জন্যেই এসব করা হচ্ছে যাতে সেই আন্দোলন পরাস্ত হয়। জনগণ যেন তাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে না আসতে পারে এজন্য ভয় ভীতি দেখানোর চেষ্টায় সরকার এই পথ অবলম্বন করছে।
মানববন্ধনে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে ভাষণ দিয়েছিলেন সেই ভাষণের মর্মকথা কি? দুঃশাসনের বিরুদ্ধে, অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে। বঙ্গবন্ধু কবরে কি ভাবছেন। সোনার বাংলায় এই চিত্র দেখছেন উনি কি আজকে আনন্দে আছেন? আওয়ামী লীগ সরকারকে একটাই অনুরোধ করছি। বঙ্গবন্ধুর বক্তব্যগুলো পুনরায় পড়ুন। বাকশাল করে কোনো জাতি জাগে না। গণতন্ত্রই হলো একমাত্র পথ। আর গণতন্ত্রের পথ হলো কথা বলার সুযোগ দেয়া। জনগণকে রাস্তায় নামতে দেয়া। কিন্তু আজকে আপনারা যেটা করছেন সেটা ভুল পথ। সঠিক পথে আসেন। সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে আসেন। তারপরে ভালো খেলে হারার মধ্যে কোনো অপমান নেই। ফাউল করে খেলে জিতলে সেই খেলার কোনো গৌরব নাই। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদেরকে সাহায্য করেন। ড্যাবের সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
পাঠকের মতামত: