কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের পূর্নাঙ্গ কমিটি দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা অনুমোদন দিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। কমিটি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অনেকে সামাজিক ওয়েব সাইট ফেসবুকে । অনেকে স্বাগত জানালেও পূর্নাঙ্গ কমিটিতে কিছু বিতর্কিত ব্যক্তি স্থান পাওয়ায় দলের ভেতরে অসন্তোষ লক্ষ্য করা যাচ্ছে । যার কারণে কৌশলে তা প্রকাশ করা হচ্ছেনা। আওয়ামীলীগের অনেক ত্যাগী নেতা জেলা কমিটিতে যথাযথ পদ না পাওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। পূর্নাঙ্গ কমিটি প্রকাশ পেলে পরিস্থিতি বুঝে পদক্ষেপ নেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন আওয়ামীলীগের নেতারা।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য রাশেদুল ইসলাম তার ফেইসবুকে লিখেছেন “জেলা আওয়ামীলীগের কমিটি অনুমোদন, আমি সদস্য।”
তিনি আর একটি স্ট্যাটাসে লিখেছেন,- দূর্ভাগ্য আমার ,আমি আপনাদের অভিনন্দন জানাতে পারছিনা
ঢাকায় অবস্থান করছি ৩/৪ দিন হল।কেন্দ্রের অনেক সিনিয়র নেতার সাথে দেখা হয়েছে । মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করার সৌভাগ্য হল গতকাল। অল্প কিছু কথাও বলতে পেরেছি প্রিয় নেত্রীর সাথে । অনেক দু:খ বোধের মধ্যেও প্রিয় নেত্রীর সার্নিধ্যে গেলে ভুলে যাই না পাওয়া গুলো ।
কক্সবাজার হতে বার বার ফোন আসছে রাজনৈতিক সহকর্মীদের। জানতে চাচ্ছে কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের পূর্নাঙ্গ কমিটি কেমন হল । কে আছে কে নেই। আমার কি অবস্থা, কোথায় রেখেছে ,কারা বাদ গেল। সত্যিকথা বলতেকি আমি সঠিক ভাবে কিছুই জানিনা । কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের কমিটি জমা দিয়েছে জেলার সভাপতি সাধারণ সম্পাদক ও তাদের দু’একজন বিশ্বস্থ কাছের লোক ছাড়া আর কেউ খুব বেশী জানেনা । তবে নানা জনের মাধ্যমে যা শুনতে পাই , তাতে আশার আলো খুব বেশী না । যতটুকু এর মধ্যে জেনেছি যারা উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে জনগনের কাছে এবং আওয়ামী রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ন লোক তাদের সিংহ ভাগই এই কমিটিতে স্থান পায়নী। স্থান পেয়েছে কিছু নব্য পয়সাওয়ালা , তারা কেউ আওয়ামীলীগ কিনা আমি জানিনা । আমার মত কক্সবাজার জেলার অধিকাংশ নেতা কর্মিরা তাদের নাম আগে কখনো শুনেনী । আমার এবং দলের সাধারণ নেতাদের কাছে তাদের কোন গুরুত্ব না থাকলে ও আমাদের বর্তমান সভাপতি সাধারন সম্পাদক’র কাছে তারা খুবই গুরুত্বপূর্ন । তাই তারা একদিনও আওয়ামী রাজনীতি না করে আওয়ামীলীগের কমিটিতে তাদের নাম দিয়ে কমিটি জমা দেওয়া হয়েছে । আমি দায়িত্বশীল কেউ নই তারপরও বিবেকের তাড়নায় আমার দ্বারা যতটুকু সম্ভব প্রতিবাদ করেছি ,ভবিষ্যতে ও করব । এই সব সুবিধাবাদীর স্থলে আওয়ামী পরিবারের কিছু ভাল তরুণ উটে আসলে অভিবাদন জানাতাম সভাপতি সাধারণ সম্পাদক মহোদয়কে । দূর্ভাগ্য আমার আমি আপনাদের অভিনন্দন জানাতে পারছিনা ।”
খুরুশকূলের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা জসিম উদ্দিন তার ফেইসবুকে লিখেছেন “কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের পূর্নাঙ্গ কমিটি অনুমোদিত, আসছে একঝাক তরুন নেতৃত্ব। সবাইকে অভিনন্দন।”
জানা গেছে ,কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের পূর্নাঙ্গ কমিটিতে অনেক সিনিয়র নেতা বাদ পড়েছেন। বাদ পড়ার তালিকায় আছেন জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডঃ একে আহম্মদ হোসেন, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক নজরুল ইসলাম চৌধুরী, চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আলম, সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মোঃ আলী, এডঃ ফরিদুল আলম ও এডঃ আয়াছুর রহমানের মতো সিনিয়র নেতারা। একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে কক্সবাজার পৌর সভার সাবেক মেয়র নুরুল আবছার, রাশেদুল ইসলামের মতো রাজপথের পরীক্ষত নেতাদের সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।
আওয়ামীলীগের একটি সুত্র জানিয়েছে একদিন রাজনীতি না করেও অনেকে জেলা আওয়ামীলীগের গুরুত্ব পূর্ন পদ পেয়েছেন।
তবে নতুন কমিটিতে জেলা যুবলীগের সভাপতি খোরশেদ আলম, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক এম এ মন্জুরের মতো তরুনরাও জেলা আওয়ামীলীগের নতুন কমিটিতে স্থান পেয়েছে।
সবকিছু মিলিয়ে পূর্নাঙ্গ কমিটি প্রকাশ পেলে প্রতিক্রিয়া কেমন হয় তার অপেক্ষায় কক্সবাজার জেলার আওয়ামীলীগ পরিবার ও রাজনৈতিক বোদ্ধারা।
পাঠকের মতামত: