ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

চট্টগ্রামে ১৫১টি সিএনজি স্ক্র্যাপকরণে অনিয়মের অভিযোগ!

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:  নানা অনিয়মের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামে মেয়াদোত্তীর্ণ সিএনজি অটোরিকশার স্ক্র্যাপ কার্যক্রম সম্পন্ন করছেন বাংলাদেশ রোড ট্র্যন্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)। শুধুমাত্র স্ক্র্যাপ করতে কৌশলে দালালের মাধ্যমে গাড়ি প্রতি ৩ থেকে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিস্থাপন করতে আরো ৪৫ হাজার টাকা লাগবে বলেও বার্তা দিচ্ছেন।

চাহিদা মোতাবেক ঘুষ প্রদান না করায় নানা অযুহাতে প্রকৃত মালিকদের হয়রানি করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। ঘুষ দিতে না পারায় একাংশ মালিকের গাড়ি স্ক্র্যাপ করা হয়নি। বিআরটিএ’র দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা ঘুষের কথা অস্বীকার করেছেন।

জানা যায়, বিআরটিএ’র নির্ধারিত দালালদের মাধ্যমে যারা চুক্তি মুল্য পরিশোধ করেছেন, তাদের সকল মুশকিল আহসান হচ্ছে। এমনকি গ্রামের সিএনজিও গোপনে ভাঙ্গার জন্য আনা হচ্ছে। স্ক্র্যাপ করণে পেপারে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগেই বিভন্ন গাড়ির মালিকদের সাথে যোগাযোগ করতে থাকেন। আবার অনেকেই মোটা অংকের টাকা খরচের ভয় দেখিয়ে গাড়ি কিনে নিয়ে তাদের গ্যারেজে নিয়ে আসে বিআরটিএ’র নির্ধারিত দালাল চক্র। এই চক্রের মাধ্যমেই অনৈতিক লেনদেন হচ্ছে বলে অভিযোগ।

হাটহাজারির তপন চন্দ্র নাথ নামের এক মালিক জানান, তার গাড়ির সকল কাগজপত্র ঠিক থাকার পরেও ৮/১০ জনে মিলে তাকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছে, কেন বের করে দিচ্ছে তাও জানতে পারেননি তিনি। তিনি বলেন, আমার গাড়ি স্মার্ট কার্ড, ডিজিটাল মিটারসহ যাবতীয় ডকুমেন্টস আছে, তবু তার উপর জুলুম করা হয়েছে। আরেক মালিক জানিয়েছেন, তার কাছে দালালরা প্রথমে ৭ লাখ টাকা দাবি করলেও পরে ৬ লাখ টাকা দেয়ার কথা বলা হয়েছে। টাকা দিতে না পারায় তাঁর গাড়ির সকল কাগজপত্র ঠিক থাকার পরেও গাড়ি স্ক্র্যাপ না করে তাকে বের করে দেয়া হয়েছে।

বেশির ভাগ বিআরটিএর উপ-পরিচালক তোহিদুল হোসেন এর বিরুদ্ধে। যিনি মেয়াদোত্তীর্ণ গ্যাস/ পেট্রোলচালিত ফোর স্ট্রোক থ্রি-হুইলার অটোরিক্সা স্ক্র্যাপ কমিটি চট্টগ্রাম অঞ্চলের আহবায়ক ও বাংলাদেশ রোড ট্র্যান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) চট্টগ্রাম মেট্রো সার্কেল ১ এর উপপরিচালক।

তিনি বলেন, ‘কেউ যাতে ভোগান্তির মধ্যে না পড়েন সেজন্য নিয়ম মেনে বিআরটিএ কার্যালয়ের সামনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা এবং বিআরটিএ’র উর্ব্ধতন কর্মকর্তার উপস্থিতিতেই ১৫১ টি অটোরিকশাগুলো পর্যায়ক্রমে স্ক্র্যাপ করা হয়েছে। এর ফলে চট্টগ্রামে আর কোন মেয়াদোত্তীর্ণ সিএনজি থাকল না। এতে কোনো অনিয়ম বা ভোগান্তিও হয়নি।’

চট্টগ্রাম বিভাগের বিআরটিএর পরিচালক (প্রকৌশল) মোহাম্মদ শফিকুজামান ভূইয়া বলেন, কেউ ঘুষ দিয়েছে বা না দেয়ার ফলে হয়রানির শিকার হয়েছে এমন কোন অভিযোগ পাইনি। যদি কেউ অভিযোগ করে তবে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। একই কথা বলেছেন বিআরটিএ’র পরিচালক (প্রশিক্ষণ) মো. সিরাজুল ইসলামও।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির-(বিআরটিএ) হালিশহরস্থ চট্টগ্রাম মেট্রো সার্কেল ১ এর কার্যালয়ে গত শুক্রবার (২৬ মে) দেড় শতাধিক সিএনজি চালিত অটোরিক্সা স্ত্র্যাপকরণ করেছেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিআরটিএ ঢাকার প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) সিরাজুল ইসলাম, চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক (প্রকৌশল) মোহাম্মদ শফিকুজামান ভুঞা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. কামরুল ও চট্টমেট্রো-১ সার্কেলের উপ-পরিচালক তৌহিদুল হোসেনসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

পাঠকের মতামত: