ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় শতাধিক স’মিলে চোরাই কাঠ চিরাইয়ের মহোৎসব, উজাড় হচ্ছে সরকারের সংরক্ষিত বনাঞ্চল

 

চকরিয়া উপজেলার বদরখালী বাজার এলাকার সমিলে ছিরাইয়ের জন্য মজুদ করা বিপুল পরিমাণ চোরাই কাঠ।

এম রায়হান চৌধুরী, চকরিয়া ::

চকরিয়া উপজেলায় শতাধিক অনুমোদন বিহীন স’মিলে অবৈধভাবে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের কাঠ চিরাইয়ের মহোৎসব চলছে। প্রত্যেক বছরে কোটি কোটি টাকার কাঠ স’মিলে চিরাইয়ের পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাচার করা হচ্ছে। তবে স্থল পথের চেয়ে সবচেয়ে বেশি পাচার করা হচ্ছে নৌপথ দিয়ে। স’মিল মালিকরা বনবিভাগ ও পুলিশকে ম্যানেজ করে বনজ সম্পদ উজাড়ে মেতে উঠেছে। এভাবে বন উজাড়ের কারণে বনাঞ্চল ধংসের পাশাপাশি সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

জানা গেছে, কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগ, চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগ ও লামা বনবিভাগের সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে মূল্যবান বনজ সম্পদ কেটে বিভিন্ন স’মিলে মজুদ করে। পরে পাচারকারী সুযোগ বুঝে চিরাই করা কাঠ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করছে। চকরিয়া উপজেলার খুটাখালীতে ৪টি, ডুলহাজারায় ৪টি, ফাঁসিয়াখালীতে ২টি, মৌলভীরকুম বাজারে ৫টি, নামার চিরিঙ্গায় ৫টি, বদরখালীতে ৬টি, দরবেশকাটায় ২টি, ইলিশিয়ায় ২টি, শাহারবিলে ২টি, বাটাখালীতে ২টি, ছিকলঘাটায় ৫টি, কাকারায় ২টি, কোনাখালীতে ৩টি, বেতুয়া বাজারে ৭টি, বরইতলীতে ৩টি, হারবাংয়ে ২টি। অপরদিকে পেকুয়া উপজেলা সদরে ৫টি, মগনামায় ২টি, রাজাখালী আরবশাহ বাজারে ৫টি, টইটংয়ে ২টি, শীলখালীতে ২টি, পহরচাঁদায় ৩টিসহ অনুমোদনহীনসহ প্রায় শতাধিক স’মিল রয়েছে। এসব স’মিলে প্রতিদিন অবৈধ ভাবে কাঠ চিরাই করা হচ্ছে। বনবিভাগ বা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কোন ধরণের তদারকি না থাকায় পাচারকারীরা আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ফলে সরকারী বনাঞ্চল থেকে মূল্যবান বনজ সম্পদ উজাড় হয়ে যাচ্ছে।

অপরদিকে চকরিয়া উপজেলায় বেতুয়াবাজার ও বহদ্দারকাটা বৈধ কাগজপত্রবিহীন ৭টি স’মিল রয়েছে। প্রতিদিন এসব স’মিলে লক্ষ লক্ষ টাকার মুল্যবান কাঠ চিরাই করে পাচার করছে। অভিযোগ রয়েছে, এক শ্রেণীর দূর্নীতিবাজ বনকর্মকর্তার কারণে বনাঞ্চল নিধন হয়ে যাচ্ছে। কাঠ পাচারকারীদের নিধনযজ্ঞ অব্যাহত থাকায় কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালী, ফুলছড়ি, চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের চুনতি, বারবাকিয়া রেঞ্জ ও লামা বনবিভাগের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মূল্যবান বনজ সম্পদ এখন বিলুপ্তির পথে রয়েছে। সরকারী বিপুল পরিমাণ বনজ সম্পদ রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে পরিবেশবাদীরা সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

জানতে চাইলে কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) বলেন, যেসব সমিলে সরকারি অনুমোদন নেই সেই গুলো চিহিৃত করে অভিযানের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত: