ঢাকা,মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় আহত ২০, পরাজিত দুই মহিলা সদস্যের সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির নির্বাচিত চেয়ারম্যানকে মামলায় জড়ানোর চেষ্টা

songarsনিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :::
কক্সবাজারের চকরিয়ায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা শুরু হয়ে গেছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যার দিকে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই বিভিন্ন ইউনিয়নে দফায় দফায় হামলার ঘটনায় এলাকায় আতঙ্কও ছড়িয়েছে। আজ ৮মে  রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কয়েকটি ইউনিয়নে হামলা ও সংঘর্ষের সময় বৃদ্ধা মহিলাসহ অন্তত ২০জন ব্যক্তি আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। কোথাও প্রতিদ্বন্ধি সদস্য (মেম্বার) প্রার্থী, আবার কোথাও চেয়ারম্যান পদে পরাজিত প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকরা এই সংঘর্ষে জড়ায়।

আজ  রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সংঘর্ষ ও হামলায় আহতদের মধ্যে কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে। তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে একজনকে মুমুর্ষ অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ এবং অন্যদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

আহতরা হলেন পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের আনিচপাড়ার মৃত লেছু মিয়ার পুত্র আবদুল হামিদ ভুট্টো (৩২)। তাকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভতিরতরা হলেন ওই ইউনিয়নের আনিচপাড়ার সাহাব উদ্দিনের ছেলে মুবীনুল হক মুবীন (৩০)। কোনখালী ইউনিয়নের মরিয়ম খাতুন (৭০), শফি আলম (৬০), বেলাল উদ্দিন (২৫), রুখসানা বেগম (৩৫), কফিল উদ্দিন (৪৫), ৫ম শ্রেণির ছাত্রী আনিকা সুলতানা (১২)। বদরখালী ইউনিয়নের তিন নম্বর ব্লকের মগনামা পাড়ার আবুল আহমদের পুত্র মো. শাহজাহান (২৫), ছৈয়দ আহমদের পুত্র আহমদ কবির (৩৩)।

বদরখালী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী আহসানুল কাদের সাব্বির অভিযোগ করেন, পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থীর একদল লোক আজ  রবিবার দুপুর বারোটার দিকে একযোগে হামলা চালায় ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দেওয়ার অপরাধে। এ সময় বাড়ি ও ঘেরাবেড়া ভাঙচুরের পাশাপাশি পিটিয়ে আহত করা হয় দুইজনকে। সন্ত্রাসীরা তাকেও প্রাণে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন বলেও তিনি দাবি করেন।

কোনখালী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বিজয়ী সদস্য আবদুল নবী অভিযোগ করেন, সকাল সোয়া ১১টার দিকে পরাজিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম অন্তত ৩০জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী নিয়ে হামলা চালায় তার বাড়িতে। এতে তার বৃদ্ধ মা, ভাই, শিশুসহ পাঁচজন আহত হয়।

উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের বাসিন্দা প্রভাষক হারুণ ছরওয়ার বাদল জানান, তার ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পরাজিত দুই মহিলা সদস্য প্রার্থী মনোয়ারা বেগম ও রেজিয়া বেগমের সমর্থকদের মধ্যে আনিচপাড়া গেইট এলাকায় সকাল ১০টার দিকে সংঘর্ষ হয়। এ সময় রেজিয়া বেগমের ভাই মুবীন পেছন থেকে ধারালো ‘দা’ দিয়ে প্রকাশ্যে সবার সামনে মনোয়ারার ভাইপো আবদুল হামিদ ভুট্টোকে মাথায় কোপায়। এতে হামিদের মাথার মগজ পর্যন্ত বের হয়ে যায়। এ ঘটনার পর এলাকার লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে মুবীনের বাড়িতে হামলা চালাতে গেলে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আনোয়ারুল আরিফ দুলাল তাদের বাঁধা দেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

চেয়ারম্যান আনোয়ারুল আরিফ দুলাল অভিযোগ করেন, চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের পরাজিত প্রার্থী এ ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। পরাজিত দুই মহিলা সদস্যের সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনাটির সঙ্গে তাকেও জড়িয়ে দিয়ে থানায় মামলা করার পায়তারা চালাচ্ছেন বলেও নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান দুলাল অভিযোগ করেন।

এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুল আজম চকরিয়া নিউজকে জানান, নির্বাচন পরবর্তী বিভিন্নস্থানে সহিংসতার খবর মৌখিকভাবে শুনেছি। তবে পূর্ব বড় ভেওলার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আনিচপাড়ায় পরাজিত দুই মহিলা মেম্বারের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে গুরুতর আহত একজনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ করা হলে তদন্তপূর্বক পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেবেন।

পাঠকের মতামত: