এম.জিয়াবুল হক,চকরিয়া
চকরিয়ায় মাতামুহুরী নদীতে ড্রেজিংয়ে নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কার্যাদেশ লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। কার্যাদেশ চুক্তি মতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এসএস নেশান টেক নদী থেকে বালু উত্তোলন করে নিদিষ্ট স্থানে মজুদ না রেখে বাহিরে বিক্রি করে আসছে। অথচ ড্রেজিং এলাকার নিকটে বেতুয়া বাজার বাঘগুজারা সড়কের পাউবো কর্তক গতবছর ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি থেকে মাটি নিয়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হলেও বর্তমানে এক কিলোমিটার এলাকা গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গর্ত এলাকার জমিতে উত্তোলণকৃত বালু না পেলে অন্যত্র বিক্রি করার ফলে বিষয়টি জনস্বার্থ পরিপন্থি হওয়ায় এব্যাপারে অভিযুক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য গত ১৯ এপ্রিল কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে আইনী নোটিশ পাঠিয়েছেন চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের আইনজীবি আনোয়ারুল ইসলাম সিকদার।
আইনী নোটিশে কক্সবাজার পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী ছাড়ারও বিবাদি করা হয়েছে আরো তিনজনকে। তাঁরা হলেন চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, চকরিয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) ও কক্সবাজারস্থ ডেপুটি রেভিনিউ কালেক্টরকে।
মাতামুহুরী নদীর তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দা মো.নুরুল আবছার আইনী নোটিশটির বাদি। তার পক্ষে পাঠানো নোটিশে আইনজীবি আনোয়ারুল ইসলাম সিকদার বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এসএস নেশান টেক (জেবি) ২০১৭-১৮অর্থবছরে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে চকরিয়া উপজেলার মাতামুহুরী নদীর তিন কিলোমিটার এলাকা ড্রেজিং করতে পাইলট প্রকল্পের আওতায় কাজ পেয়েছেন। পাউবোর কার্যাদেশ প্রাপ্তি সাপেক্ষে ইতোমধ্যে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ড্রেজিং মেশিন ও পাইপের সাহায্যে নদী থেকে বালু উত্তোলন কাজ শুরু করেছেন।
আইনজীবি আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, কার্যাদেশে বলা হয়েছে ড্রেজিংকৃত বালু নদীর তীরে এমনভাবে মজুদ করতে হবে যে তা পুনরায় নদীর গর্ভে গড়িয়ে না পড়ে। কিন্তু বর্তমানে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান উত্তোলনকৃত বালু পাউবোর কার্যাদেশ লঙ্ঘনের মাধ্যমে প্রতি ছোট ডাম্পার (ট্রাক) তিনশত ৫০ টাকা ও প্রতি বড় ট্রাক আটশত টাকা মুল্যে প্রতিদিন শত শত ট্রাকে করে বাইরে বিক্রি করে চলছেন। যার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা অনৈতিক ও অবৈধভাবে হাতিয়ে নিচ্ছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। তিনি বলেন, চাইলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ড্রেজিংকৃত এসব বালু নিকটস্থ বেতুয়া বাজার বাঘগুজারা সড়কের পাউবো কর্তক বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে সৃষ্ট এক কিলোমিটার খানা-খন্দেক ভরাট করতে পারতো। এতে বেড়িবাঁধটি মজবুত হতো, পাশাপাশি জমি মালিকরা ক্ষতিগ্রস্থ জমিতে ফের চাষাবাদ করতে পারতো।
আইনী নোটিশে বিবাদিপক্ষ বলা হয়েছে, আপনারা সকলে বর্ণিত বিষয়ে দায়িত্ববান হওয়া স্বত্ত্বেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বেআইনি ও দরপত্রের শর্ত ভঙ্গের বিষয়ে কোন ধরণের আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করেন নাই। তাই সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে অভিযুক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নোটিশটি প্রেরণ করা হয়েছে। তারপরও কোন ব্যবস্থা নেয়া না হলে বাদি এব্যাপারে আদালতের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হবেন।
জানতে চাইলে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.সবিবুর রহমান বলেন, সেই ধরণের কোন নোটিশ গতকাল রোববার পর্যন্ত আমার দপ্তরে আসেনি। তবে পরের কার্যদিবসে নোটিশটি প্রাপ্তি সাপেক্ষে বিষয়টি নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহনের উদ্যোগ নেয়া হবে। #
পাঠকের মতামত: