এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :: কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার উপকুলীয় জনপদের ইউনিয়ন কোনাখালী ও ডেমুশিয়ার মধ্যবর্তী মাতামুহুরী নদীর শাখা খালের ওপর স্থায়ী একটি সেতুর অভাবে গেল ৩০বছর ধরে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ১৪টি গ্রামের অন্তত ৫০ হাজার মানুষ।
বর্তমানে শাখাখালের উপর ঝুলেথাকা জরাজীর্ণ কাঠের সেতুটি (লালব্রিজ) ভেঙে পড়ার কারণে জনগনের চলাচল বন্ধের উপক্রম হয়েছে। এতে চরম বেকায়দায় পড়েছেন স্কুল, মাদ্রাসাসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের হাজারো শিক্ষার্থী। উপকূলীয় কোনাখালী ও ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের সংযোগস্থল খালের ওপর নতুন করে স্থায়ী একটি সেতু নির্মাণে দাবি উঠেছে।
জানাগেছে, মাতামুহুরী নদীর শাখা খাল মধ্যম কোনাখালী ভরামুহুরী খালটি এক সময় খরস্রোতা নদী হিসেবে পরিচিত ছিল। এখানকার মানুষের যাতায়তের একমাত্র মাধ্যম ছিল নৌকা। দুই ইউনিয়নের বাসিন্দারা নৌকা দিয়ে পারা পারই ছিল তাদের একমাত্র ভরসা। ছিলনা এলাকার মানুষের তেমন কোন যোগাযোগের রাস্তা-ঘাট ব্যবস্থা।
কালের পরিক্রমায় দুই ইউনিয়নের জনগনের যাতায়তের ভোগান্তি দেখে ১৯৯১সালে প্রলয়ংকারী ঘুর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাসের পরে বেসরকারী এনজিও সংস্থা কারিতাসের অর্থায়নে দুই ইউনিয়নের মধ্যবর্তী খালের ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়। নির্মিত হওয়ার পর কয়েক বছর যেতে না যেতেই ওই সেতুর কাঠের পাতাটন, পিলার গুলো মরিচিকায় ধরে অকেজো হয়ে ভেঙ্গে যায়। বর্তমানে সেতুর উপরে থাকা দু’পাশের এঙ্গেল সম্পূর্ণ ভেঙ্গে যাওয়ায় শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষ দুর্ঘটনা পতিত হয়ে অনেকই পঙ্গু হয়ে গেছে।
স্থানীয় ভুক্তভোগী জনগনের অভিযোগ, এভাবে চলতে চলতে দীর্ঘ আড়াইযুগের অধিক সময় ধরে সেতুটির দৈন্যদশায় পড়েছে। সম্প্রতি সময়ে ভারিবর্ষণে ও বন্যার তাণ্ডবে সেতুর বেশির ভাগ অংশ পানির তোড়ে পড়ে ভেঙ্গে যায়। এমনকি কাঠের সেতুর উত্তর পাশ্বের অংশ সম্পূর্ণ তক্তা নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ। বর্তমানে একটি স্থায়ী পাঁকা সেতুর অভাবে যাতায়তের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দুই ইউনিয়নের ১৪ গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার বাসিন্দাকে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও চকরিয়া উপজেলা পরিষদের ভাইনস চেয়ারম্যান মকছুদুল হক ছুট্টু বলেন, জরাজীর্ণ কাঠের সেতুটি দিয়ে বর্তমানে উপকূলীয় জনপদের কোনাখালী ও ডেমুশিয়া ইউনিয়নের মৌলভীপাড়া, লতাবুনিয়া পাড়া, খাতুর বাপের পাড়া, ডিয়ারপাড়া, সিকদার পাড়া, মুছারপাড়া, জমিদার পাড়া, নোয়াপাড়াসহ অন্তত ১৪টি গ্রামের জনসাধারণ চরম ঝুঁিকতে চলাচল করছেন। তবে যে কোন মুর্হুতে কাঠের সেতুটি ভেঙে খালে পড়ে গেলে সর্বসাধারণের চলাচল একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে। তাই জনস্বার্থে অবিলম্বে এখানে একটি স্থায়ী পাঁকা সেতু নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
কোনাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদার বলেন, খালের উপর স্থায়ীভাবে একটি সেতু নির্মাণের জন্য কোনাখালী এবং ঢেমুশিয়া ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষথেকে যৌথভাবে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন (পিআইও) কর্মকর্তার দপ্তরে একটি প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে অনেক আগে। কিন্তু সেই প্রস্তাবনা এখনো আলোর মুখ দেখেনি।
বিষয়টি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন, সরেজমিনে সেতু পরিদর্শনপূর্বক ওখানে একটি নতুন করে স্থায়ী সেতু নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।
পাঠকের মতামত: