নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: চকরিয়া সদরে অসাধু ব্যবসায়ীদের গলাকাটা বানিজ্যের মধ্য দিয়ে জমে উঠেছে ঈদের বাজার। রমজান মাসের সিয়াম সাধনা শেষে একেবারে সন্নিকটে চলে এসেছে মুসলমান সম্প্রদায়ের অন্যতম বৃহত্তর ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর বা রোজার ঈদ। আর এই ঈদের উৎসবকে রাঙ্গিয়ে দিতে ধনী গরীব সবশ্রেণীর মানুষ এখন নতুন জামা-কাপড় কেনাকাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। ইতোমধ্যে ঈদকে ঘিরে কক্সবাজারের চকরিয়ায় মার্কেট গুলোতে জমে উঠেছে ঈদের বাজার। ক্রেতাদের ভিড়ের কারণে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। ঈদের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে বিপনী বিতানে বাড়ছে ক্রেতা সমাগম। এ ফাঁকে কম মুল্যের ও নিন্মমানের পণ্যের বিনিময়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা হাতিয়ে নিচ্ছে চড়াদাম। এতে প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ ক্রেতারা। সারাদেশে ভোক্তা অধিকার সংগঠসনের কার্যক্রম চলমান থাকলেও চকরিয়ায় তা অকার্যকর হয়ে পড়েছে। প্রশাসনেরও তেমন কোন প্রকারের তদারকি নেই বরলেও চলে। ফলে চকরিয়া সদরের অসাধু ও অতিলোভী কিছু ব্যবসায়ী নিন্মমানের পন্যের কম দামের পন্য দিয়ে অতিরিক্ত দাম হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
চকরিয়া উপজেলা সদর তথা চিরিঙ্গা বাণিজ্যিক শহরটি চতুর্মুখী হওয়ায় এ শহরে বিভিন্ন উপজেলা থেকে লোকসমাগমও প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকে। চট্রগ্রাম- কক্সবাজার প্রধান সড়ক চট্রগ্রাম জেলা থেকে কক্সবাজারের শুরুতেই চকরিয়া উপজেলার উপর দিয়ে ঈদগাঁহ(ঘোষিত) ও রামু উপজেলা পেরিয়েই হিরাম কক্সের পর্যটন নগরী কক্সবাজারে প্রবেশ করতে হয়।
চকরিয়া উপজেলার পূর্বে পার্বত্য বান্দরবান জেলার লামা ও আলীকদম উপজেলা অবস্থিত। পশ্চিমে মহেশখালী,পেকুয়া ও কুতুবদিয়া উপজেলা অবস্থিত হওয়ায় এ সব উপজেলার সংযোগস্থল চকরিয়া উপজেলা উল্লেখযোগ্য। পার্বাত্য লামা, আলীকদম উপজেলার অধিবাসী ও মহেশখালী,কুতুবদিয়া,পেকুয়ার বিশাল জনগোষ্ঠী নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী ক্রয়ের জন্য এ চকরিয়ায় আসে। চকরিয়া থানার রাস্তা মাথা থেকে পুরাতন এসআলম কাউন্টার পর্যন্ত রয়েছে ১৮টি ছোট-বড় বিপনী বিতান বা মার্কেট। এসব মার্কেটে পাইকারি ও খুচরা দোকানসহ পাঁচশতাধিক বিক্রয় প্রতিষ্ঠানে রাতদিন ক্রেতাদের ভিড় জমে থাকে।
উপজেলা শহরের এ মার্কেটগুলোতে বিভিন্ন উপজেলা থেকে সিএনজি চালিত অটো, টমটম,ম্যাজিক গাড়ীর মত ছোট যানে করে ক্রেতারা প্রতিনিয়ত জমায়েত হয়। যার ফলে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় ছাত্র-ছাত্রীসহ সাধারণ পথচারীদের । জেলার অন্য উপজেলা প্রধান সড়ক থেকে দূরত্ব থাকায় এসব উপজেলায় সকল প্রকার পণ্য ক্রয় সহজলভ্য নয়। কেননা দেশের বিভিন্ন কোম্পানির উৎপাদিত পণ্য যোগাযোগ সংকট থাকায় পাহড়ী ও সমুদ্র উপকূলীয় দুর্গম এলাকায় পৌঁছাতে পারে না। ফলে চকরিয়া উপজেলায় গড়ে উঠেছে রকমারি পণ্যের দোকান ও অভিজাত শপিং মল। এছাড়াও খাদ্য দ্রব্যের পাইকারি ও খুচরা দোকান রয়েছে ব্যাপক। বিশেষ করে এ উপজেলায় রয়েছে গার্মেন্টস পণ্যের বিশাল মার্কেট। এ মার্কেটগুলোতে আগামী ঈদকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা পণ্য বিক্রয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে।
চকরিয়া নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী সভাপতি আবদুল হামিদ জানান, চকরিয়া উপজেলা জেলার মধ্যে ব্যবসার জন্য অন্যতম আকর্ষণীয় জোন। ঈদ উপলক্ষে কেনাকাটা ছাড়াও বিয়েসহ নানা ধরণের অনুষ্ঠানের জন্য পণ্য ক্রয়ের জন্য এ উপজেলা শহরে প্রতিনিয়ত ক্রেতাদের ভিড় থাকে। তাই ক্রেতা ও বিক্রেতাদের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের জোর নজরাদারীও বাড়ানো প্রয়োজন মনে করছি। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে মার্কেটে কাপড়চোপড়ের দোকান গুলোতে ভিড়ও লক্ষ্য করার মত।
এদিকে ক্রেতা সাধারণের অভিযোগ, ঈদের কেনাকাটা ঘিরে সুযোগ বুঝে কতিপয় মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা কম মূল্যের পণ্য বিক্রি করে বেশি মূল্য হাতিয়ে নিচ্ছে। এভাবে গ্রামের সহজ সরল মানুষ পেয়ে অনেক ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত মুল্যের আড়ালে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা। এতে সরল-সোজা গ্রামের হতদরিদ্রদের পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি।
সরেজমিনে বিপনী বিতান ঘুরে দেখা গেছে,একই কোম্পানির একই মানের পণ্য বিক্রি হয় ভিন্ন ভিন্ন মূল্যে। আবার নকল পণ্যেও বাজার সয়লাব। পণ্য ক্রয়ে ক্রেতারা ভুল করে নকল পণ্য অধিক মূল্যে কিনে নিচ্ছে। এতে ক্রেতারা ঠকে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। ঈদ বাজারে নকল ও ভেজাল পণ্য সয়লাব করায় মানসম্মত পণ্য যাছাই করা নিয়ে বিপাকে পড়েছে ক্রেতা সাধারণ। এ ব্যাপারে প্রশাসনের বাজার মনিটরিং জোরদারের আহবান জানিয়েছেন ক্রেতা সাধারণ।
পাঠকের মতামত: