ঢাকা,রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় কাল ভোট উৎসব সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণে প্রশাসনের প্রস্তুতি চুড়ান্ত: অনিয়ম করলে প্রিসাইডিং অফিসারকেও গ্রেপ্তারের হুঁশিয়ারি

Exif_JPEG_420

এম.মনছুর আলম, চকরিয়া ::

তফসিল অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপে কক্সবাজারের চকরিয়ায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে কাল সোমবার। সে অনুযায়ী প্রার্থীদের প্রচারণা শেষ হয়েছে গত শনিবার মধ্যরাতে। এর পর থেকে আইন-শৃঙ্খল বাহিনীর সদস্যরা টহল ব্যবস্থাা জোরদার করেছে। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধীতায় থাকা চেয়ারম্যান পদে ৪জন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩জন ও পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জনসহ মোট ১২ প্রার্থী উৎসবমুখর পরিবেশে প্রচারণা শেষ করেছেন। তবে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ প্রার্থী গিয়াস উদ্দিনের প্রধান প্রতিদ্বন্ধী ফজলুল করিম সাঈদীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা ছিল বেশি। তবে প্রশাসনের কঠোর নজরদারির কারণে শান্তিপূর্ণভাবে প্রচারণা শেষ হয়েছে এখানে।

এদিকে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠান সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে করতে সার্বিক প্রস্তুতি  চুড়ান্ত করা হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। কর্মকর্তারা বলছেন, এই নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য। এখানে ভোটার সংখ্যা ২ লক্ষ ৮৪ হাজার ৫৫৫ জন। আর উপজেলার ১৮ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ৯৯টি কেন্দ্রের ৬৩৪টি বুথে ভোটগ্রহণ করা হবে।

এ ব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খোন্দকার মো. ইখতিয়ার উদ্দিন আরাফাত চকরিয়া নিউজকে বলেন, শতভাগ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে অতীতের সকল রেকর্ড ছাপিয়ে এবারের নির্বাচনে ১৮টি ইউনিয়নের জন্য একজন করে এবং পৌরসভার জন্য দুই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইতোমধ্যে নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে ১জন।’

তিনি জানান, নির্বাচনে আইন-শৃক্সক্ষলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ৬ প্লাটুন বিজিবি সদস্য ইতোমধ্যে চকরিয়ায় অবস্থাান করছে। চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে আরো বাড়তে পারে। এছাড়া বিপুল সংখ্যক পুলিশের পাশাপাশি প্রতিকেন্দ্রে অন্তত ১০ আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবে নিরাপত্তায়।

নির্বাচনে উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা সমন্বয়ক উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘নির্বাচনটি হবে শতভাগ সুষ্ঠু। তাই সকল প্রিসাইডিং অফিসারসহ ভোগগ্রহণ কর্মকর্তাদের কঠোর বার্তা দেওয়া হয়েছে। এর পরও যদি কোন ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তা অনিয়ম করার চেষ্টা করেন তাহলে সাথে সাথে গ্রেপ্তার করা হবে এবং ভোটগ্রহণ স্থাগিত থাকবে। কোন অবস্থাাতেই প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন উপহার দেওয়া হবে না। সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে যাবতীয় প্র¯‘তি চুড়ান্ত করা হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা পুলিশের চকরিয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার কাজী মো. মতিউল ইসলাম চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে যা যা করার দরকার তার সবপ্র¯‘তি চুড়ান্ত করা হয়েছে।’

চকরিয়া থানার ওসি মো. বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘নির্বাচনে কোন অনিয়ম বরদাশত করা হবে না। ব্যালটে কেউ হাত দেওয়ার চেষ্টা করলে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মোতাবেক গুলি করা হবে। এক্ষেত্রে সে কে তা দেখা হবে না। নির্বাচনে পুলিশের প্রায় ১১০০ সদস্য নিয়োজিত থাকবে।

র‌্যাব কক্সবাজার ক্যাম্পের কম্পানি কমা-ার মেজর মো. মেহেদী হাসান চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘নির্বাচনে ভোটারদের যাতায়াত নির্বিঘœ করাসহ আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে র‌্যাবের দুই প্লাটুন সদস্য নিয়োজিত থাকবে।’

এ ব্যাপারে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. বশির আহমদ চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘এবারের নির্বাচন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ, গ্রহণযোগ্য করতে যা যা করার দরকার তার সবপ্র¯‘তিই চুড়ান্ত করা হয়েছে। নির্বাচনে ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের কোন অনিয়ম সহ্য করা হবে না। এর পরও কোন কেন্দ্রে কেউ প্রভাব বিস্তার বা অন্য কোন অনিয়মের অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে ওই কেন্দ্রে নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া হবে। তাই একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য ভোট উপহার দিতে প্রতিদ্বন্ধী সকল প্রার্থীর উচিত নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে সহায়তা করা।’

কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন আজ রবিবার দুপুরে চকরিয়া থানাচত্বরে কেন্দ্রভিত্তিক নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, কোন অবস্থাাতেই ভোট কারচুপির সুযোগ দেওয়া হবে না কাউকে। এক্ষেত্রে পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা কঠোর নজরদারির মাধ্যমে প্রতিহত করতে হবে। আর যত বড় প্রভাবশালী ব্যক্তি বা মাস্তান হউক না কেন কেন্দ্র দখল বা ব্যালটে হাত দেওয়ার চেষ্টা করলে সাথে সাথে গুলি করতে হবে।’

পাঠকের মতামত: