ঢাকা,রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

চকরিয়া ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মশিউর ও তহশিলদার সেলিমের যত জালিয়াতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::
চকরিয়ার ভূমি কর্মকর্তাসহ দু’জনের বিরুদ্ধে জালিয়াতি করে খতিয়ান সৃজন, নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তরা হলেন- চিরিঙ্গা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদার (ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা) সেলিম উল্লাহ ও চকরিয়া উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার (বর্তমানে চট্টগ্রাম মহানগর চাঁদগাঁও সার্কেল ভূমি অফিসে কর্মরত) মশিউর রহমান। তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর মনজুর আলম স্বাক্ষরিত একটি চিঠি গত ১২ ডিসেম্বর চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর মনজুর আলম।
সংশিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চকরিয়া পৌরসভার দক্ষিণ বাটাখালী এলাকায় দারুল কোরআন একাডেমি নামের একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য খতিয়ান করতে আবেদনকৃত একই জমি জালিয়াতির মাধ্যমে দু’জনের নামে প্রতিবেদন দিয়েছেন দুই কর্মকর্তা। এ ছাড়া ফাইল আটকে ঘুষ দাবি এবং জালিয়াতির তথ্য ফাঁস হওয়ার পর ভূমি অফিসের বালাম বই থেকে পাতা ছিঁড়ে ফেলার চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে তহশিলদার সেলিম উল্লাহ ও চকরিয়া উপজেলা ভূমি অফিসে সার্ভেয়ার মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে। শুধু এ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নয়, এভাবে জালিয়াতি, ঘুষ গ্রহণের একাধিক অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, সেলিম উল্লাহ চিরিঙ্গা ভূমি অফিসে যোগদান করার পর থেকেই চকরিয়া উপজেলা ভূমি অফিসে সার্ভেয়ার মশিউর রহমানের যোগসাজশে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। সেখানে টাকা ছাড়া কোনো কাজ হয় না। এখানে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা এমন মাত্রায় পৌঁছেছে যে, অনেক ক্ষেত্রে ঘুষ দেওয়ার পরও কাজ হতো না। সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে অবৈধভাবে অর্থ আদায় করতে তাদের নথিপত্র পর্যন্ত গায়েব করে দিতেন তহশিলদার সেলিম উল্লাহ ও সার্ভেয়ার মশিউর রহমান। জাল দলিলে জমির নামজারি হয়ে যেত অন্যের নামে। নামজারি, খারিজ, খাজনা প্রদানসহ অন্যান্য কাজে চরম ভোগান্তির শিকার হন সাধারণ মানুষ। কামাল, ইকবাল নামের দুই দালালের সমন্বয়ে সিন্ডিকেট করে ঘুষ-দুর্নীতির বাজার বসে চিরিঙ্গা ভূমি অফিসে। তার এসব অবৈধ কাজের সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন চকরিয়া উপজেলা ভূমি অফিসে সার্ভেয়ার মশিউর রহমান।
এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে চিরিঙ্গা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদার সেলিম উল্লাহ ও চকরিয়া উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয় কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। পরে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।
পরে চকরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ রাহাত উজ জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই, যদি এ রকম কোনো কিছু হয়ে থাকে তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত: