ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়া খুটাখালী ও বরইতলী বনবিটে সামাজিক বনায়নের জায়গা দখল করে চলছে বসতি নির্মাণ, বনভূমি বিক্রি করে কোটিপতি হচ্ছেন জড়িত চক্র

dokholএম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :::

কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নে বনবিভাগের বরাদ্দ দেওয়া সামাজিক বনায়ন জবরদখলে মেতে উঠেছে প্রভাবশালী চক্র। চক্রটি রাজনৈতিক খুলস পাল্টিয়ে চালাচ্ছে দখর চেষ্টা। অভিযোগ উঠেছে, ভূমিদস্যূরা প্রতিনিয়ত জবরদখল কাজ চালিয়ে গেলেও রহস্যজনক কারণে বনবিভাগের লোকজন নীরব ভূমিকা পালন করছে।

অভিযোগে জানাগেছে, বিগত ২০০৪ ও ২০০৫ অর্থ বছরে উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের ফুলছড়ি বনবিটের অধীনে বনবিভাগের ২৫ হেক্টর বনভূমি ২৫ ভূমিহীন ব্যক্তিকে উপকারভোগি হিসেবে নির্বাচন করে বনবিভাগ অংশীদারিত্ব বনায়ন করার সুযোগ দেয়। বর্তমানে বরাদ্দ দেওয়া বাগানগুলোর রকমারি গাছ বড় হয়ে কর্তনযোগ্য হওয়ায় স্থানীয় একটি চিহ্নিত ভূমিদস্যূ চক্রের লুলোভ দুষ্টি পড়ে এসব বাগানে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর এসব ভূমিদস্যূ রাজনৈতিক খুলস পাল্টিয়ে শুরু করে বনভূমি জবরদখল ও বননিধন। এর মধ্যে সামাজিক বনায়ন জবরদখল কাজ তাদের জন্য অন্যতম হয়ে দাড়িয়েছে। জবরদখলের পর এসব বাগানে রাতারাতি তৈরি করা হচ্ছে বসতি। বিক্রি করা হচ্ছে উচ্চ দামে।

স্থানীয় লোকজন জানান, সামাজিক বনায়ন জবরদখল করে বিক্রি করে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনেছে অনেক নব্য আওয়ামীলীগার। কেউ প্রতিবাদ করলে করা হয় নানাভাবে হয়রানী। অংশীদারিত্ব বনায়নের উপকার ভোগি মোবারক আলী বলেন, ২০০৪ ও ২০০৫ সালে বনবিভাগ কর্তৃক উপকারভোগি হিসেবে বরাদ্দপ্রাপ্ত পতিহেক্টর জায়গায় সৃজন করা হয় রকমারি গাছ। কিন্তু স্থানীয় চিহ্নিত দস্যূ সিন্ডিকেটটি একে একে গাছ কেটে সাবাড় করে সব বাগান।

বর্তমানে এসব বাগানে গাছ নেই, গাছ না থাকায় এখন শুরু করেছে জমি দখল করে বেচাকেনা। মোবারক আলী আরও জানান, জবরদখলকৃত জায়গায় স্থপানা তৈরি করার পর অন্যত্রে বিক্রি করে দিচ্ছে তারা। ইতোমধ্যে ১০টি বাগান জবর দখলপূর্বক বিক্রি করে ১০ কোটি টাকার বেশি দামে। এভাবে ভূমিদস্যূরা সামাজিক বনায়নের জমি বিক্রি করে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনছে বলে জানাগেছে। একইভাবে স্থানীয় আনোয়ারা বেগম, মোরশেদা বেগম ও রফিকউল ইসলামের প্লটও জবরদখলে নিয়েছে ভূমিদস্যূ চক্রটি। ইতোমধ্যে জবরদখলকৃত জায়গায় নতুন করে ২০টি কাচাঘর নির্মাণ করেছে। এসব জবরদখলকৃত বনবিভাগের জমি প্রকাশ্যে বিক্রি করলেও বনবিভাগের লোকজন নির্বিকার।

অপরদিকে উপজেলার চট্টগ্রাম দক্ষিন বনবিভাগের অধীন বরইতলী বনবিটের নিয়ন্ত্রনধীন

চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের গরু বাজারের পূর্ব-দক্ষিণ পাশ্বে সামাজিক বনায়নের জমি জবর দখল করে ঘর নির্মাণের হিড়িক উঠেছে। এনিয়ে বনায়নের উপকার ভোগীদের মাঝে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্তরা গত ৫মে চকরিয়া থানার ওসিসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগে জানাগেছে, বনভূমি রক্ষাসহ নতুন বনায়ন সৃজনের লক্ষ্যে সরকারের বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বনবিভাগ উপকারভোগী বাছাই করে সামাজিক বনায়ন বরাদ্ধ দিয়েছেন। এসব উপকারভোগীরা বিপুল অংকের অর্থ খরচ করে গাছ রোপন ও সংস্কার করেন। গাছের সাইজ একটু বড় হওয়ায় এবং জমি মূল্য দিন দিন বেড়ে চলায় স্থানীয় চিহ্নিত ভূমিদস্যু সামাজিক বনায়নের এসব জমি দখল নিয়ে ঘর নির্মাণ শুরু করে। গরু বাজারের পূর্ব-দক্ষিণ পাশ্বে সামাজিক বনায়ন বরাদ্ধ ১নং ওয়ার্ড ডেইঙ্গাকাটা এলাকার মৃত নুর আহমদের পুত্র ফরিদুল আলমসহ ১০জনের বনায়নে গত চলতি সনের ১মে সকাল ১০টার দিকে বরইতলী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড মাইজপাড়া এলাকার মৃত হোছন আলীর পুত্র শাহ আলম (৫০)এর নেতৃত্বে ৫-৬জনের একদল দূর্বৃত্ত সশস্ত্র অবস্থায় গিয়ে জমি দখলে নিয়ে বনায়নের গাছ কেটে ঘর নির্মাণ করেছে। ফলে সরকারের নেওয়া মহৎ উদ্যোগ ভেস্তে যাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত উপকারভোগীরা এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। #

পাঠকের মতামত: