ঢাকা,বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

চকরিয়া উপজেলা নির্বাচনে আচরণবিধি মানছেন না কক্সবাজার-১ আসনের এমপি জাফর, আতঙ্কিত প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী ও সাধারণ মানুষ, কমিশনে লিখিত অভিযোগ দায়ের  

ছবির ক্যাপশন : দলীয় প্রার্থী গিয়াসকে সাথে নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় কক্সবাজার-আসনের এমপি জাফর আলমছবিটি উপজেলার কাকারা ইউনিয়ন পরিষদ চত্বর থেকে তোলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার ::

নির্বাচনী আচরণবিধি না মানার অভিযোগ উঠেছে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের এমপি জাফর আলমের বিরুদ্ধে। এনিয়ে নির্বাচন কমিশন, জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধি একাধিক প্রার্থী। বিভিন্নস্থানে এমপি জাফর দলীয় প্রার্থীর পক্ষে নৌকার প্রচারণা ও ভোট চেয়ে দেওয়া বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

একাধিক প্রার্থীর করা লিখিত অভিযোগে জানানো হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের আচরণ বিধিমালার পাশাপাশি খোদ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা না চালাতে কঠোর নির্দেশনা দেন। কিন্তু সেই আচরণবিধি ও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অমান্য করে যে কোন উপায়ে দলীয় প্রার্থী গিয়াস উদ্দিনকে জেতাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তিনি কয়েকদিন ধরে উপজেলার বদরখালী, বিএমচর, হারবাং, কৈয়ারবিল, চিরিঙ্গা, পৌরসভাসহ বিভিন্ন জায়গা সভা-সমাবেশ করেছেন। এমনকি স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কর্মী ও সমর্থকদের হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন নির্বাচনী মাঠ থেকে সরে যেতে। একটি সভায় বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, আর চকরিয়া-পেকুয়া হচ্ছে জাফরের।’ এই অবস্থায় স্বতন্ত্র এসব প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। দলীয় প্রার্থী গিয়াসের পক্ষে নির্বাচনী এলাকায় মাঠ দাপিয়ে বেড়ানোর কারণে প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকেরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এ কারণে আগামী ১৮ মার্চ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে শঙ্কা কাজ করছে সকলের মধ্যে। এমপির এমন ভূমিকায় আওয়ামীলীগের তৃণমূল নেতাকর্মীর পাশাপাশি সাধারণ মানুষও ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের অসংখ্য নেতা বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আমাদের এমপি কোন প্রার্থীর পক্ষে শক্ত অবস্থান নিক তা আমরা চাই না। কারণ জনসমর্থহীন কোন প্রার্থীর পক্ষ নিয়ে ভবিষ্যতে নিজের অবস্থানটাও নড়েবড়ে করবেন না।’

তাদের মতে, এবারের নির্বাচনে বিএনপি, জামায়াত বা অন্য কোন দলের প্রার্থী নির্বাচনের মাঠে নেই। দলীয় প্রার্থীর পাশাপাশি আওয়ামীলীগের দুইজন নেতা ফজলুল করিম সাঈদী ও মোক্তার আহমদ চৌধুরী এবং শ্রমিকনেতা জহিরুল ইসলাম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। এ কারণে দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত রয়েছে একক প্রার্থীর পাশাপাশি দলের অন্য কেউ নির্বাচন করলে তাদেরকে স্বাগত জানানো হবে। এই সিদ্ধান্তের পর প্রতিদ্বন্ধিতাপূর্ণ নির্বাচনের স্বার্থে দলের আরো দুইজন প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে প্রতিদ্বন্ধিতায় নামে। কিন্তু জনসমর্থনহীন প্রার্থীর পক্ষে এমপি জাফর আলম আটঘাট বেধে মাঠে নামায় সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য ভোট অনুষ্ঠান নিয়ে শঙ্কা কাজ করছে সকলের মাঝে।

এ ব্যাপারে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. বশির আহমদ বলেন, ‘কক্সবাজার-১ আসনের এমপির বিরুদ্ধে আচরণবিধি না মানার অভিযোগ পাওয়ার পর প্রাথমিকভাবে তাকে শো-কজ করা হবে। এজন্য আমাদের পক্ষ থেকে সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’

তবে কক্সবাজার-১ আসনের এমপি জাফর আলম বলেন, ‘আমি কোন প্রার্থীর পক্ষে সরাসরি ভোট চাচ্ছিনা। আমি নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলছি। অবশ্য নৌকার প্রার্থী থাকায় তার পক্ষে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে কর্মীসভা করছি।’

পাঠকের মতামত: