সেলিম উদ্দীন, ঈদগাঁও :: গাড়ি চলে না চলে না চলে—না —রে গাড়ি চলে না। প্রখ্যাত বাউল শাহ আব্দুল করিম রচিত সঞ্জিব দে’র কন্ঠে গাওয়া জনপ্রিয় এই গানটিই অবশেষে চলার পথে কষ্টে ভরা মনে আনন্দের খোরাক হলো।
লবন ভর্তি ট্রাক নিয়ে যানজটে আটকা পড়ে ওই গানটিই কষ্ট ভুলে থাকার জন্য একমাত্র অবলম্বন হতে পারে।
আটকা পড়া ট্রাক গাড়িগুলো থেমে থেমে চলার সময় বিলম্বে অভ্যস্ত রসিক এক ট্রাক ড্রাইভারকে মনের আনন্দে ওই গানটি নিজের সুরে গাইতে দেখা গেছে।
বলছিলাম কক্সবাজারের ঈদগাঁও থানার শিল্প এলাকা ইসলামপুর ইউনিয়নের মাত্র এক কিলোমিটার সড়কের বেহাল অবস্থায় কথা।
মঙ্গলবার থেকে সড়কে আটকে আছে অধর্শতাধিক ট্রাক গাড়ি। তৎমধ্যে বুধবার দুপুরে গর্তে পড়ে উল্টে গেছে একটি বড় ট্রাক। তবে স্থানীয়রা যারপরনাই চেষ্টা করছেন যান চলাচল স্বাভাবিক করতে।
সরজমিন দেখা গেছে, আরকান সড়কের বটতলী স্টেশন থেকে ইসলামপুর বাজার পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ক’দিনের বৃষ্টিতেই সড়কের গর্তে থাকা পানিতে ছোট-বড় যানবাহন উল্টে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
ইসলামপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম জানিয়েছেন, বটতলী স্টেশন থেকে ইসলামপুর বাজার পর্যন্ত রাস্তার অবস্থা একেবারেই চলাচলের অনুপযোগী। টানা বৃষ্টির ফলে সড়কটির বিভিন্ন অংশে খানাখন্দে পরিণত হয়। দীর্ঘ দুই বছর ধরে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অবহেলায় সড়কটি দিনদিন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানায়, বটতলী স্টেশন থেকে চৌফলদন্ডী ব্রিজ পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার সড়ক কার্পেটিং করার জন্য টেন্ডার হয় প্রায় ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে। কাজটি পান মেসার্স চকরিয়া ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। উন্নয়ন প্রকল্পের বেশ কয়েকটি কাজ শেষ হলেও ইসলামপুর বাজার থেকে নাপিতখালী পর্যন্ত কার্পেটিং হয়নি এখনও।
স্থানীয় লবণ ব্যবসায়ী হারুনর রশিদ জানান, সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। তাছাড়া শিল্প নগরী হিসেবে প্রতিদিন লবণ বোঝাই ট্রাক প্রবেশ করে। সড়কের ১ কিলোমিটার জুড়ে খানাখন্দে ভরপুর, যার কারনে চালকরা এ সড়কে প্রবেশ করতে চায় না। ট্রাক প্রবেশ করতে না পারলে লবণ রপ্তানি ও আমদানি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। লবণ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে এখানকার শতাধিক লবণ মিল বন্ধ রাখতে হবে। বিষয়টি দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা ট্রাক চালক আবুল বশর চকরিয়া নিউজকে বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়া আসা হয়েছে। এ সড়কটির মত অকেজো কোথাও দেখিনি। বৃষ্টির পানি জমে থাকলে বুঝা যায় না যে কোনখানে গর্ত আর কোনখানে সমতল। সংকুচিত হওয়ায় অন্য পাশ দিয়ে যাওয়া যায় না। এ রকম হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনায় শিকার হবো।
সড়কের ইজিবাইক চালক রমজান আলী জানান, চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে আমাদের। এ অবস্থা চলতে থাকলে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মৃত্যুও হতে পারে।
পাঠকের মতামত: