ঢাকা,রোববার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মর্গের ফ্রিজ এক্সরে ও আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিন নষ্ট

কক্সবাজার অফিস ::   জোড়াতালি দিয়ে চলছে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল। মর্গে লাশ রাখার ফ্রিজ নষ্ট ৫ মাস ধরে। ফলে লাশ গন্ধ ছড়ালে রোগির স্বজনরাই নিয়ে আসেন বরফ।ডিজিটাল এক্সরে মেশিন নষ্ট ২ মাস,আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিন নষ্ট দীর্ঘ দিন। সব কিছু চলছে বিকল্প দিয়ে, ফলে সাধারণ মানুষ সেবা পেতে ভোগান্তি আর হয়ারানীর শেষ নেই। তবে কতৃপক্ষ বলছে কোন সমস্যা নেই। এতে কতৃপক্ষের আন্তরিকতা এবং সেবার মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে সচেতন মহল।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা লাশের জন্য বরফ নিয়ে আসছিল টেকনাফের আবদুল করিম। জানতে চাইলে তিনি বলেন,মর্গের দায়িত্বে থাকা লোকজন বলেছে তাদের লাশ রাখার ফ্রিজটি দীর্ঘ দিন ধরে নষ্ট তাই এখানে বেশি সময় ধরে লাশ রাখতে হলে বরফ কিনে আনতে হবে। তাই বাধ্য হয়ে বরফ নিয়ে আসলাম। জানতে চাইলে মর্গের দায়িত্ব্ েথাকা মনির জানান এখানে সরকারিভাবে যে ফ্রিজটি আছে সেটা প্রায় ৫ মাস ধরে নষ্ট। এটা ঠিক করার জন্য কতৃপক্ষকে অনেকবার বলা হয়েছে। তাই এখন লাশ রাখতে বরফ দিতে হয়। সদর হাসপাতালের এক্সরে রুমের সামনে গিয়ে দেখা যায় মানুষের ভীড় বেশি। এখানে দাড়ানো খুরুশকুলের নাছিমা আক্তার,পিএমখালীল আবছার,সমিতি পাড়ার মুজিবুল আলম সহ অনেকে জানান সকাল সাড়ে ৮ টা থেকে এখানে লাইনে দাড়িয়ে আছি ১২ টা পর্যন্ত সিরিয়াল আসেনি। পরে ভেতরে গিয়ে সেখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে এখানে আগে ২ টি (কম্পিউটার) মেশিন দিয়ে এক্সরে করানো হত। কিন্ত এর মধ্যে ডিজিটাল এক্সরে মেশিনটি নষ্ট তাই বর্তমানে একটি মেশিন চালু আছে তাই মানুষকে বেশিক্ষন অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এখানে আমাদের করার কিছুই নেই।
একই সাথে আলট্রাসনোগ্রাফি রুমে গিয়ে দেখা গেছে সেখানেও সেবা প্রার্থীদের দীর্ঘ লাইন। এখানে অপেক্ষারত মহেশখালীর আলমাস খাতুন ও টেকপাড়ার ছব্বির আহামদ বলেন, পেটের ব্যাথার কারণে ডাক্তার আলট্রাসনোগ্রাফি করতে বলেছে তবে টাকার অভাবে সরকারি হাসপাতালে এসেছি এখানে গতকাল সাড়ে ১২ টায় শ্লিপ জমা দিলেও সেদিন করাতে পারিনি এখন আজকে আবার এসেছি সকাল থেকে লাইনে আছি এখন ১২ টা বাজে তবুও পরীক্ষা করাতে পারিনি। পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এখানেও মেশিন নষ্ট মাত্র একটি মেশিন দিয়েই চলছে পরীক্ষা।
এ সময় কর্তব্যরত ডাঃ ওসমানুর রশিদ চকরিয়া নিউজকে বলেন, আমাদের এখানে ৩ টি আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিন নষ্ট পড়ে আছে কয়েক মাস ধরে। সর্বশেষ আইসিইউর মেশিনটি নষ্ট হয়ে পড়েছে ১৫ দিন আগে। এখন মাত্র ১ টি মেশিন চালু আছে সেটা দিয়ে কোন মতে কাজ চলছে। তবে এর মধ্যে নিয়ম অনুযায়ী মেশিন ঠিক করার জন্য কতৃপক্ষকে লেখা হয়েছে উনাদের একটি টিম এসে সব কিছু দেখে গেছে তারা একটি বাজেট দেবে সেটা অধিদপ্তরে পাস হলে তারপর কাজ হবে। তবে এর মধ্যে আরো একটি নতুন মেশিন কেনার জন্য হাসপাতাল কতৃপক্ষ চেস্টা করছে।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের সেবার মান নিয়ে জেলার সাধারণ মানুষ অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। তাদের দাবী এখন অনেকটা কর্মচারী নির্ভর হয়ে গেছে পুরো হাসপাতাল কতৃপক্ষের নিয়ন্ত্রন নাই বলে মনে হয়। বিশেষ করে পরীক্ষা নিরিক্ষা করাতে গেলে খুব অসুবিধায় পড়ছে মানুষ। আর দুপুর হতে সব পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। এ ব্যাপারে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ নোবেল কুমার বড়ুয়া বলেন, মর্গের ফ্রিজ নষ্ট বিষয়টি অন্য আরএমও দেখে। আর এক্সরে এবং আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিন নষ্ট বিষয়টি ঠিক আছে সেটা মেরামত করার যে সরকারি নিয়ম আছে সেটা আমরা শুরু করেছি। খুব শীঘ্রই সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে। তবে ভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন হাসপাতাল তত্বাবধায়ক ডাঃ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন। উনার মতে হাসপাতালে কোন সমস্যাই নেই। উনার দাবী সব কিছু ঠিক আছে কোথাও কোন সমস্যা নেই বরং নতুন এক্সরে মেশিন এসেছে সেটা বসানোর কোন জায়গা নেই।

পাঠকের মতামত: