ঢাকা,বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪

উন্নত রাষ্ট্র গঠনে পরিবেশ রক্ষার বিকল্প নেই -জেলা প্রশাসক

এম.এ আজিজ রাসেল ::  জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেছেন, পরিবেশ সুরক্ষায় ব্যক্তি পর্যায় থেকে সবাইকে সচেতন হতে হবে। পরিবর্তন ঘটাতে হবে মন ও মানসিকতার। শিশুদের পরিবেশ সম্পর্কে শিক্ষা দিতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সব ক্ষেত্রে পরিবেশ রক্ষায় আরও বেশি প্রচার চালাতে হবে। কারণ উন্নত রাষ্ট্র গঠনে পরিবেশ রক্ষার বিকল্প নেই।

শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) কক্সবাজার সার্কিট হাউজস্থ অরুণোদয় স্কুলের হলরুমে জেলা প্রশাসন আয়োজিত কক্সবাজারের পরিবেশ, পর্যটন ও উন্নয়ন বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন আরও বলেন, দেশের প্রতি নাগরিক হিসেবে সবার দায়িত্ব আছে। স্ব স্ব অবস্থান থেকে সেই দায়িত্ব পালন করা জরুরী। পাহাড় খেকোদের বিরুদ্ধে সামাজিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। স্বেচ্ছাসেবী তৈরি করে মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে বৃদ্ধি করতে হবে সচেতনতা কার্যক্রম।

জেলা প্রশাসক বলেন, করোনাকালীন ব্যবহৃত সার্জিক্যাল মাস্ক পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এ জন্য জেলা প্রশাসন ১ লক্ষ কাপড়ের মাস্ক বিতরণ করবে। পর্যায়ক্রমে বিতরণের প্রসারতা বাড়বে। তিনি সবাইকে সার্জিক্যাল মাস্ক পরিহার করে কাপড়ের মাস্ক পড়ার আহবান জানান।

জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, তরুণরাই দেশের ভবিষ্যৎ। পরিবেশ রক্ষার প্রতি তরুণদের আগ্রহ বাড়ছে দিন দিন। তাই আগামীতে একটি সুস্থ-সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ গড়তে হলে তরুণদের আগে সচেতন হতে হবে।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাজাহান আলি এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সোলায়মান হায়দার, কক্সবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আবুল কাশেম, কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির ও জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. ওয়াহিদুর রহমান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, আইন থাকা সত্ত্বেও আমাদের জনগণ আইন মানতে ইচ্ছুক না। সে কারণে আমাদের পরিবেশ হয়তো এতটা বিরক্ত। সবাই মিলে ঐকান্তিক প্রচেষ্টা চালালে হয়তো এটা এতটা সমস্যা হতে না। আমার কাজের জন্য পরিবেশ দূষণ হতে পারে। সেটা মাথায় রেখে যদি দায়িত্ববোধ নিয়ে কাজ করা যায়, তাহলে মনে হয় পরিবেশ দূষণ অনেকটাই কমে যাবে।

কক্সবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আবুল কাশেম, কিটনাশক ব্যবহারে পরিবেশের ক্ষতি হয়। নিরাপদ চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। জোর দেয়া হচ্ছে জৈব সার ব্যবহার করার।

তিনি বলেন, কক্সবাজারে পরিবেশের অত্যন্ত নাজুক। মানুষ সচেতন না। যেখানে সেখানে ব্যবহৃত জিনিসের মোড়ক ফেলে দিচ্ছে। বাড়ছে পলিথিনের ব্যবহার। এতে বিষাক্ত হচ্ছে বাতাস। নদীগুলোর অবস্থা আরও শোচনীয়। দুষিত পানি পান করে হুমকীতে রয়েছে জনস্বাস্থ্য।

কর্মশালায় বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. সোলায়মান হায়দার বলেন, টেকসই উন্নয়ন থেকে আমরা এখনও পিছিয়ে। ধংসের শেষ প্রান্তে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। এখানকার চারপাশের কেয়া বেস্টনি কেটে ফেলা হয়েছে। যার দরূন সাগরের করাল গ্রাসে প্রতিনিয়ত ছোট হয়ে আসছে দ্বীপটি। তাই সেন্টমার্টিনের পরিবেশ রক্ষায় কঠোর হচ্ছে সরকার। এখানে বালিয়াড়িতে বীচ বাইক ও সাইকেল চালালে জেল-জরিমানা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়া কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত পরিচ্ছন্ন রাখতে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

কর্মশালায় বারটি স্বেছাসেবী সংগঠনের অর্ধশতাধিক পরিবেশপ্রেমী অংশগ্রহণ করেন।

 

পাঠকের মতামত: