আবদুল করিম বিটু, পেকুয়া : ২০০৬ সালে উজানটিয়া-মাতাররবাড়ী মৈত্রী সেতুর নির্মাণ কাজের শুভ উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন সরকারের যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব সালাউদ্দিন আহমেদ । বঙ্গোপসাগর কূল ঘেষে অবস্থিত পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নে করিমদাদ মিয়ার ঘাটে সড়ক ও জনপদ বিভাগের অর্থায়নে ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার বাজেটের এ ব্রীজটির নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পায় এক কালের আলোচিত ঠিকাদারী প্রতিষ্টান চকোরী কনষ্ট্রাকশন ।
ওই প্রতিষ্টানের মালিক গিয়াসউদ্দিন তৎকালীন সরকারের আমলে নির্মাণ কাজ শুরু করে সেতুর মুল পিলার সহ দু’পাশের মূল বেইজ সম্পন্ন করার পর কাজ বন্ধ করে দেয় । পরবর্তী সময়ে ওয়ান ইলেভেন প্রোপট সৃষ্টি হলে ওই ঠিকাদার দীর্ঘ দিন পলাতক থাকেন , যার কারনে এ গুরুত্বপূর্ণ ব্রীজটির নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকে । সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে নদীর দু’খুলের মানুষ গুলো দীর্ঘ ১২ বছরেও ব্রীজের আলোর মূখ দেখেনি । সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় করিমদাদ মিয়ার ঘাট এলাকায় ব্রীজ উদ্বোধনের নেইম ফলক উন্মোচনটি কয়ে গেছে । সাগরের তলদেশ থেকে নির্মাণ করা পিলার গুলো পড়ে যাচ্ছে । আর পিলার ভেঙ্গে প্রায় অর্ধেকাংশ লোহার রড কেটে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা । ব্রীজের মূল্যবান নির্মাণ সামগ্রী চুরি করে নিয়ে গেছে অনেক আগেই । স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান , এই এলাকার উন্নয়নের সার্থে তৎকালীন সরকার নির্মাণ কাজ শুরু করলেও ক্ষমতা ছাড়ার সাথে সাথে ব্রীজের উন্নয়নও শেষ হয়ে গেছে । ফলে আর কবে ব্রীজটি নির্মাণ হবে তা আমাদের জানা নেই ।
সম্প্রতি গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ ও কয়লা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের কাজ শুরু হলে সংশ্লিষ্ট অনেকেই এ ব্রীজটির প্রয়োজনীয়তা আছে বলে মনে করেন । সাধারন লোকজন থেকে শুরু করে সরকারী বেসরকারী কর্মকর্তারা মনে করেন বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী এলাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র হোক বা গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ হোক আর কমার্শিয়াল জোন গড়ে তোলা হোক সব কিছুর একমাত্র প্রতিবন্ধকতা উজানটিয়া – মাতারবাড়ী মৈত্রী সেতু । স্থানীয় সচেতন মহলের মতে সেতুটি নির্মাণ হলে এতদাঞ্চলের উন্নয়ন আরো অনেক বেড়ে যাবে । এ ব্রীজটি নির্মাণ না হলে এলাকায় কোন উন্নয়ন বা কমার্শিয়াল জোন প্রতিষ্টা করা সম্ভব নয় । মহেশখালী সোনাদিয়া থেকে পেকুয়ার মগনামা পর্যন্ত বিস্তৃত দীর্ঘ সাগর তীরবর্তী এলাকা সরকারী বেসরকারী উদ্যোগে বিভিন্ন প্রতিষ্টান গড়ে ওঠার জন্য অন্যতম মাধ্যম এ মৈত্রী সেতুটি শুরু করা অনেক জরুরী বলে মনে করেন অভিজ্ঞ সচেতন মহল ।
পেকুয়া উপজেলার স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি বলেন, গেল ২০১৩ সালে সড়ক ও জনপদ বিভাগের একটি টিম সেতুটি পরিদর্শনে আসেন । সে সময় তারা অর্থায়নের অভাবে সেতু নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে না বলে জানান । সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে ২০১৪ সালের অর্থ বছরে সেতুটি নির্মাণের বরাদ্ধ দেয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা আর হয় নি ।
উজানটিয়া-মাতারবাড়ী মৈত্রী সেতুটি নির্মাণ হলে মহেশখালী সহ কুতুবদিয়া ও পেকুয়া উপজেলার মানুষের সাথে চট্টগ্রাম যাতায়াতের জন্য অনেকটা সহজ হবে এবং তার সাথে অর্থ ও সময়ও সাশ্রয় হবে । সেই সাথে অবহেলিত অঞ্চল গুলোর মাঝে উন্নয়নের দ্বার উন্মোচিত হবে । বর্তমানে মহেশখালী মাতারবাড়ীতে যে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ হচ্ছে উজানটিয়ার ব্রীজটি নির্মাণ হলে তার জন্যও সুফল বয়ে আনবে।
ঐ জন প্রতিনিধির মতে, বর্তমান সরকার একটি জনবান্ধব ও উন্নয়ন মূখী সরকার , বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বে আজ প্রতিটি গ্রামে গঞ্জে উন্নয়নে ভরে যাচ্ছে , প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহেশখালী, পেকুয়া , বাঁশখালী হয়ে একটি মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণ করার পরিকল্পনাও হাতে নিয়েছেন । এটি নির্মাণ হলে উপকূলীয় অঞ্চল গুলো উন্নয়নে দিকে আরো এক ধাপ এগিয়ে যাবে ।
পাঠকের মতামত: