নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: আজ সোমবার ২০ সেপ্টেম্বর উদ্বেগ-উৎকন্ঠার মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বহুল প্রতিক্ষিত কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার নির্বাচন। এবারই প্রথম ইভিএম পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ নির্বাচন। একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে ইতোমধ্যে সার্বিক প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছে উপজেলা প্রশাসন। এরই অংশহিসেবে শনিবার বিকাল থেকে চকরিয়া পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন জনপদ ও ভোট কেন্দ্র সমুহের আশপাশ এলাকায় বাড়ানো হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল কার্যক্রম। এতে অংশ নিয়েছেন পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও বিজিবি সদস্যরা। এ অবস্থায় প্রশাসনের কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যদিয়ে শঙ্কা কাটিয়ে ভোটের উৎসবের আমেজ ফিরেছে পৌর এলাকাজুড়ে।
অপরদিকে ভোট গ্রহনের প্রস্তুতি হিসেবে রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) পৌরসভার আওতাধীন ১৮টি ভোট কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে ইভিএম ভোটিং মেশিনসহ নির্বাচনী সবধরণের সরঞ্জাম। গতকাল দুপুর একটার দিকে চকরিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে সংশ্লিষ্ট প্রতিটি ভোট কেন্দ্রের নির্বাচনী সরঞ্জাম গ্রহন করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিসাডিং কর্মকর্তারা।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, সোমবার ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহনে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বিকালের মধ্যে পৌরসভার ১৮টি ভোট কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে ইভিএম ভোটিং মেশিনসহ নির্বাচনী সবধরণের সরঞ্জাম। ১৮টি ভোট কেন্দ্রে ১৮জন প্রিসাডিং কর্মকর্তা ও ২৭৮জন পোলিং কর্মকর্তা পুরো নির্বাচনে থাকছেন।
তিনি বলেন, ১৮টি ভোট কেন্দ্রে ১৩৯টি বুথে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট প্রয়োগ করবেন ৪৮৭২৪ জন নারী-পুরুষ ভোটার। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা দেখভালে একজন বিচারিক ম্যাজিষ্ট্রেট ও ১২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। তাদের তত্তাবধানে চার প্লাটুন বিজিবি, র্যাবের ৬টি স্ট্রাইকিং ফোর্স, পুলিশের ৬টি মোবাইল ফোর্স ও দুটি স্ট্রাইকিং ফোর্স, অতিরিক্ত স্ট্রাইকিং ফোর্স পুরো পৌরসভায় টহল ব্যবস্থায় থাকবে। একইসাথে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ৫ জন পুলিশ, ৯ জন আনসার সদস্য (৩ জন নারী আনসারসহ) নিরবচ্ছিন্নভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। তবে অতিঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে বাড়ানো হবে অতিরিক্ত র্ফোস।
নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন, শান্তিপুর্ণ পরিবেশে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। নির্বাচনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেইজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ভোট কেন্দ্রগুলোতে যাতে কেউ প্রভাব বিস্তার বা বিশৃঙ্খলা করতে না পারে সেই ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এতে আশাকরি ভোটাররা নির্ভয়ে কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
প্রসঙ্গত: করোনার কারণে ইতোমধ্যে ১১ এপ্রিল প্রথমবার ও ২১ জুন দ্বিতীয়বার মিলে দুই দফা স্থগিত হয়ে যায় চকরিয়া পৌরসভার নির্বাচন। সর্বশেষ নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দেয় ২০ সেপ্টেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠানের। নির্বাচনে মেয়র পদে ৪জন প্রার্থী আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের বর্তমান মেয়র আলমগীর চৌধুরী, নাগরিক কমিটির (স্বতন্ত্র) নারিকেল গাছ প্রতীকের জিয়াবুল হক, জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের মনোয়ার আলম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী কম্পিউটার প্রতীকের অ্যাডভোকেট ফয়সাল উদ্দিন সিদ্দিকী প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন। তন্মধ্যে নৌকার প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ফয়সাল সিদ্দিকী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন গতকাল। নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকা ও নারিকেল গাছ প্রতীকের মধ্যে মুলত হবে ভোটের লড়াই। #
এছাড়াও সাধারণ ৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৪৯ জন এবং সংরক্ষিত ৩টি ওয়ার্ডে ১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
পাঠকের মতামত: