ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

আগামী ২০ সেপ্টেম্বর নির্বাচন/২১

চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচনে ৬৮ প্রার্থীর প্রচার-প্রচারণা জমে উঠেছে

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :: নির্বাচন কমিশনের নতুন ঘোষনা অনুযায়ী আগামী ২০ সেপ্টেম্বর সোমবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার বহুল প্রতিক্ষিত নির্বাচন। প্রথমবারের মতো চকরিয়া পৌরসভার নির্বাচনের ভোট গ্রহন হবে ইভিএমের মাধ্যমে। করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির কারণে ইতোমধ্যে দুইদফা নির্বাচনী কার্যক্রম বন্ধ ঘোষনা করেছিলো নির্বাচন কমিশন। ঘোষিত তফসিল মোতাবেক চলতি বছরের ১১ এপ্রিল এবং পরবর্তী সময়ে ২১ জুন অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিল চকরিয়া পৌরসভার নির্বাচন।

পরবর্তী সময়ে করোনা দুর্যোগের আশঙ্কা থেকে সারাদেশের অন্য পৌরসভার সঙ্গে চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচনও স্থগিত হয়ে যায়। দুইমাস পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করলে সর্বশেষ ২ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনের বৈঠক শেষে স্থগিত পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আগামী ২০ সেপ্টেম্বর দিনক্ষণ ধার্য্য করে নির্বাচন কমিশন।

এদিকে আগামী ২০ সেপ্টেম্বর চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবার ঘোষনা আসার পর থেকে আবারও সরগরম হয়ে উঠেছে পৌরসভার প্রতিটি জনপদ। এখন অলিগলিতে শোভা পাচ্ছে প্রার্থীদের পোস্টার ব্যানার পেস্টুন।

অপরদিকে নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত রির্টানিং কর্মকর্তা ও চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ সামসুল তাবরীজ ইতোমধ্যে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করতে প্রার্থীদের জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন। ২ সেপ্টেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নির্বাচনী আচরণবিধি অনুসরণপুর্বক স্বাস্থ্যবিধি মেনে এখন থেকে প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালাতে পারবেন। মুলত রির্টানিং কর্মকর্তার সেই নির্দেশনার প্রেক্ষিতে এখন প্রার্থীরা মাঠে নেমেছে। চালাচ্ছেন উঠান বৈঠক, গনসংযোগসহ নানামুখী প্রচারণা। পাশাপাশি পৌরসভার অলিগলিতে চলছে প্রার্থীদের পক্ষে মাইকিং।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে চারজন, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে তিন ওয়ার্ডে ১৪ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৯ ওয়ার্ডে ৫৪ জনসহ তিন পদে সর্বমোট ৭২ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র দাখিল করেন।

তন্মধ্যে বাতিল হওয়া, আপীলে ফিরে পাওয়াসহ বর্তমানে মেয়র পদে ৪ জন, ৩টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর পদে ১৪ জন এবং ৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৫০ জনসহ সর্বমোট ৬৮ জন প্রার্থী ভোটে অছেন। ইতোমধ্যে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীকও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দি চারপ্রার্থী হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর চৌধুরী (নৌকা), নাগরিক কমিটি মনোনীত স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর জিয়াবুল হক (নারিকেল গাছ), জাতীয় পাটি (এরশাদ) মনোনীত প্রার্থী জাতীয় পাটির কেন্দ্রীয় নেতা মনোয়ার আলম (লাঙ্গল) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক ছাত্রনেতা এডভোকেট ফয়সাল সিদ্দিকী (কম্পিউটার)।

১১ এপ্রিল চকরিয়া পৌরসভার নির্বাচনী তফসিল ঘোষনার পর মেয়র পদে বিএনপি থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন সাবেক পৌর মেয়র ও চকরিয়া পৌরসভা বিএনপির সভাপতি আলহাজ নুরুল ইসলাম হায়দার। পরে অবশ্য তিনি হাইকমান্ডের নির্দেশে মনোনয়ন ফরম জমা দেননি। ফলে এ নির্বাচনে বিএনপি দলীয় কোন মেয়র প্রার্থী ভোটের মাঠে নেই।

সেই হিসেবে এবারের নির্বাচনে ভোটের লড়াই হবে মুলত আওয়ামী লীগ দলীয় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আলমগীর চৌধুরী বনাম স্বতন্ত্র প্রার্থী নারিকেল গাছ প্রতীকের প্রার্থী জিয়াবুল হকের সাথে।

উল্লেখ্য, আগামী ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত চকরিয়া পৌরসভার নির্বাচনে ৯টি ওয়ার্ডে ভোট দেবেন মোট ৪৮ হাজার ৭২৪ জন ভোটার। তন্মধ্যে পুরুষ ভোটার ২৫ হাজার ৮৯৯ জন এবং নারী ভোটার রয়েছে ২২ হাজার ৮২৫ জন।

এদিকে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্ধিতায় থাকা চার প্রার্থী হলেন-আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান মেয়র আলমগীর চৌধুরী, জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মনোহর আলম, স্বতন্ত্র দুই প্রার্থী হলেন ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর নারিকেল গাছ প্রতীকের প্রার্থী জিয়াবুল হক ও কম্পিউটার প্রতীকের প্রার্থী অ্যাডভোকেট ফয়সাল উদ্দিন সিদ্দিকী।

চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শামসুল তাবরীজ চকরিয়া নিউজকে বলেন, অনুষ্ঠিতব্য চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচন ‘সুষ্ঠু, অবাধ, গ্রহণযোগ্য পরিবেশে সম্পন্ন করতে প্রশাসনের তরপে যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি প্রচার-প্রচারণার সময় প্রার্থীরা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে কী-না তাও কঠোরভাবে নজরদারি করা হচ্ছে।’

পাঠকের মতামত: