ঢাকা,শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

আজিজনগর জেনারেল হাসপাতালে ডাক্তারের

ভুল চিকিৎসায় শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ লামায়

লামা সংবাদদাতা :: বান্দরবানের লামার আজিজনগর জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তারের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসায় ইয়াছিন আরাফাত নামের তিনবছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। ইয়াছিন চকরিয়া উপজেলার মাইজ কাকারা এলাকার বেলাল হোসেনে ছেলে।

বুধবার (১৮ আগস্ট) সকাল ৮টায় আজিজনগর জেনারেল হাসপাতাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে নেয়ার পথে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার বাবা।

জানা গেছে, শিশুটিকে হার্নিয়ার অস্ত্রোপাচারের জন্য চকরিয়ার মালুমঘাট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। পথে এক দালালের খপ্পরে পড়ে ২০ হাজার টাকা ‌‘কন্ট্রাক্টে’ অস্ত্রোপাচার করাবে বলে নিয়ে আসে লামার আজিজনগর জেনারেল হাসপাতালে। কথা মতো ‘কন্ট্রাক্টও’ হয় আজিজনগর জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তার জেমস ইটেনের সাথে। কোন অ্যানেসথিওলজিস্ট ছাড়াই ১৭ আগস্ট বিকাল ৫ টায় অস্ত্রোপাচার করেন ডাক্তার জেমস ইটেন। তাতেই শেষ নয়। যেখানে তিন বছরের শিশুটিকে অস্ত্রোপাচারের পর ক্লিন্ডামাইসিন ইনজেকশন ফর্ম ব্যবহার করাটা উচিত ছিল। কিন্তু চিকিৎসকরা তা না করে ক্লিন্ডামাইসিন ক্যাপসুল ব্যবহার করেছেন। যার কারণে এই ক্যাপসুল গলা শ্বাসণালিতে আটকে শিশুটির মৃত্যু হয়। বিষয়টি নিয়ে হাসপাতালের সামনে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে আজিজনগর পুলিশ ক্যাম্পের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

শিশুটির বাবা মো. বেলাল বলেন, ‘১৮ আগস্ট সকালে আমার ছেলেকে যখন ওই ক্যাপসুল খাওয়ানো হয় সাথে সাথে তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তার এবং নার্সরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। কিন্তু সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।

শিশুটির নানী বলেন, ‘সকালে সাড়ে ৭টায় আমার নাতিকে হাসপাতালের একজন নার্স এসে জোর করে নাক চেপে ধরে ওই ক্যাপসুলটি খাওয়ায় দেয়। ক্যাপসুলটি খাওয়ানোর পর তার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তিন বছরের বাচ্চাকে ক্যাপসুল খাওয়াতে আমি জীবনেও দেখিনি।’

লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন মাজেদ চৌধুরী বলেন, ‘এটা অবশ্যই ভুল চিকিৎসা। বাচ্চাটিকে ক্যাপসুল না দিয়ে ইনজেকশন ফর্ম ব্যবহার করতে পারতো। তাছাড়াও এ্যানেসথিওলজিস্ট ছাড়া কোনোভাবে হার্নিয়ার অস্ত্রোপাচার সম্ভব না। যদি করে থাকে সেটাও অপরাধ।

বান্দরবানের সিভিল সার্জন অংসুই প্রু মারমা বলেন, ‘এই হাসপাতালের নামে অসংখ্য অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। হাসপাতালটির কোনো অনুমোদন নেই। তবে জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছিল। কিন্তু যথেষ্ট অনিয়ম ধরা পড়াতে তাদেরকে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। শীঘ্রই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পাঠকের মতামত: