ইমাম খাইর ::
প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা কারণে তিনবার সিডিউল পরিবর্তনের পর অবশেষে আগামী ২১ ও ২২ জুন কক্সবাজারের ডিসি সাহেবের বলীখেলা বীর শ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। পরের তিনদিন ২৩, ২৪ ও ২৫ জুন চলবে মেলা।
ওয়ালটন গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায় ও কক্সবাজার জেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে ডিসি সাহেবের বলি খেলার এবারের ৬৪তম আসরের সবধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক অনুপ বড়ুয়া অপু বলেন, ‘ওয়ালটন গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায় কক্সবাজারের রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে ১৪ ও ১৫ জুন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল ডিসি সাহেবের বলি খেলা ও মেলা। সূচি পরিবর্তিত হয়ে ২১ ও ২২ জুন হবে বলি খেলা। বলি খেলা দুইদিন হলেও পরের তিনদিন মেলা চলবে। এবারের এই প্রতিযোগিতায় দেশি-বিদেশি স্বনামধন্য ও খ্যাতিমান বলিরা অংশ নিবেন। এবারই প্রথম এই আয়োজনে পৃষ্ঠপোষকতা করছে ওয়ালটন গ্রুপ। সে জন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই।’
আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব, কক্সবাজার পৌরসভার প্যানেল চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক হেলাল উদ্দিন কবির বলেন, প্রতিবছরের মতোই গ্রামীণ ঐতিহ্য সমুন্নত রেখে জুয়াখেলা মুক্ত দেশীয় আমেজে বলি খেলা ও বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হবে। মেলায় হস্ত, কারু ও লোকজ শিল্পের স্টল থাকবে। শিশু কিশোরদের বিনোদনের জন্য পর্যাপ্ত নাগরদোলা, ঢোলবাজনাসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা থাকবে।
ওয়ালটন ডিসি সাহেবের বলি খেলায় শতাধিক খ্যাতিমান ও স্বনামধন্য বলি অংশ নিবেন। প্রত্যেকটা ক্যাটাগোরির চ্যাম্পিয়ন, রানার্স-আপ ও অন্যান্যদের আর্থিক পুরস্কার দেওয়ার পাশাপাশি ওয়ালটন গ্রুপের পক্ষ থেকেও পুরস্কৃত করা হবে। এ ছাড়া বলি খেলায় অংশ নেওয়া প্রত্যেক বলিকে অংশগ্রহণ ফি দেওয়া হবে।
এবারের ডিসি সাহেবের বলি খেলা তিনটি ক্যাটাগোরিতে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ক্যাটাগরির চ্যাম্পিয়ন ১৫ হাজার ও রানার্স-আপ ১০ হাজার টাকা প্রাইজমানি পাবেন।
দ্বিতীয় ক্যাটাগরির চ্যাম্পিয়ন ১০ হাজার ও রানার্স-আপ ৭ হাজার টাকা প্রাইজমানি পাবেন।
তৃতীয় ক্যাটাগরির চ্যাম্পিয়ন ৭ হাজার ও রানার্স-আপ ৫ হাজার টাকা প্রাইজমানি পাবেন।
এ ছাড়া প্রত্যেকে ওয়ালটন গ্রুপের পক্ষ থেকে আকর্ষণীয় পুরস্কার পাবেন।
বৈশাখী মেলায় নাগরদোলা, হস্ত শিল্প, কুটির শিল্প, তাঁত শিল্প, বস্ত্র শিল্প, মৃৎ শিল্প ও দেশীয় পণ্যের বিপুল সমাহার থাকবে।
পৃষ্ঠপোষকতা করার বিষয়ে ওয়ালটন গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক (গেমস অ্যান্ড স্পোর্টস, মার্কেটিং) এফএম ইকবাল বিন আনোয়ার (ডন) বলেন, ‘কক্সবাজারের ডিসি সাহেবের বলি খেলা ঐতিহ্যবাহী একটি আয়োজন। যা ১৯৮৪ সাল থেকে হয়ে আসছে। ওয়ালটন গ্রুপ দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য রক্ষার পাশাপাশি সেগুলো তুলে ধরতেও কাজ করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় এমন ঐতিহ্যবাহী একটি আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়া। আশা করছি এবার দারুণ একটি আয়োজন আমরা উপহার দিতে পারব।’
উল্লেখ্য, ১৯৫৬ সালে এসডিও সাহেবের বলি খেলা নামে প্রথমবারের মতো কক্সবাজারে বলি খেলা শুরু হয়। এরপর ১৯৮৪ সালে কক্সবাজার মহাকুমা থেকে জেলায় উন্নীত হওয়ার পর এসডিও সাহেবের বলি খেলা পরিবর্তিত হয়ে ডিসি সাহেবের বলি খেলায় রূপান্তরিত হয়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে অপার লীলাভূমি, পর্যটন নগরী কক্সবাজারের দীর্ঘ সময়কার ইতিহাস, ঐতিহ্য ও বর্ণিল সংস্কৃতিতে নতুন এক অধ্যায় এই আয়োজন।
পাঠকের মতামত: