ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৮ জুন ২০২৪

রোহিঙ্গাদের শিক্ষার দায়ও বাংলাদেশের কাঁধে চাপাতে চায় এইচআরডাব্লিউ

অনলাইন ডেস্ক ::

রোহিঙ্গাদের পড়ালেখার দায়িত্বও বাংলাদেশের কাঁধে চাপানোর চেষ্টা করছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাব্লিউ)। নিউ ইয়র্কভিত্তিক এ বেসরকারি সংস্থা গতকাল এক বিবৃতিতে রোহিঙ্গা শিশুদের আনুষ্ঠানিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

রোহিঙ্গা শিশুরা বাংলাদেশি সেজে কক্সবাজারের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করছে—এমন অভিযোগের পর সরকার এ বছরের শুরুতে রোহিঙ্গা শিবিরের আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি নয়, এমন শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে বেশ কিছু রোহিঙ্গা শিক্ষার্থী সে সময় ধরা পড়ে।

এইচআরডাব্লিউ বাংলাদেশ সরকারের ওই সিদ্ধান্তে উষ্মা প্রকাশ করে অভিযোগ করেছে, বাংলাদেশ সরকার বেশ কিছু রোহিঙ্গা শরণার্থী শিক্ষার্থীকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কার করেছে।

এইচআরডাব্লিউর শিশু অধিকারবিষয়ক জ্যেষ্ঠ গবেষক বিল ভ্যান অ্যাসভেল্ড বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশুদের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করার বদলে তাদের চিহ্নিত করা ও বহিষ্কার করার ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের নীতি বিভ্রান্তিকর, দুঃখজনক ও বেআইনি।’

তিনি বলেন, ‘শিক্ষা একটি মৌলিক মানবাধিকার। মিথ্যা পরিচয়ে উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়তে বাধ্য হওয়া শিশুদের বহিষ্কার কোনো সমাধান নয়। বরং তারা শিক্ষার সুযোগ পাওয়ার অধিকার রাখে এবং এ অধিকার চর্চায় তাদের সুযোগ দেওয়া উচিত।’

এইচআরডাব্লিউ তাদের বিবৃতিতে স্বীকার করেছে, বেশ কিছু রোহিঙ্গা শিশু টাকার বিনিময়ে ভুয়া বাংলাদেশি জন্মসনদ নিয়ে সেখানকার স্কুলে পড়ালেখা করছিল। তাদের পরিচয় ধরা পড়ার পর তারা সেই স্কুলগুলোতে আর পড়তে পারছে না।

সরকারি সূত্রগুলো বলছে, রোহিঙ্গাদের জন্য আশ্রয় শিবিরগুলোতে পরিচালিত স্কুলগুলোতে বাংলায় পাঠদান বা বাংলায় পড়ালেখা করানোর ওপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থায় রোহিঙ্গা শিশুদের বাংলা শেখানোর কথা বললেও বাংলাদেশ সরকার তাতে রাজি হয়। এ ক্ষেত্রে সরকারের যুক্তি, বাংলা শিখলে তারা এ দেশের সঙ্গে আরো ওতপ্রোতভাবে মিশে যাবে।

গত ফেব্রুয়ারিতে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর মিয়ানমারবিষয়ক বিশেষ দূত বব রে ঢাকা সফরের সময় এক অনুষ্ঠানে রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষার সুযোগের বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছিল। কানাডার বিশেষ দূত রোহিঙ্গাদের জন্য শিক্ষা ও অন্যান্য সুযোগ সৃষ্টি এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার ওপর জোর দিয়েছিলেন। তবে ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহিরয়ার আলম সতর্ক করে বলেন, মিয়ানমারে স্বাস্থ্য ও শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সদস্যরা এ দেশে আশ্রয় নেওয়ার পর সেই সেবাগুলো পাচ্ছে। এখন শিক্ষার বিষয়ে আরো প্রকল্প নিলে তা মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের এ দেশে আরো আসার ক্ষেত্রে অনুঘটক হিসেবে কাজ করতে পারে।

পাঠকের মতামত: