ঢাকা,শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪

দেশের প্রথম মেরিন এ্যাকুরিয়াম হচ্ছে কক্সবাজারে

sssssssssআতিকুর রহমান মানিক, কক্সবাজার :::

কক্সবাজারের সমুদ্রপাড়ে দেশের প্রথমবারের মতো দৃষ্টিনন্দন মেরিন এ্যাকুরিয়াম নির্মিত হতে যাচ্ছে। কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের পেঁচারদ্বীপ পয়েন্টে বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট ক্যাম্পাসে এই এ্যাকুরিয়ামটি স্থাপন করা হবে। উন্নত বিশ্বের আদলে ব্যয়বহুল এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে কক্সবাজার তথা দেশের পর্যটন শিল্প নতুন মাত্রা পাবে আশা করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। ইতোমধ্যে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু করা হয়েছে। এ জন্য দেশের বাইরে এ ধরনের আকর্ষণীয় এ্যাকুরিয়াম পরিদর্শনে যাবে একটি প্রতিনিধি দল। ১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয়ের সমীক্ষা প্রকল্পে শিক্ষা সফরেই ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এ্যাকুরিয়াম নির্মাণে কত টাকা ব্যয় হতে পারে সে হিসাব এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। বিভিন্ন দেশের এ্যাকুরিয়ামের উপকরণ ও শৈলী পর্যবেক্ষণের পরই টাকার অঙ্ক নির্ধারণ করা হবে।

সম্প্রতি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ্যাকুরিয়াম নির্মাণের লক্ষ্যে নেয়া সমীক্ষা প্রকল্প সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়। মেরিন ড্রাইভ রোডের পার্শ্বে সমুদ্রের ১০০ গজের মধ্যে অবস্হিত বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট ক্যাম্পাসে মেরিন এ্যাকুরিয়াম প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত স্পেমা (স্টাডি প্রজেক্ট ফর এস্টাবলিশমেন্ট অব মেরিন এ্যাকুরিয়াম) প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে এ বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব প্রকল্প পরিচালক সৈয়দ তওহিদুর রহমান সংসদীয় কমিটিকে জানিয়েছেন , মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে ইওআই (এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট) নোটিস পত্রিকায় প্রচার করা হয়েছে। ২ ফেব্রুয়ারি ছিল আবেদনপত্র জমা দেয়ার শেষ সময়। তিনি জানান , প্রকল্পটির অনুকূলে ৬৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়ার প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় পরামর্শক ফার্ম নিয়োগের কার্যক্রম চলমান আছে।

জানা গেছে, প্রথমবারের মতো এ ধরনের এ্যাকুরিয়াম দেশে হতে যাচ্ছে। তাই বিদেশে যে ধরনের হয়ে থাকে , সে রকমই করা হবে। সুউচ্চ ওভাল শেপের গ্লাসের এ্যাকুরিয়ামের মাঝখানে থাকবে প্রবেশ পথ। দীর্ঘ পথ যেতে ফ্ল্যাট এস্কেলেটরও ব্যবহার করা হতে পারে। গ্লাসের ভেতরে থাকা সমুদ্র তলদেশের দৃশ্যকে স্পষ্ট করতে রুমটিতে নীলাভ আলো রাখা হবে। সমুদ্রের নিচে যেভাবে সুদৃশ্য নানা রঙের শৈবাল ও প্রবাল থাকে সেরকম পরিবেশ তৈরি করা হবে। রাখা হবে বিরল প্রজাতির কচ্ছপ, বিভিন্ন আকারের সামুদ্রিক মাছ। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের এ ধরনের এ্যাকুরিয়ামে অক্টোপাস, হাঙর , ডলফিন, শার্কও রাখা হয়। তবে সে ধরনের ব্যয়বহুল সামুদ্রিক প্রাণী থাকবে কী না সেটাও শিক্ষা সফরের পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এ্যাকুরিয়ামের ভেতরে প্রবেশে আগ্রহীদের জন্য থাকবে ডুবুরির পোশাক। থাকবে সমুদ্রের তলদেশ ভিত্তিক থ্রিডি মুভি। এছাড়া পর্যটকদের ছবি তোলার জন্য শার্ক , কচ্ছপ বা বিভিন্ন মাছের আকৃতির ম্যুরাল রাখা হবে।

সূত্র মতে , কয়েক ধরনের পেশাগত উচ্চ যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তি উপদেষ্টা সংবলিত একটি দেশী পরামর্শক ফার্মকেই নিয়োগ দেয়া হবে। এর মাধ্যমে মেরিন এ্যাকুরিয়াম নির্মাণ সংক্রান্ত সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদন তৈরি করা হবে। একটি প্রতিনিধি দল বিদেশে শিক্ষা সফরে গিয়ে সেসব দেশের মেরিন এ্যাকুরিয়াম পরিদর্শন করবে। এরপরই মেরিন এ্যাকুরিয়াম নির্মাণ সংক্রান্ত প্রকল্পের প্রাথমিক নকশা ও প্রাক্কলন তৈরিসহ একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি ) তৈরি করা হবে। জানা গেছে, ১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পে শিক্ষা সফরে ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, সম্ভাব্যতা পরীক্ষায় ২৫ লাখ টাকা, স্টেশনারি ৫ লাখ টাকা, সেমিনার ও মিটিং ৫ লাখ টাকা এবং অন্যান্য খাতে আরও ৫ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। উন্নত বিশ্বের আদলে কক্সবাজারেও এ প্রকল্পের আওতায় মেরিন এ্যাকুরিয়াম স্হাপিত হলে দেশী-বিদেশী পর্যটক আকর্ষণে নতুন মাত্রা যোগ হয়ে দেশের পর্যটন অর্থনীতি গতিশীল হবে বলে আাশা করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।

পাঠকের মতামত: