বিনোদন ডেস্ক :;
মডেল ও অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপি বাংলাদেশের মিডিয়া জগতের এক আলোচিত নাম। ২০১৫ ক্রিকেট বিশ্বকাপের আগে ক্রিকেটার রুবেল হোসেনের সঙ্গে স্ক্যান্ডালে জড়িয়েই মূলত সেই আলোচনা। যা নিয়ে কম জল ঘোলা হয়নি। হ্যাপি দাবি করেছিলেন, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে রুবেল তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। এমনকি রুবেলকে পেতে আদালতের দারস্থও হয়েছিলেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত রুবেল-হ্যাপির সম্পর্ক আর টিকেনি। এরপর রুবেলের বিয়ের খবর জানার পর নিজের ‘লাইফস্ট্যাইল’ই পাল্টে ফেলেন এই অভিনেত্রী।
এক সময় রুপালি পর্দা কাঁপানো হ্যাপির আগের জীবনের সঙ্গে এখনকার জীবনের কোনো মিল নেই। এক কথায় সম্পূর্ণ বিপরীত। বিয়ে করে ইসলামি বিধান মেনেই এখন পুরোদস্তুর জীবনযাপন করছেন। ধর্মীয় জ্ঞান লাভের জন্য এখন পড়াশুনা করছেন মাদ্রাসায়। বিদায় জানিয়েছেন সিনেমাকে। তাবলীগ জামায়াতে যোগ দেয়ার সংকল্প করেছেন। চলাফেরা করেন বোরকা পরে। ফেসবুক থেকে মুছে দিয়েছেন সব ছবি। মিডিয়ার আলোচিত হ্যাপি এখন নাম পরিবর্তন করে রেখেছেন ‘আমাতুল্লাহ’ (আল্লাহর দাসী)। হ্যাপির সেই বদলে যাওয়া জীবন নিয়ে একটি বই লিখেছেন সাদেকা সুলতানা সাকী এবং স্বামী আবদুল্লাহ আল ফারুক। বইটিতে তার বদলে যাওয়া জীবনের নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে।
হ্যাপির মতে, চলচ্চিত্র মেয়েদেরকে শুধু পণ্য হিসেবেই দেখে। এ কারণে সেখানে তাদেরকে শুধু পণ্য হিসেবেই দেখানো হয়। ‘হ্যাপি থেকে আমাতুল্লাহ’ নামক বইটির লেখক সাদেকা সুলতানা সাকীর এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক এই রুপালি পর্দা কাঁপানো নায়িকা এমনই উত্তর দেন।
সাকীর প্রশ্নটা ছিল এরকম – চলচ্চিত্র জগতে নারীর অবস্থান কী? একজন অভিনেত্রী কি সিনেমাজগতে স্রেফ পণ্য হিসেবে প্রদর্শিত হয়, না কি তাকে তার প্রাপ্য সম্মান দেওয়া হয়?
জবাবে বইটিতে হ্যাপি বলেছেন, মডেল মানেই পণ্য। কারণ, একজন মডেল যখন কোনো বিজ্ঞাপন করে তখন সে কী করে? সে তার চেহারা, অঙ্গ ও অভিনয় দিয়ে মানুষকে সেই বস্তুর দিকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে। এর বিনিময়ে সে টাকা পায়। আমি আমার জীবনে এটাই দেখেছি যে, একজন নায়িকা যখন সিনেমায় অভিনয় করে তখন সে কম হোক, বেশি হোক, অভিনয়ের পারিশ্রমিক পায়। তাকে সেই পারিশ্রমিক দেওয়া হয় সেটা প্রযোজক তুলে নেন সিনেমার টিকিট বিক্রয়ের মাধ্যমে। সিনেমা হলে এসে দর্শকরা তার শরীর দেখার বিনিময়ে টাকা দিচ্ছে। তা হলে আপনি বলুন, চলচ্চিত্র জগতে নারীকে কীভাবে প্রদর্শন করা হচ্ছে? পণ্য হিসেবেই প্রদর্শন করা হচ্ছে। এর বাইরে কিছু নয়। যে মেয়ে নিজেকে যত সুন্দর পণ্য হিসেবে প্রদর্শন করতে পারবে সে তত বেশি টাকা পাবে।
তিনি আরও বলেন, আমি চলচ্চিত্রকে সবচেয়ে জঘন্য মনে করি এ কারণে যে, তারা মেয়েকে শুধু পণ্য হিসেবেই দেখে। বিস্কুট, সাবান থেকে শুরু করে আমাদের জীবনঘনিষ্ঠ যত বস্তু আছে, সেগুলোর বিজ্ঞাপনে নারীকে শুধু পণ্য হিসেবেই দেখানো হয়। আজ অবস্থা এমন হযেছে যে, কোম্পানিগুলো মনে করে তাদের পণ্য এই পণ্য ছাড়া চলবে না। এই অভিনয়ের বিনিময়ে তাকে আমাদের সমাজ যে সম্মান দিচ্ছে বলে দেখেন, এটা আসলে কখনো সম্মান নয়। এটা এক ধরনের বিনোদনমূলক কথিত সম্মান। এটাকে আমি ‘কথিত সম্মান’-ই বলব, এটা কখনো প্রকৃত সম্মান নয়।
পাঠকের মতামত: