ঢাকা,মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪

পেকুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স: সুইপার ও এমএলএসএস যখন সার্জারী চিকিৎসক!

pek hasমুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া :::

১৬ এপ্রিল, সময় দুপুর সাড়ে ১২ টা। দৃশ্যপট পেকুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স (সরকারী হাসপাতাল)। হাসপটাতালের জরুরী বিভাগে কোন চিকিৎসক নাই। নেই উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারও! অবশ্য এসময় বাইরে ঔষধ কোম্পানীর প্রতিনিধির সাথে খোশগল্পেমত্ত অবস্থায় দেখা গেছে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডা: মো. শামীমকে। হাসপাতালের জরুরী বিভাগে কোন চিকিৎসক না থাকলেও কি! এসময় দেখা গেছে, হাসপাতালের জরুরী বিভাগের বেডে এক শিশুকে খতনার অপারেশন করাচ্ছেন হাসপাতালের সুইপার মো. ইউনুচ ও এমএলএসএস জসিম উদ্দিন! এসময় ইউনুচ ও জসিম উদ্দিনের কাছ থেকে জানতে চাইলে তারা জানান, খতনার কাজে তাদের অভিজ্ঞতা রয়েছে বিধায় করছেন। তাদের এ বিষয়ে কোন প্রশিক্ষন আছে কিনা জানতে চাইলে তারা কোন ধরনের সদুত্তর দিতে পারেনি।

 ওই শিশুর অভিভাবক জানান, তার শিশুকে পেকুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আজ রোববার সকালে খতনা করার জন্য নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালের সুইপার ইউনুচ ও এমএলএসএস জসিম উদ্দিন নিজেরা খতনার অপারেশন করবেন জানিয়ে তার শিশুকে জরুরী বিভাগের বেডে শ্ইুয়ে দেন। এ জন্য তারা কিছু টাকা তার কাছ থেকে নিয়েছেন। এভাবে প্রতিনিয়তই দূর্ঘটনায় গুরুতর আহত রোগী ও অন্যান্য রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন খোদ হাসপাতালের সুইপার ইউনুচ ও এমএলএসএস জসিম উদ্দিন!

 এ প্রসঙ্গে জানতে পেকুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচও ডা: মো. মুজিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তার হাসপাতালের সুইপার ইউনুচ ও এমএলএসএস জসিম উদ্দিন খতনার কাজে বেশ অভিজ্ঞ। তাই তারা ছোটখাট কিছু অপারেশন করে থাকেন। এ বিষয়ে তাদের কোন ডিগ্রি বা প্রশিক্ষণ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, হাসপাতালে ডাক্তার সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। সম্প্রতি হাসপাতাল থেকে ৮ জন ডাক্তার বদলী হয়ে অন্যত্র চলে গেছেন।

 অন্যদিকে পেকুয়ার সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, নানান অনিয়ম ও অবব্যস্থাপনার কারণে পেকুয়া সরকারী হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। এ হাসপাতাল থেকে রোগীরা কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছেনা রোগীরা। দুপুর ১২ টার পর হাসপাতালে কোন ডাক্তার থাকেনা। সকাল ১০টার পরে বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানীর বিক্রিয় প্রতিনিধিরা ডাক্তাদের চেম্বারে বসে খোশগল্পে মত্ত থাকে। আর হাসপাতালে রোগীর জন্য বরাদ্দের খাবার নিয়ে চলছে হরিলুট। রোগীদের জন্য সরকারীভাবে বরাদ্দের খাবারও লুটেপুটে খাচ্ছে হাসপাতাল কেনদ্রীক একটি সিন্ডিকেট। রোগীদের খাবার দীর্ঘদিন ধরে বাইরেও বিক্রি করে আসছে। এছাড়াও আরো নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির কারণে পেকুয়া সরকারী হাসপাতাল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন রোগীরা।

পাঠকের মতামত: