কক্সবাজারের পর্যটন ও উপকূলীয় অর্থনীতিতে যোগ হচ্ছে নতুন মাত্রা। উপকূল রক্ষা, সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্হার উন্নয়ন ও দেশী-বিদেশী পর্যটক আকর্ষন করতে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামের মীরসরাই পর্যন্ত নির্মিত হচ্ছে মেরিন ড্রাইভ রোড। ইতিমধ্যে মেরিন ড্রাইভের প্রাথমিক অংশ হিসেবে মীরসরাই উপজেলার অর্থনৈতিক জোন এলাকায় টু লেন সড়কের ৮ কিলোমিটারের নির্মাণ কাজও এগিয়ে গেছে। আর এই সড়ক ফোর লেনে রূপান্তরিত হয়ে চট্টগ্রামের সাথে যোগ হয়ে কক্সবাজার আসবে, যা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। পর্যায়ক্রমে কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সম্প্রসারন করা হবে এই মেরিন ড্রাইভ রোড। মীরসরাই টু চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের উপকূল রক্ষায় দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে চট্টগ্রামের মীরসরাই থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত উপকূলীয় এলাকায় মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণের প্রক্রিয়ার অগ্রগতি অনেকটাই এগিয়ে গেছে বলে যোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সোনাদিয়া ও চট্টগ্রাম বন্দরে যাতায়াত, পর্যটন শিল্পের বিকাশ, কক্সবাজার উপকূলে উৎপাদিত লবন, চিংড়ি, কাঁকড়া, মৎস্য সম্পদ, পান ও অন্যান্য পন্য পরিবহন সহজতর হবে। এছাড়াও মহেশখালী ও পেকুয়ায় নির্মিতব্য
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প ও মীরসরাই উপজেলার উপকূলীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রকল্পাধীন নানান বিষয়ের দ্রুত অগ্রগতি হবে। মহেশখালী ও পেকুয়ায় নির্মিতব্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সেবা নিশ্চিত হলে টেকনাফ-কক্সবাজার-চকরিয়া উপকূলের বিস্তীর্ণ এলাকায় উৎপাদিত লবন ও মৎস্যজাতপন্য প্রক্রিয়াজাতকরনের জন্য এখানে কলকারখানা ও অর্থনৈতিক জোন গড়ে উঠার সম্ভাবনা রয়েছে। একইসঙ্গে নিশ্চিত হবে উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকা ও অবকাঠামোর নিরাপত্তা।
কক্সবাজার সড়ক বিভাগ সূত্র জানায়, এই মেরিন ড্রাইভ সড়ক চট্টগ্রামের মীরসরাই মুহুরী সমুদ্র উপকূল তথা মীরসরাইয়ের মুহুরী প্রকল্প ফটক থেকে চট্টগ্রাম নেভাল একাডেমি-প্রস্তাবিত নতুন টানেল-
চাতরী-চৌমুহনী, বাঁশখালী-পেকুয়া-
চৌফলদণ্ডী-খুরুশকূল সমুদ্র উপকূল হয়ে কক্সবাজার শহরের কলাতলী মেরিন ড্রাইভ সড়কের সঙ্গে যুক্ত হবে। ২৩০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের চার লেনের এ মেরিন ড্রাইভ সড়কের উচ্চতা হবে ১৫ ফুট। তার মধ্যে চট্টগ্রাম অংশে ৮০ কিলোমিটার এবং কক্সবাজার অংশে পড়বে ১৫০ কিলোমিটার। আর এটি কক্সবাজার থেকে টেকনাফের সাবরাং পর্যন্ত নির্মিত ৮০ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভ সড়কের সঙ্গে যুক্ত হবে। এর মধ্যে কুমিরা-
ভাটিয়ারী এলাকায় প্রায় ৯ কিলোমিটার স্থানে বেড়িবাঁধ না থাকায় কিছুটা বেগ পেতে হবে। এখানে নতুন করে বেড়িবাঁধ নির্মাণসাপেক্ষে কাজ এগোবে। প্রকল্পটির সম্ভাব্য ব্যয় ২৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের। উপরোক্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ম্যানগ্রোভ বন সম্বলিত উপকূলীয় এলাকার নয়নাভিরাম প্রকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করতে পর্যটকরা আগ্রহী হবেন। উপরোক্ত প্রকল্পের ব্যপারে কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রানা প্রিয় বড়ুয়া বলেন, মীরসরাই থেকে চট্টগ্রামের নেভাল এলাকা পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার এক ধাপে, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত প্রায় ২০০ কিলোমিটার পরবর্তী ধাপে এবং কক্সবাজার থেকে টেকনাফ আরেক ধাপে করার প্রস্তাবনা রয়েছে।
পাঠকের মতামত: