সুস্বাস্থ্যের জন্য ফলমূল ও সবজির উপকারিতা আমরা সবাই জানি। তবে অস্ট্রেলিয়ার এক গবেষণায় উঠে এসেছে এর আরো এক গুণের কথা। গবেষণাটি জানাচ্ছে, ফল ও সবজি খেলে আপনি হয়ে উঠবেন আগের চেয়ে আরো চনমনে ও সুখী। খবর লাইভ সায়েন্স।
গবেষকরা দেখেছেন, একদমই ফল কিংবা সবজি খান না, এমন লোক তাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় আট ভাগ ফল ও সবজি যুক্ত করে অধিকতর সুখ অর্জনে সক্ষম হয়েছেন। বেকার লোক চাকরি পেলে যেমন হয়, এ সুখ ঠিক তেমনই। আর তারা এ সন্তোষ অর্জন করেছেন খাদ্যতালিকায় পরিবর্তন আনার দুই বছরের মধ্যেই। আগের বিভিন্ন গবেষণায় ফল ও সবজি খেলে শারীরিক উন্নতির কথা বলা হলেও, মূলত তা ঘটে দীর্ঘ সময়ের পর।
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গার্হস্থ্য অর্থনীতির গবেষণা সহকর্মী এবং এ গবেষণাকর্মের সহরচয়িতা রেডজো মুজসিস এক বিবৃতিতে বলেন, ফল ও সবজি খেলে তা শারীরিক উন্নতির চেয়ে তুলনামূলকভাবে অনেক দ্রুত আমাদের সুখকে উত্সাহিত করে।
গবেষণায় অস্ট্রেলিয়ায় ১২ হাজারেরও অধিক মানুষকে দুই বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করা হয়। তাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, স্বাভাবিকভাবে তারা ফল ও সবজি খান কিনা এবং খেলেও তার পরিমাণ কী রকম। গবেষকরা আরো জিজ্ঞেস করেন, তারা তাদের জীবন নিয়ে কী মাত্রায় সুখী। গবেষকরা তার পর এসব মানুষের খাদ্যাভ্যাস, বিশেষ করে তারা খাদ্যতালিকায় ফল ও সবজির পরিমাণ বাড়িয়েছেন কিনা এবং জীবন নিয়ে তাদের সন্তুষ্টি বিষয়ে নজর রাখেন।
ফলাফলে দেখা যায়, গবেষণাকালীন যারা প্রতিদিন বেশি করে ফল ও সবজি খেয়েছেন, শেষ পর্যন্ত তাদের জীবনে সন্তুষ্টির মাত্রা বেড়েছে।
গবেষকরা আরো দেখেছেন, ফল ও সবজির সঙ্গে আনন্দ বৃদ্ধির এ সম্পর্ক আয়ের তারতম্য এবং বিভিন্ন পরিবেশে বাসকারী মানুষের ক্ষেত্রেও অপরিবর্তিত থাকে। তবে কী কারণে ফল ও সবজি মানুষের মধ্যে স্ফূর্তি বৃদ্ধি করে, সে বিষয়ে গবেষকরা নিশ্চিত নন। যদিও এর আগে গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু কিছু ফল ও সবজি যেমন— গাজরে ক্যারোটিনয়েডস নামে এক ধরনের রঞ্জক বেশি পরিমাণ থাকে, যা মানুষের আশাবাদী মনোভাবের সঙ্গে যুক্ত।
গবেষণায় আরো দেখা গেছে, ফল ও সবজি খাওয়ার মধ্য দিয়ে বি১২ নামের একটি ভিটামিন অধিক গ্রহণ করা হয়। আর বি১২ মস্তিষ্কে সেরেটোনিন নামে একটি নিউরোট্রান্সমিটারকে উজ্জীবিত করে, যা মানুষের মেজাজ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।
মুজসিস মনে করেন, নতুন এ গবেষণা রোগীদের আরো বেশি করে ফল ও সবজি খেতে পরামর্শদানে ডাক্তাদের সহায়তা করবে, যা মানুষকে উত্সাহিত করবে আরো স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণে। আগস্টে আমেরিকান জার্নাল অব পাবলিক হেলথে গবেষণাটি প্রকাশ হবে।
পাঠকের মতামত: