মৌসুমের শুরুতে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হাটবাজারে ব্যাাপকহারে বিক্রি হচ্ছে রসালো ফল টুকটুকে লাল তরমুজ। ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় ফলের দোকানে পসরা সাজিয়ে কিংবা ভ্যান গাড়িতে
করে বিক্রি করা হচ্ছে আমজনতার পছন্দের এই ফল। একমাস আগে দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া থেকে আসা মৌসুমের নতুন ফল তরমুজ প্রথমে কেজি ধরে বিক্রি হলেও বর্তমানে দেশের উত্তরাঞ্চল থেকে তরমুজ এসে চকরিয়া উপজেলার হাটবাজার গুলোতে ভরে গেছে। ফলে তরমুজের ব্যাপক মজুদ বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে বিক্রি করা হচ্ছে পিস হিসেবে। একটি বড় সাইজের তরমুজের দাম পড়ছে ৫০০ টাকার ওপরে। মাঝারি সাইজের একটি তরমুজ ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা এবং ছোট সাইজের একটি তরমুজ ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা দাম বিক্রি হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চকরিয়া উপজেলা সদরের বাণিজ্যিক জনপদ চিরিঙ্গা সোসাইটি এলাকার ফলের দোকনাগুলোতে পসরা সাজিয়ে রাখা হয়েছে রসালো ফল তরমুজ। ফুটপাতে তরমুজের মোকাম নিয়ে বসেছে শতাধিক ভাসমান দোকানী। ক্রেতাসাধারণকে আকৃষ্ট করতে নমুনা হিসেবে কেটে রাখা হয়েছে একটি টুকটুকে লাল তরমুজ।
প্রতিটি তরমুজের ওজন ৪ থেকে ৭-৮ কেজি পর্যন্ত। প্রতি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে প্রকারভেদ দামে। মাঝারি সাইজের একটি তরমুজের দাম পড়ে যাচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, বড় সাইজের একটি তরমুজ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা এবং ছোট সাইজের একটি তরমুজ ১০০ থেকে ১৫০ টাকা।
বিক্রেতারা বলছেন, নতুন ফল হিসেবে দাম বেশি হওয়ায় প্রথমদিকে একটু ক্রেতা কম ছিল। তবে এখন রমজান মাসের ইফতারী আর গ্রীস্মের গরম শুরু হওয়ায় ভালো বেচাকেনা বেড়েছে।
চকরিয়া পৌরশহরের ইউসিবি ব্যাংকের সিড়ির নীচের ফল বিক্রেতা সাইফুল ইসলাম বলেন, মৌসুমের শুরুতে একমাস আগে ‘বাজারে নতুন তরমুজ উঠেছে। সেসময় দাম একটু বেশি হলেও এখন তুলনামূলক কম। রমজানের শুরুতে বাজারে ভরপুর তরমুজ পাওয়া যাচ্ছে। বিক্রিও ভালো হচ্ছে।
পাশের ফলের দোকানদার নুরুল ইসলাম বলেন, এখন প্রতিদিন বাজারে প্রচুর তরমুজ আসছে। পাশাপাশি দাম কমে যাওয়ায় এবং রমজান মাস উপলক্ষে এখন বিক্রি হচ্ছে বেশি। তিনি বলেন, আমরা চারজন মিলে তরমুজের দোকানটি দিয়েছি। প্রতিদিন আমরা ছোট-বড় মিলিয়ে ৩০০ থেকে ৪০০ পিস তরমুজ বিক্রি করছি। এতে আমাদের মুনাফাও হচ্ছে বেশ ভালো।
উপজেলা কৃষি অফিসার এসএম নাছিম হোসেন বলেন, রসালো ফল হিসেবে প্রতিবছরই ব্যাপক চাহিদা থাকে তরমুজের। বিশেষ করে রমজান মাসে ইফাতারিতে এর চাহিদা থাকে তুঙ্গে। মৌসুমের শুরুতে ও শেষের দিকে দাম বেশি থাকে। তখন সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে দাম চলে যায়। তবে ভরপুর মৌসুমে দাম কমতে দেখা যায়। তখন বেচাকেনাও বাড়ে প্রতিদিন।
চকরিয়া পৌর বাসটার্মিনালের আড়তদার পৌর কাউন্সিলর এম নুরুস শফি বলেন, বেশ কয়েকবছর ধরে কক্সবাজার জেলার মধ্যে দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় আগাম তরমুজ চাষ হচ্ছে। সেখানকার বেশিরভাগ তরমুজ আসে চকরিয়া উপজেলার হাটবাজারে। এছাড়াও পুরো মৌসুমে পটুয়াখালি, সিলেট, যশোর, খুলনা, নোয়াখালি, ভোলা এলাকা থেকে প্রচুর তরমুজ সরবরাহ করা হয় চকরিয়ার হাটবাজারে।
চকরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার এসএম নাছিম হোসেন বলেন, কয়েকবছর ধরে চকরিয়া উপজেলার মাতামুহুরী নদীর তীর এলাকায় বালুচুরে কিছু পরিমাণ জমিতে তরমুজ আবাদ করা হচ্ছে। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি মাতামুহুরী নদীর তীর এলাকার পাশাপাশি উর্বর শ্রেণীর বালু জমিতে লাভজনক ফসল তরমুজের চাষ ব্যাপকহারে বাড়াতে। কারণ আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে চকরিয়া উপজেলার উর্বর শ্রেনীর এসব বালু জমিতে প্রচুর পরিমাণ তরমুজ আবাদের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। ##
পাঠকের মতামত: