ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

শেখ কামাল এর জন্মবার্ষিকীতে চকরিয়া উপজেলা প্রশাসনের শ্রদ্ধাঞ্জলীঃ চারা বিতরণ

এম জিয়াবুল হক, চকরিয়া :: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল এর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসুচির মধ্যদিয়ে পালিত হয়েছে। শুক্রবার ৫ আগস্ট সকালে চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়েছে।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজার ১ (চকরিয়া পেকুয়া) আসনের সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব জাফর আলম।
প্রধান অতিথি সাংসদ আলহাজ জাফর আলম বলেন, ১৯৪৯ সালের এই দিনে তিনি তদানীন্তন গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের কালো রাত্রিতে মাত্র ২৬ বছর বয়সে জাতির পিতার হত্যাকারী মানবতার ঘৃণ্য শত্রুদের নির্মম-নিষ্ঠুর বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়ে শাহাদাত বরণ করেন।

শহীদ শেখ কামাল বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একজন নিবেদিত, সংগ্রামী, আদর্শবাদী কর্মী হিসেবে ’৬৯-র গণঅভ্যুত্থান ও ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে পাকহানাদার বাহিনী কর্তৃক বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্মৃতি-বিজড়িত ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কস্থ বাসভবন আক্রান্ত হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে বাড়ি থেকে বের হয়ে তিনি সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ওয়ার কোর্সে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে মুক্তিবাহিনীতে কমিশনন্ড লাভ করেন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল ওসমানির এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতার পর শেখ কামাল সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি নিয়ে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করেন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, বহুমাত্রিক অনন্য সৃষ্টিশীল প্রতিভার অধিকারী তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক শহীদ শেখ কামাল শাহীন স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে বি.এ. অনার্স পাস করেন। তিনি বাংলাদেশের শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি অঙ্গনের অন্যতম উৎসমুখ ‘ছায়ানট’-এর সেতার বাদন বিভাগের ছাত্র ছিলেন। স্বাধীনতা উত্তর যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠন ও পুনর্বাসন কর্মসূচির পাশাপাশি সমাজের পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর ভাগ্য উন্নয়নে সমাজ চেতনায় উদ্বুদ্ধকরণে মঞ্চ নাটক আন্দোলনের ক্ষেত্রে তিনি প্রথমসারির সংগঠক ছিলেন। বন্ধু শিল্পীদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন ‘‘স্পন্দন শিল্পী গোষ্ঠী’’। শেখ কামাল ছিলেন ঢাকা থিয়েটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। অভিনয় শিল্পী হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যাঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। শৈশব থেকে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, বাস্কেটবলসহ বিভিন্ন খেলাধুলায় প্রচণ্ড উৎসাহ ছিল তাঁর। তিনি উপমহাদেশের অন্যতম সেরা ক্রীড়া সংগঠন, বাংলাদেশে আধুনিক ফুটবলের প্রবর্তক আবাহনী ক্রীড়াচক্রের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।

সাংসদ জাফর আলম বলেন, শহীদ শেখ কামাল আমাদের দেশে নান্দনিক ফুটবল ও ক্রিকেটসহ অন্যান্য দেশীয় খেলার মানোন্নয়নে অক্লান্ত শ্রম দিয়ে অপরিসীম অবদান রেখেছিলেন। নতুন নতুন খেলোয়াড় সৃষ্টির লক্ষে প্রশিক্ষণ শিবির গড়ে তুলতেন এবং তাদের সাথে নিয়মিত অনুশীলন করতেন। ১৯৭৫ সালের ১৪ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ব্লু’ খ্যাতিপ্রাপ্ত দেশবরেণ্য অ্যাথলেট সুলতানা খুকুর সাথে তাঁর বিয়ে হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শাহাদাত বরণের সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এম. এ শেষ পর্বের পরীক্ষার্থী ছিলেন এবং বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সংগঠন জাতীয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন।
অনুষ্ঠানে চকরিয়া উপজেলা মহিলা বিষযক কর্মকর্তা, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আবদুল মতিন, চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিক উদ্দিন চৌধুরী ও প্রশাসনের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। পরে উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর কতৃক সংগঠন ভিত্তিক নারী পুরুষের মাঝে গাছের চারা বিতরণ করা হয।

পাঠকের মতামত: