ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

তনু হত্যা: ডিএনএ পরীক্ষায় ৩ ব্যক্তির ধর্ষণের আলামত

Tonu-SM20160516232312-300x166সি এন ডেস্ক :

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুকে হত্যার আগে ধর্ষণ করা হয়েছিল। তার ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে হত্যা মামলার তদন্তকারী সংস্থা অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)

সিআইডির প্রতিবেদন মতে, ডিএনএ পরীক্ষায় তনুর কাপড়ে ধর্ষণের আলামত মিলেছে। তার মরদেহে মোট ৪ জনের ডিএনএ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একটি তনুর নিজের রক্তের। অন্য তিনটি তিন পুরুষের।

পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, তনুর কাপড়, অন্তর্বাস, ভেজাইন্যাল সোয়াব, শরীরের অংশবিশেষ ও রক্তের ডিএনএতে ৩ ব্যক্তির স্পার্ম পাওয়া যায়। অন্তর্বাসে যে রক্ত মিলেছে তা-ও তনুর বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

ঢাকায় সিআইডির পরীক্ষাগারে ডিএনএ পরীক্ষার পর এই আলামত মিলেছে। সোমবার (১৬ মে) রাতে বিষয়টি বাংলানিউজকে জানিয়েছেন সিআইডি কুমিল্লার বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করিম খান।

তিনি বলেন, আমরা ডিএনএ প্রতিবেদন পাওয়ার পর নিশ্চিত হয়েছি, তনু ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন। বেশ কিছু তথ্য, উপাত্ত, মুঠোফোনের এসএমএস ও জিজ্ঞাসাবাদের মধ্য দিয়ে আমরা আসামি শনাক্ত করতে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছি।

নাজমুল করিম খান আরও বলেন, ধর্ষণের আলামত নিশ্চিত হতে আমরা ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়েছিলাম। ভেজাইনাল সোয়াব (ফ্লুইড) নমুনা হিসেবে আমাদের পরীক্ষাগারে পাঠানোর জন্য তাদের কাছে লিখিতভাবে আবেদন করেছিলাম। তারা আমাদের জানান, পরীক্ষায় তারা আলামত পাননি। তাই নমুনা সংরক্ষণ করা হয়নি। এরপর আমরা আদালতের অনুমতি নিয়ে তনুর মরদেহে থাকা কাপড়-চোপড় ডিএনএ পরীক্ষার জন্য সিআইডির পরীক্ষাগারে পাঠাই।

তিনি জানান, এ ডিএনএ প্রতিবেদন আদালতে পাঠানো হয়েছে। এখন যত দ্রুত দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া যাবে, ততই এ মামলার অগ্রগতি দেশবাসীকে দেখানো যাবে বলে আশা করছে সিআইডি।

এ বিষয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ও দ্বিতীয় ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক দলের প্রধান ডা. কামদা প্রসাদ সাহা বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না। তবে শিগগিরই দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।

গত ২০ মার্চ কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকার একটি ঝোপে সোহাগী জাহান তনুর মরদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় তনুর বাবা ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি প্রথমে পুলিশ, তারপর ডিবি তদন্ত করে। সর্বশেষ এখন সিআইডি তদন্ত করছে।

গত ২৮ মার্চ ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের জন্য তনুর মরদেহের দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করে ডিবির জেলা শাখা। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ৩০ মার্চ তনুর মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরপর ৪ এপ্রিল কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ থেকে প্রথম ময়নাতদন্ত প্রকাশ করা হয়। ওই প্রতিবেদনে তনুকে হত্যা এবং ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়।

 

পাঠকের মতামত: