ঢাকা,রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

৬ দিনে ৩৬ মৃত্যু : কারণ শুধুই নিউমোনিয়া?

সিএন ডেস্ক :: ২ জানুয়ারি ২০২০। চারদিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে মারা যান সাবেক সংসদ সদস্য ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পী। সে সময় তার মৃত্যুর কারণ হিসেবে ‘এটিপিক্যাল নিউমোনিয়া’কে (অস্বাভাবিক নিউমোনিয়া) দায়ী করেন চিকিৎসকরা। গত ২৭ মার্চ রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ও খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া।

নিউমোনিয়া বা এটিপিক্যাল নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে যে শুধু এ দুই রাজনীতিবিদের মৃত্যু হয়েছে তা কিন্তু নয়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের হিসাবে, গত ৬ দিনে দেশের ২৯ জেলায় জ্বর-সর্দি–কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা গেছেন ৩৬ জন। চিকিৎসকরা এদের মৃত্যুর জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিউমোনিয়া ও কিছু ক্ষেত্রে এটিপিক্যাল নিউমোনিয়ার কথা বলেছেন।

এমনিতেই করোনাভাইরাস আতঙ্কে পুরো দেশ। সেই আতঙ্কের মাঝেই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে একের পর এক মৃত্যুর সংবাদ নতুন করে আশঙ্কা জাগাচ্ছে মানুষের মনে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) রাতে মেহেরপুর সদর উপজেলার কোলা গ্রামে শ্বাসকষ্টে ৩৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি, মাগুরায় এক কলেজ ছাত্র ও সাতক্ষীরায় এক সবজি বিক্রেতার মৃত্যু হয়েছে। এর আগে বুধবার (১ এপ্রিল) চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি এক কিশোরের মৃত্যু হয়। স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, এটিপিক্যাল নিউমোনিয়া ‘য় আক্রান্ত হয়ে ওই কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি জাগো নিউজকে বলেন, ‘কক্সবাজারের যে ছেলেটি চট্টগ্রামে আইসোলেশনে থাকা অবস্থায় মারা গেছে, তার নমুনায় করোনার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। এছাড়া তার বিদেশ ফেরত কারও সংস্পর্শে থাকারও ইতিহাস নেই। আমরা ধারণা করছি এটিপিক্যাল নিউমোনিয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘মূলত এটা ফ্লু’র মৌসুম। এই সময়ে স্বাভাবিকভাবেই সর্দি-কাশি হয়ে থাকে মানুষের। এছাড়া বিভিন্ন হাসপাতালে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে প্রায়ই রোগী মারা যায়। কিন্তু এখন করোনার কারণে সব মৃত্যুই গণনায় আসছে, সেই কারণে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে রোগীর মৃত্যুর বিষয়টি সামনে চলে আসছে।’

স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, চার বছরের মধ্যে এই মৌসুমেই সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষ শ্বাসতন্ত্রের রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।

তবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, চার বছরের মধ্যে এই মৌসুমেই সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষ শ্বাসতন্ত্রের রোগে আক্রান্ত হয়েছে। শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহজনিত রোগ বা অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন (এআরআই) বলতে সর্দি–কাশি, গলাব্যথা থেকে শুরু করে ব্রঙ্কাইটিস (শ্বাসনালীর ভেতরে আবৃত ঝিল্লিতে সংক্রমণ), ব্রঙ্কোলাইটিস ও নিউমোনিয়াকে বোঝানো হয়ে থাকে।

নিয়ন্ত্রণকক্ষের তথ্যমতে, এ বছরের মার্চে গত বছরের মার্চের তুলনায় এআরআইতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৪ গুণ পর্যন্ত বেড়েছে। এ বছর ৩০ মার্চ পর্যন্ত আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১১ হাজার ৯৩০। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালে এই সংখ্যা ছিল ৮২০, ২০১৮ সালে ১০১০ এবং ২০১৭ সালে ১৪১ জন। একইভাবে দেখা যাচ্ছে, এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এআরআইতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ২৪ হাজার ৯৫০, গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ৪৬০। এর এক মাস আগে অর্থাৎ জানুয়ারিতে রোগীর সংখ্যা ছিল ২৬ হাজার ৬৪১। গত বছরের জানুয়ারিতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৭ হাজার ৫২০।

গত চার বছরের তুলনায় এ বছরই শ্বাসতন্ত্রের রোগে আক্রান্ত আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এতো বেশি কেন, এ প্রশ্ন তুলছেন খোদ চিকিৎসকরাই। তারা বলছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা মেনে এটিপিক্যাল নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের অবশ্যই করোনা পরীক্ষার আওতায় আনতে হবে।

প্রদাহজনিত রোগ বা এআরআই রিপোর্টের একটি বিষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকরাও। সেটি হলো, গত নভেম্বর মাসে ২৯ জন মানুষ মারা যাওয়ার বিষয়ে জানানো হলেও পরের চার মাসে মাত্র একজন ব্যক্তি মারা গিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হচ্ছে ওই রিপোর্টে।

২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে শ্বাসতন্ত্রের রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৯ জন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক জাগো নিউজকে বলেন, এটিপিক্যাল নিউমোনিয়ায় মারা যাওয়া রোগীর করোনা পরীক্ষা করে আসলে তেমন লাভ নেই। কারণ মরদেহে থাকা ভাইরাস কয়েকঘণ্টার মধ্যেই মারা যায়। তাই করোনা পরীক্ষার ফলাফল নির্ভর করছে কখন নমুনা সংগ্রহ হলো, পরীক্ষা হলো কখন, সেটার ওপর। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং আমাদের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের গাইডলাইন অনুযায়ী হাসপাতালে ভর্তি সকল এটিপিক্যাল নিউমোনিয়ার রোগীদের কোভিড-১৯ এর টেস্ট করার নির্দেশনা আছে। তাই সকল এটিপিক্যাল নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে করোনা ভাইরাসের পরীক্ষায় আনতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের হাসপাতালগুলোতে তথ্য থাকে না, নয়তো গত তিন মাসে কী পরিমাণ মানুষ এটিপিক্যাল নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন, সে তথ্য থাকলে এটির গুরুতর রূপ আমাদের সামনে আসতো। আর এখনতো রোগীরা নিজেরাই হাসপাতালে আসছেন না। তাই আমরা এর সঠিক হিসাব কোনোভাবেই পাব না।

এ বিষয়ে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি জাগো নিউজকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে এ বিষয়ে নির্দেশনা আছে, মূলত যখন করোনার কমিউনিটি ট্রান্সমিশন ঘটবে তখন আমরা সব এটিপিক্যাল নিউমোনিয়া রোগীকে করোনা ভাইরাসের পরীক্ষার আওতায় নিয়ে আসব।’

এটিপিক্যাল নিউমোনিয়ায় মৃত্যু নিয়ে বিশ্বে কী হচ্ছে?
দেশের গণমাধ্যমে গত ৬ দিনে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৩৬ জনের মৃত্যুর যে খবর প্রকাশ হয়েছে, সংশ্লিষ্টরা মনে করেন প্রকৃতপক্ষে এ সংখ্যা আরও বেশি। তবে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে শুধু যে এ দেশেই মানুষ মারা যাচ্ছেন, বিষয়টি কিন্তু এমন নয়, করোনা প্রাদুর্ভাব বা এর আগে সার্স, নিপাহ বা স্প্যানিশ ফ্লু’র প্রাদুর্ভাবের সময়ও অনেক মানুষ নিউমোনিয়ায় ও এটিপিক্যাল নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন সারাবিশ্বে।

মেক্সিকান সংবাদমাধ্যম ‘ইউকাটান টাইমস’ জানিয়েছে, তাদের দেশে এক সপ্তাহে ৭০ জন মানুষ ‘এটিপিক্যাল নিউমোনিয়ায়’ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

মেক্সিকান সংবাদমাধ্যম ‘ইউকাটান টাইমস’ গত ২৮ মার্চ তাদের এক রিপোর্টে জানিয়েছে, মেক্সিকোতে এর আগের এক সপ্তাহে ৭০ জন মানুষ ‘এটিপিক্যাল নিউমোনিয়ায়’ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তবে এদের কারও শরীরেই করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব মেলেনি বলে দাবি করে সেদেশের স্বাস্থ্য বিভাগ।

এ ঘটনার পর সেখানকার হোম ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা তাদের স্বাস্থ্য বিভাগকে এসব মৃত্যুর সুনির্দিষ্ট কারণ জানানোর আহ্বান জানান। যাতে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় তাদের পরিবারের সদস্যরা অংশ নিতে পারেন। তারা বলেছেন, এই তথ্যের প্রয়োজন আছে। প্রকৃত কারণ না জেনে যদি পরিবারের বয়োবৃদ্ধরা এই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নেন তাহলে তারা করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে পড়ে যেতে পারেন।

তবে মেক্সিকো বা বাংলাদেশ কেবল নয়, চীনের উহানে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর খোদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এটিকে নিউমোনিয়া হিসেবে উল্লেখ করছিলো। ৫ জানুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাদের এক রিপোর্টে উল্লেখ করে, ‘চীনে অজানা কারণে নিউমোনিয়ার প্রাদুর্ভাব ঘটছে। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্থানীয় অফিসকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে শনাক্ত করা অজ্ঞাত নিউমোনিয়া সম্পর্কে জানানো হয়েছে।’ ওই রিপোর্টে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ৪৪ জন নাগরিক অজানা নিউমোনিয়া বা এটিপিক্যাল নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানানো হয়।

এর আগে ২০০৩ সালে চীনে যখন সার্স রোগের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছিলো, তখনো সার্স একটি ভাইরাস হিসেবে শনাক্ত হওয়ার আগে এটিকে এটিপিক্যাল নিউমোনিয়া হিসেবেই বলা হচ্ছিলো। মূলত সর্দি-কাশি-জ্বর ও শ্বাসতন্ত্রের রোগে আক্রান্ত হওয়ার পেছনে যখন নিউমোনিয়ার কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না তখনই এটিকে এটিপিক্যাল নিউমোনিয়া বা অজানা নিউমোনিয়া বলা হয়। যা আমাদের দেশে এই মুহূর্তে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ঘটেছে।

নিউমোনিয়া বা এটিপিক্যাল নিউমোনিয়া নিয়ে শঙ্কা যেখানে
চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদের কাছে যদি আগের ডাটাগুলো থাকতো তাহলে মিলিয়ে দেখা যেতো যে আসলে নিউমোনিয়া রোগী বেড়েছে কি-না। সিজনাল কারণে অনেক সময় ফ্লু ‘র প্রাদুর্ভাব হয়।’

অনেক সময় ভাইরাসের বিস্তারকালে বাদবাকি রোগেরও লক্ষণ বেশি হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘একই সময়ে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া দুই কারণেই নিউমোনিয়া হতে পারে। যেহেতু দুটির লক্ষণ ও রোগ একই ধরনের হয়, তাই দুটিকে আলাদা করা কঠিন।’

জানুয়ারির ১০ তারিখ পর্যন্ত চীনা গণমাধ্যম করোনাভাইরাসকে ‘উহান নিউমোনিয়া’ বলে প্রচার করছিলো।

করোনার রূপ বদলের ফলে আশঙ্কা বাড়ছে জানিয়ে এই চিকিৎসক বলেন, ‘করোনা ইতোমধ্যেই ৩৬৭ বার তার রূপ বদলেছে বলে বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন। আগে বলা হচ্ছিলো করোনা গরম দেশে হয় না, কিন্তু এখন আমরা দেখছি মধ্যপ্রাচ্যে এর প্রাদুর্ভাব শুরু হয়ে গেছে। এ অবস্থায় একই ধরনের লক্ষণ নিয়ে বাড়তে থাকা নিউমোনিয়া উদ্বেগের কারণ। আমরা জানি না এই রোগটির নতুন কোনো ফর্ম আছে কি-না।’

সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র ও আইসল্যান্ডে শনাক্ত হওয়া করোনা আক্রান্তদের প্রায় অর্ধেকের শরীরেই কোনো ধরনের উপসর্গ দেখা যায়নি। আইসল্যান্ডে করোনা সংক্রমণের ডাটা বিশ্লেষণ করে গবেষকরা জানিয়েছেন, দেশটিতে আক্রান্তদের প্রায় অর্ধেকই উপসর্গহীন। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) জানিয়েছে, তাদের দেশে উপসর্গহীন করোনা রোগীর হার অন্তত ২৫ শতাংশ।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাহিদুর রহমান বলেন, ‘করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে সাসপেক্টেড সব কেসকে যদি পরীক্ষার আওতায় আনা হতো, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে থাকতো। তাই কেবল তাদের গাইডলাইন অনুযায়ী লক্ষণ থাক না থাক, কনট্যাক্ট ট্রেসিং করে হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় যারা শনাক্ত হয়েছেন, তাদের সংস্পর্শে আসা চিকিৎসকসহ সব স্বাস্থ্যকর্মীর টেস্ট করতে হবে। একইসঙ্গে সন্দেহভাজন কেউ মারা গেলে তাদের মৃতদেহ থেকে নমুনা নিয়ে টেস্ট করা অত্যন্ত জরুরি। সারাদেশের এটিপিক্যাল নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের টেস্ট করতে হবে, নয়তো প্রকৃত চিত্র বোঝা যাবে না। বটম লাইন ইজ, টেস্ট, টেস্ট অ্যান্ড টেস্ট।’

নিউমোনিয়া কী?
চিকিৎসকরা বলছেন, যখন ফুসফুসে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস সংক্রমিত হয় যা শ্বাসযন্ত্রের উপর আক্রমণ করে, তখন এটিকে নিউমোনিয়া বলে। এটি ফুসফুসের এক বা উভয় অংশকে প্রভাবিত করতে পারে এবং সম্ভবত একজন ব্যক্তি এতে খুব অসুস্থ হতে পারে। ফুসফুসের বায়ুথলিগুলি সংক্রমণের দ্বারা সংক্রমিত হয় এবং শ্লেষ্মা, পুঁজ ও অন্যান্য তরল দিয়ে ভরে যায়, যা শ্বাস নেয়া কঠিন করে তোলে। সাধারণ উপসর্গ হলো কাশি, যা ফুসফুস থেকে গাঢ় শ্লেষ্মার সঙ্গে হয়, এটা সবুজ, বাদামি বা রক্তের ছিটেযুক্ত হতে পারে। ঠাণ্ডা বা ফ্লু’র কারণে এবং প্রায়ই শীতকালের পরে আমাদের দেশে নিউমোনিয়ার আক্রান্ত রোগী দেখা যায়। নিউমোনিয়া এক বা দুই দিনের মধ্যে বা কয়েক দিনের মধ্যে সতর্কতা ছাড়াই মানুষকে আক্রান্ত করতে পারে। এটি দুই বছরের কম বয়সী শিশু ও ৬৫ বছরের বেশি বয়স্কদের জন্য গুরুতর এবং বিপজ্জনক হতে পারে।

নিউমোনিয়া মানেই কি করোনাভাইরাস?
নিউমোনিয়া আমাদের দেশে একটি পরিচিত রোগ। সমাজে ও পরিবেশে বিদ্যমান জীবাণুর সংক্রমণে এটি হয়ে থাকে। তবে এ দুটির মূল পার্থক্য হচ্ছে নিউমোনিয়া একটি ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ। বিপরীতে করোনা একটি ভাইরাস। তবে অনেক ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, এমনকি ফাঙ্গাসও নিউমোনিয়ার কারণ হতে পারে। করোনাভাইরাসও এক ধরনের নিউমোনিয়া সৃষ্টি করে থাকে।

পাঠকের মতামত: