ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

শেষ পর্যায়ে লামার বিদ্যুৎ সরবরাহ উপকেন্দ্র স্থাপন, উদ্বোধন শীঘ্রই

f5f9827f0562ac32dd6272db0f36db19নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া নিউজ ডেস্ক  :::

পার্বত্য লামা, আলীকদম ও তৎসংলগ্ন চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে লামা পৌরসভার মধুঝিরি এলাকায় প্রায় তিন কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩৩/১১ কেভি বিদ্যুৎ সরবরাহ উপকেন্দ্র স্থাপনের কাজ সমাপ্তির পথে। চলছে শেষ মুহূর্তের পরীক্ষানিরীক্ষা। খুব শীঘ্রই পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি নির্মাণাধীন এ বিদ্যুৎ সরবরাহ উপকেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন বলে সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। নির্মাণাধীন বিদ্যুৎ সরবরাহ উপকেন্দ্রটি পুরোদমে চালু হলে উপজেলা দ’ুটিসহ তৎসংলগ্ন এলাকায় বিদ্যুৎ প্রাপ্তিতে গ্রাহক ভোগান্তি লাঘব হবে এবং লোভোল্টেজ ও লোডশেডিংয়ের ভোগান্তি হ্রাসপাবে বলে বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। এদিকে, লামা বিদ্যুৎ বিভাগে নির্মাণাধীন বিদ্যুৎ সরবরাহ উপকেন্দ্রটি পরিচালনার জন্য দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, আশির দশকে পার্বত্য লামা ও আলীকদম উপজেলায় বিদ্যুতায়ন করা হয়। ক্রমান্বয়ে লামা বিদ্যুৎ বিভাগের সরবরাহের পরিধি বাড়তে থাকে। লামা ও আলীকদম উপজেলাসহ লামার সীমান্ত সংলগ্ন চকরিয়া উপজেলার মানিকপুর, সুরুজপুর, বমুবিলছড়ি, পানিস্যাবিল, পুকুরিয়া খোলা, এলাকায় লামা বিদ্যুৎ বিভাগের আওতায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। দোহাজারি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র থেকে চকরিয়ার মানিকপুর হয়ে মাতামুহুরী নদীর তীর ঘেষে দুর্গম পাহাড়ী জঙ্গলের মধ্য দিয়ে ১১ কেভি লাইনে এতদাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হত। একদিকে, প্রায় ১০ হাজার গ্রাহকের চাহিদার তুলনায় কম সরবরাহ, লোভোল্টেজ ও লোড শেডিংয়ের ভোগান্তি অপর দিকে, পাহাড়ী জঙ্গলের মধ্য দিয়ে লাইন আসায় সামান্য ঝড়বৃষ্টিতে গাছবাঁশের সংস্পর্শে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের চরম ভোগান্তি নিত্য সঙ্গী হয়ে উঠে এতদাঞ্চলের বিদ্যুৎ গ্রাহকদের। লামা বিদ্যুৎ বিভাগের আওতাধীন গ্রাহকদের ভোগান্তি লাঘব ও উপজেলা দু’টির নতুন নতুন এলাকাসহ তিন পার্বত্য জেলার বিদ্যুৎ বিহীন এলাকাগুলো বিদ্যুতায়নের উদ্যোগ গ্রহন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। প্রতিমন্ত্রীর এ প্রচেষ্টায় তিন পার্বত্য জেলার বিদ্যুৎ বিহীন গ্রাম গুলোতে বিদ্যুতায়নের জন্য প্রধান মন্ত্রী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন। এর আওতায় লামা, আলীকদম ও তৎসংলগ্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বৃদ্ধি করে জনগণের চাহিদা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০১৪ ১৫ অর্থ বছরে তিন কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩৩/১১ কেভি বিদ্যুৎ সরবরাহ উপকেন্দ্র স্থাপনের কাজ শুরু হয়। বর্তমানে বিদ্যুৎ সরবরাহ উপকেন্দ্র স্থাপনের কাজ সমাপ্তির পথে। জানা গেছে, মোট ৫টি পিডারে ভাগ হয়ে এই উপকেন্দ্রটি বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে। এর মধ্যে স্পেশালভাবে আলীকদম সেনানিবাসের জন্য ১১ কেভি পিডার এক্সপ্রেস লাইন স্থাপনের কাজ বর্তমানে চলমান রয়েছে। অপরদিকে, লামা বিদ্যুৎ সরবরাহ বিভাগে সেটআপ অনুযায়ী জনবলের বিশাল অভাব রয়েছে বলে জানা গেছে। নির্মাণাধীন উপকেন্দ্রটি পরিচালনার জন্য কোন দক্ষ জনবল নেই। প্রায় ১০ হাজার গ্রাহকের মিটার পরিদর্শনের জন্য নেই কোন মিটার পরিদর্শক। রয়েছে অবকাঠামোগত সমস্যা। সেটআপ অনুযায়ী জনবল না থাকায় গ্রাহকদের সেবা দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগকে।

লামা বিদ্যুৎ বিভাগের আবাসিক প্রকৌশলী এ.এম.হেলাল উদ্দিন জানান, ৩৩/১১ কেভি বিদ্যুৎ সরবরাহ উপকেন্দ্র স্থাপনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। কম্পিউটার প্রোগ্রামিং এর কাজ বাকী রয়েছে। ইতিমধ্যে উপকেন্দ্রটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। তিনি জানান, নির্মাণাধীন বিদ্যুৎ সরবরাহ উপকেন্দ্রটি পুরোদমে চালু হলে উপজেলা দ’ুটিসহ তৎসংলগ্ন এলাকায় বিদ্যুৎ প্রাপ্তিতে গ্রাহক ভোগান্তি লাগব হবে এবং লোভোল্টেজ ও লোডশেডিংয়ের ভোগান্তি হ্রাস পাবে। লামায় ৩৩/১১ কেভি বিদ্যুৎ সরবরাহ উপকেন্দ্র স্থাপনের ফলে এতদাঞ্চলের বিদ্যুৎ গ্রাহকদের বিভিন্ন ধরনের ভোগান্তি লাঘবসহ এলাকার কৃষি,ক্ষুদ্রশিল্প ও আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নে ব্যপক ভূমিকা রাখবে বলে স্থানীয়রা মনে করছেন।

পাঠকের মতামত: