ঢাকা,রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল হলে দেশ অচলের হুমকি

babuচট্টগ্রাম প্রতিনিধি:

আদালতের রায়ে রাষ্ট্র ধর্ম হিসেবে ইসলামকে বাদ দেয়া হলে দেশ অচলের হুমকি দিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী।

উল্লেখ্য, দীর্ঘ ২৮ বছর পর শুনানীর অপেক্ষায় থাকা রাষ্ট্র ধর্ম ইসলামকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আনীত রিটের শুনানির জন্য আগামী ২৭ মার্চ ধার্য করা হয়েছে।

শুক্রবার জুমার নামাজের পর ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম নিয়ে চক্রান্ত ও রিট বাতিলের দাবিতে’ হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ হাটহাজারী শাখার উদ্দ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল শেষে এক প্রতিবাদ সমাবেশে এ তিনি এই হুমকি দেন।

এর আগে নামাজের পর হাটহাজারী ডাক বাংলো চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে হাটহাজারী মাদরাসায় এসে শেষ হয়। এসময় হেফাজতের সমাবেশকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

প্রতিবাদ সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ যুগ্ন মহাসচিব মাওলানা মাইনুদ্দীন রুহী, হাটহাজারী শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মীর ইদ্রিস, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা কলিমুল্লাহ।

রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৮৮ সালে হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করা হয়। এরপর থেকেই আবেদনটি হাইকোর্টে বিচারাধীন ছিল। পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের ব্যাপক সংশোধনী আনা হয়। কিন্তু রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের বিষয়টি বহাল থাকে। এর প্রেক্ষিতে বিশিষ্ট সাংবাদিক ফয়েজ আহমেদ রিটটি শুনানির জন্য হাইকোর্টে ২০১১ সালের জুন মাসে একটি সম্পূরক আবেদন দাখিল করেন।

ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ ওই বছরের ১১ জুন রুল জারি করেন। রুলে সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামকে অন্তর্ভুক্তির বিধান কেন অসাংবিধানিক ও বে আইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। একই সঙ্গে সিনিয়র ১২ আইনজীবীকে অ্যামিকাসকিউরি হিসেবে নিয়োগ দেয়। রুল জারি এবং রিট দায়েরের দীর্ঘদিন পর মামলাটি চূড়ান্ত শুনানির জন্য হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে উঠল।

সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচএম এরশাদের শাসনামলে ১৯৮৮ সালের ৫ জুন চতুর্থ জাতীয় সংসদে অষ্টম সংশোধনী পাস করা হয়। ওই সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে অনুচ্ছেদ ২-এর পর ২(ক) যুক্ত হয়। ২(ক)-তে বলা হয়, ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম হবে ইসলাম, তবে অন্যান্য ধর্মও প্রজাতন্ত্রে শান্তিতে পালন করা যাইবে।’ তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ৯ জুন এতে অনুমোদন দেন।

এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের আগস্ট মাসে ‘স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ কমিটির’ পক্ষে সাবেক প্রধান বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেন, কবি সুফিয়া কামাল, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীসহ ১৫ জন বিশিষ্ট নাগরিক হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন।

ওই আবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে নানা ধর্ম বিশ্বাসের মানুষ বাস করে। এটি সংবিধানের মূল স্তম্ভে বলা হয়েছে। এখানে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করে অন্যান্য ধর্মকে বাদ দেয়া হয়েছে। এটি বাংলাদেশের অভিন্ন জাতীয় চরিত্রের প্রতি ধ্বংসাত্মক। রিটকারীদের মধ্যে ইতিমধ্যে অনেকেই মৃত্যুবরণ করেছেন।

 

পাঠকের মতামত: