ঢাকা,শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

টেকনাফে দু-মাসে দেড় কোটি টাকার শুল্ক আদায়

মিয়ানমারের গরু-মহিষ আসছে

টেকনাফ প্রতিনিধি :: শাহপরীরদ্বীপ করিডোর দিয়ে মিয়ানমার থেকে গবাদিপশু আমদানি বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের অভ্যন্তরে বিশেষ করে চট্টগ্রাম অঞ্চলে মিয়ানমারের গরুর বেশ চাহিদা রয়েছে। এবার আসছে উল্লেখযোগ্য মহিষও।
টেকনাফ কাস্টম্‌স সুত্র জানায়, গত মে ও জুন মাসে ২৫ হাজার ৮৬৮ টি গরু ও ৪ হাজার ২৫৮ টি মহিষ আমদানি বাবদ এক কোটি ৫০ লাখ ৬৩ হাজার টাকা রাজস্ব আয় করে শুল্ক বিভাগ। কিন্তু এর আগে মার্চ-এপ্রিল মাসেও ১১ হাজার ৮৮৬ টি গরু ও দুই হাজার ৪২৪টি মহিষ আমদানি বাবদ ৭১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা শুল্ক আদায় করে কাস্টম্‌স। টেকনাফ স্থল বন্দর শুল্ক কর্মকর্তা মো.আব্দুর নুর জানান- ফেব্রুয়ারি মাসে মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণ এবং বর্ষা মৌসুমের মধ্যেও মে-জুন মাসে মিয়ানমার থেকে গবাদিপশু আমদানি মার্চ-এপ্রিল দু’মাসের চেয়ে ভালো হয়েছে। এদিকে আর ৩ সপ্তাহ পর কোরবানি ঈদ হতে যাচ্ছে। এ সময় মিয়ানমার হতে আরো প্রচুর গবাদিপশু টেকনাফে প্রবেশ করার কথা। ইতিমধ্যে মিয়ানমার প্রচুর গরু-মহিষ মজুদ করেছে। শাহপরীরদ্বীপ করিডোরের পশু ব্যবসায়ী সাবরাং ইউপি সদস্য মোহাম্মদ শরীফ, মো সোহেল রানা, শহিদুল ইসলাম বলেন, মিয়ানমারে প্রচুর গরু-মহিষ জমা রয়েছে। শাহপরীরদ্বীপ করিডোর দিয়েও গবাদিপশু আমদানি অব্যাহত রয়েছে। এখনও টেকনাফ বাজারে কোরবানির পশু বেচা-কেনা জমে উঠেনি। তবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন ট্রাকযোগে মিয়ানমার থেকে আমদানি করা কোরবানির পশু নিয়ে যাচ্ছে ব্যবসায়ীরা। করোনার কারণে কড়াকড়ি ও সীমান্ত বন্ধ থাকায় ভারতীয় গরু আমদানি না হলেও দেশের অভ্যন্তরে পর্যাপ্ত গরু মওজুদ রয়েছে। এছাড়া দেশীয় খামারীদেরও রয়েছে প্রচুর গরু।
এ দিকে গরু ব্যবসায়ী আবু ছৈয়দ বলেন, মিয়ানমারের কয়েক হাজার গরু বিক্রির অপেক্ষায় খামারে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া সাগরের ভাঙ্গনে শাহপরীর দ্বীপ টু টেকনাফ সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিছিন্ন রয়েছে ৯ বছর ধরে। এতে পশু পরিবহনেও নানা ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। তিনি আরো বলেন, ২০০৩ সাল হতে শাহপরীর দ্বীপ করিডোর চালু করা হলেও এখনো অবকাঠামোগত কোন সুবিধা দিতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। এখানে নেই পশু রাখার স্থান, নেই ব্যাংক সুবিধা। ফলে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হতে হয় রাজস্ব প্রদানের ক্ষেত্রে। তবে বিজিবি’র সার্বিক তত্ত্বাবধানে মিয়ানমার হতে শাহপরীর দ্বীপ জেটি হতে পশু খালাস অব্যাহত রয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ী মো. কাসেম।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী বলেন, ব্যবসায়ীরা যাতে নির্বিঘ্নে মিয়ানমার হতে পশু আমদানি করতে পারে সে ব্যাপারে সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া শাহপরীর দ্বীপ করিডোরে কোরবানির পশুর হাটের ইজারা বিষয়েও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আলোকে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পশু পরিবহন ও কোরবানির পশুহাটে যাতে নকল টাকার ব্যবহার, চাঁদাবাজিসহ সকল অপতৎপরতা বন্ধে একাধিক টিম গঠন করেছে আইনশৃংখলা বাহিনী। টেকনাফ থানার ওসি মো. হাফিজুর রহমান বলেন, কোরবানের পশু পরিবহনের সাথে একটি চক্র ইয়াবা পাচারে জড়িয়ে যায়। এ ধরনের অপতৎপরতা বন্ধে বাজার মনিটরিং কার্যক্রম তদারকির জন্য ইতিমধ্যে কয়েকটি টিম গঠন করা হয়েছে।

পাঠকের মতামত: