ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

মিসকলেই তছনছ জেসমিনের সংসার!

59627-300x169সি এন ডেস্ক:   ‘ওর মোবাইলে মাঝে মধ্যেই মিসকল আসে। প্রায় দেড় মাস আগে একদিন গভীর রাতে একটি মিসকল আসে। আমি নিজেই ওই নম্বরে ফোন করি। মোবাইলের অপর প্রান্তে এক মহিলা কণ্ঠ শুনতে পাই। এরপর কথা বলেনি। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তার স্বামীও কোনো উত্তর দেননি। মধ্যরাতে ওর কাছে কার ফোন আসে? সেদিন থেকেই স্বামীর পরকীয়া নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হয় এবং প্রতিশোধ স্পৃহা জাগে তার মনে।’ পুলিশের টানা জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে দুই সন্তানের ঘাতক মাহফুজা মালেক জেসমিন পুলিশকে এ তথ্য দেন। তিনি বলেন, ‘আমিই আমার ছেলেমেয়েকে মেরেছি। আমাকে ফাঁসি দিন।’ জেসমিনের দেয়া তথ্য থেকে পুলিশ খুঁজে পেয়েছে নতুন ক্লু।

শুক্রবার রাতে রামপুরা থানায় একটানা কয়েক ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় জেসমিনকে। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে শান্ত-স্থির চোখে তাকিয়ে কাউকে যেন খুঁজছিলেন তিনি। বারবার চারদিকে তাকাচ্ছেন। রামপুরা থানার ওসির কক্ষে তাকে ঘিরে আছেন চার থেকে পাঁচজন পুলিশ কর্মকর্তা। একজনের প্রশ্ন শেষ হতে না হতেই দুই সন্তানের ঘাতক মা মাহফুজা মালেক জেসমিনকে প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছেন আরেক কর্মকর্তা। কিন্তু কোনো জবাব নেই তার মুখে। বারবার শুধু টেবিলে রাখা পানির গ্লাসে চুমুক দিচ্ছেন। এভাবে প্রশ্নবাণে জর্জরিত অবস্থায় এক পর্যায়ে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ান জেসমিন। ক্ষুব্ধ কণ্ঠে পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘ওকে (স্বামী আমানউল্লাহ) ডাকেন। সব দোষ শুধু আমার?’

এরপর বলতে থাকেন, ‘প্রায় দেড় মাস ও (স্বামী) আমার সঙ্গে ঠিকমতো কথা বলে না। ছেলেমেয়েদের দিকেও কোনো খেয়াল নেই। সকালে বেরিয়ে ফেরে গভীর রাতে। এমনকি ২৮ ফেব্রুয়ারি বিয়ের দিনটি পর্যন্ত তার মনে ছিল না। বাসায় ফেরার পর এ নিয়ে স্বামীর সঙ্গে তার ঝগড়া হয়। কার সঙ্গে তার সম্পর্ক?’ ওইদিনই স্বামীর পরকীয়ার প্রতিশোধ নিতে সন্তান হত্যার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় জেসমিন।

জিজ্ঞাসাবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রামপুরা থানা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা শুক্রবার এসব তথ্য জানিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে প্রায় দুই ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় মাহফুজা মালেক জেসমিনকে। পুরো সময় তিনি শান্ত ছিলেন। কোনো অনুশোচনা ছিল না তার মধ্যে। তবে শেষ মুহূর্তে তিনি হঠাৎ ক্ষুব্ধ হয়ে বেশ কিছু তথ্য দেন। এসব তথ্য তারা যাচাই-বাছাই করে দেখছেন।

ইতিমধ্যেই মাহফুজা মালেক জেসমিন ও তার স্বামী আমানউল্লাহ আমান ছাড়াও ঘনিষ্ঠ কয়েক স্বজন ও বন্ধুর মোবাইল কললিস্ট সংগ্রহ করেছে পুুলিশ। এসব কললিস্ট পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রামপুরা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘কোনো সম্ভাবনাকে তারা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। চাঞ্চল্যকর দুই খুনের ঘটনায় নেপথ্যে অন্য কোনো কারণ রয়েছে কিনা যেটা জানার জন্য মাহফুজা মালেক জেসমিনকে শুক্রবার ৫ দিনের পুলিশ রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।’

বৃহস্পতিবার রাতে মামলা দায়েরের পর রামপুরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমানকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আমানউল্লাহ আমান বাদী হয়ে ওই মামলাটি করেন। মামলায় একমাত্র আসামি করা হয়েছে শিশু দুটির মা মাহফুজা মালেক জেসমিনকে।

শুক্রবার দুপুরে তিনি মাহফুজা মালেক জেসমিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন জানিয়ে মহানগর হাকিম স্নিগ্ধা রানী চক্রবর্তীর আদালতে হাজির করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রামপুরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমান রিমান্ড আবেদনের প্রতিবেদনে বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি র‌্যাব ও পুলিশের কাছে দেয়া স্বীকারোক্তিতে নিজ হাতে তার দুই সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। কিন্তু ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায় একার পক্ষে ঘটনা ঘটানো সম্ভব নয় বলে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। এছাড়া হত্যার কারণ সম্পর্কেও নিশ্চিত হওয়া দরকার। এদিকে আদালতে আসামি পক্ষে রিমান্ডের বিরোধিতা করে জামিন চেয়ে আবেদন জানানো হয়। আদালত শুনানি শেষে জামিন আবেদন নাকচ করে পাঁচ দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে মামলার পর রামপুরা থানা পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও র‌্যাব এবং মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) আলাদাভাবে ছায়াতদন্ত করছে। চাঞ্চল্যকর এ মামলাটির তদন্তভার যে কোনো মুহূর্তে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর হতে পারে বলেও আভাস দিয়েছেন এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও নবগঠিত কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম শুক্রবার বলেন, থানা পুলিশ তদন্ত করলেও গোয়েন্দারাও নেপথ্যে খোঁজখবর রাখছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত জানালে মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশে ন্যস্ত হতে পারে।

রামপুরা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, নুসরাত আমান অরনী ও আলভী আমানের ঘাতক যে তাদের মা এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। তবে শুধু সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে তিনি একে একে দু’সন্তানকে খুন করেছেন- এমন তথ্য বিশ্বাস করা প্রায় অসম্ভব। পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মনে হয়েছে মাহফুজা মালেক জেসমিনের প্রচণ্ড সন্দেহ বাতিক রয়েছে। তিনি স্বামীকে বিশ্বাস করতেন না। তবে বিশ্বাস না করার কারণ সম্পর্কে তিনি সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্যপ্রমাণ দিতে পারেননি। স্বামী পরকীয়া কিংবা অন্য কোনো বিষয়েও তিনি কিছুই বলতে পারেননি। শুধু পুলিশকে সন্দেহজনক কয়েকটি মিসকলের কথা বলেছেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় রামপুরা থানায় স্ত্রী জেসমিনের বিরুদ্ধে মামলা করার পর রাত ১১টার দিকে স্বজনদের নিয়ে বনশ্রীর বাসায় যান আমান। দরজা খুলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। ঘরের মধ্যে গিয়ে মেয়ে ও ছেলের স্কুলব্যাগ জড়িয়ে আহাজারি করতে করতে বলেন, ওরা চলে গেছে। ওদের স্মৃতি রেখে গেছে। ওরা নেই, এই ফাঁকা ঘরে কেমনে থাকব। বাড়ির দারোয়ান পিন্টু মিয়া জানান, আধা ঘণ্টা ওই বাসায় অবস্থান করার পর আমানসহ স্বজনরা চলে যান।

এদিকে জেসমিনের বোন আফরোজা মালেক মিলা বলেন, সন্তানদের পড়ালেখা নিয়ে আমার বোনের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু আমরা দেখিনি। আমার আপা যেভাবে হত্যার কথা স্বীকার করেছে বলে শুনেছি, সেটি আমি বিশ্বাস করতে পারছি না। আমার আপার সুখী পরিবার ছিল। ওদের স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক মধুর ছিল।

ঘটনার দিনের কথা বর্ণনা করতে গিয়ে আফরোজা বলেন, সোমবার আমি মাগরিবের নামাজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এ সময় আপা (জেসমিন) ফোন দিয়ে কান্না শুরু করে। আমি বলি, ‘কান্না করছ কেন, কী হয়েছে বলো?’ তখন আপা বলে, ‘অরনী ও আলভী কেমন করছে। কথা বলছে না। নড়াচড়াও করছে না। তখন আমাকে দ্রুত বাসায় যেতে বলে। ফোন পেয়ে তিনি ছুটে যান বোনের বাসায়। আফরোজা বলেন, বাসায় গিয়ে দরজা খোলা পেয়ে তিনি বাসায় ঢুকে বোনকে কান্নাকাটি করতে দেখেন।

আফরোজার ভাষায়, ওই সময় আলভী খাটের ওপর ও অরনীকে মেঝেতে নিথরভাবে পড়ে থাকতে দেখেন। তারা প্রস্রাব করে ফেলেছে। আপা আমাকে বলে, মিলা ‘ওরা’ কথা বলছে না কেন? ওদের কী হয়েছে? আমি আলভীকে কোলে নিয়ে বলি, আলভী কী হয়েছে, কথা বলো বাবা। তোমার আঁকা কার্টুনগুলো খুব সুন্দর। দেখো।
আলভী ও অরনীর সাড়া না পেয়ে তিনি নিজেই ভগ্নিপতি আমানকে ফোন দেন। আমান তাকে জানান, জেসমিন তাকে ফোন করেছিল, অরনী ও আলভীকে হাসপাতালে নেয়ার জন্য, তিনি বন্ধু জাহিদকে বাসায় পাঠিয়েছেন।

আফরোজা বলেন, ‘জাহিদ ভাই এলে আমি আলভীকে কোলে নিই। জাহিদ ভাই অরনীকে কোলে নেয়।’

জেসমিনের মানসিক সমস্যা আছে বলে মনে করেন না বোন আফরোজা। তিনি বলেন, আমার বোনের মানসিক কোনো সমস্যা থাকলে তো এতদিনে আমরা টের পেতাম। তবে আমার মায়ের (জুলেখা বেগম) মানসিক সমস্যা ছিল। মাঝে মধ্যে ঘুম হতো না। এজন্য মায়ের চিকিৎসাও করিয়েছি আমরা। তবে এখন পর্যন্ত বোনের (জেসমিন) মধ্যে কোনো সমস্যা আমরা দেখতে পাইনি।

তার বোন নিজ সন্তানদের খুন করেছে এ কথা বিশ্বাস করতে পারছেন না আফরোজা। তিনি বলেন, আমার কখনও বিশ্বাস হয় না। আমার কাছে পুরো ঘটনা কেমন যেন নাটক-সিনেমা মনে হচ্ছে। নাটক কেন মনে হচ্ছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এমন হতে পারে না। এটা কাল্পনিক ব্যাপার মনে হচ্ছে। তাহলে আপনি কী অন্য কাউকে সন্দেহ করেন- এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, না। সন্দেহের তালিকায় কেউ নেই।
ছেলেমেয়েকে নিয়ে আপনার বোন কোনো ধরনের দুশ্চিন্তা করতেন, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমার বোনের ছেলেমেয়েরা পড়ালেখায় ভালো ছিল। আমার বোন বলত, ওরা যেভাবে পড়ালেখা করছে করুক। পড়ালেখা নিয়ে খুব বেশি চাপ দিত না ছেলেমেয়েকে।

এজাহারে যা বলা হয়েছে : ২৯ ফেব্রুয়ারি আনুমানিক সন্ধ্যা ৬টায় স্ত্রী জেসমিন মোবাইল ফোনে স্বামী আমানকে কান্নাজড়িক কণ্ঠে জানান, অরনী ও আলভী খুবই অসুস্থ। তাদের হাসপাতালে নিতে হবে। এরপরই আমান উত্তর বাড্ডায় নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বাসার উদ্দেশে রওনা হন। এরই মধ্যে বন্ধু জাহিদকে বাসায় যেতে বলেন তিনি। হাসপাতালে অরনী ও আলভীকে মৃত ঘোষণা করলে স্ত্রীর কাছে মৃত্যুর কারণ জানতে চান আমান। এ সময় স্ত্রী বলেন, ২৮ ফেব্র“য়ারি বিবাহবার্ষিকী উপলক্ষে চাইনিজ রেস্টুরেন্ট থেকে আনা খাবার ২৯ ফেব্র“য়ারি (সোমবার) দুপুরে গরম করে খাওয়ানো হয়। ওই খাবার খেয়ে বিষক্রিয়ায় তারা মারা গেছে। পরে ময়নাতদন্তের পর তিনি জানতে পারেন তাদের শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এজাহারে আরও বলা হয়, অরনী ও আলভীর গৃহশিক্ষিকা শিউলী আক্তার ও মিসেস রাত্রিলাকে জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাব জানতে পারে, শিউলী বিকাল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ও রাত্রিলা ৪টা থেকে সোয়া ৫টা পর্যন্ত ছেলে ও মেয়েকে পড়িয়ে চলে যান। শিক্ষিকা চলে যাওয়ার পর বিকাল ৫টা ২০ মিনিটের দিকে ঘরের দরজা বন্ধ করে মা ও ভাইয়ের পাশে শুয়ে পড়ে অরনী। আসামি জেসমিন ছেলে ও মেয়ের স্কুলের পড়া ও রেজাল্ট খারাপ হওয়ায় মানসিকভাবে টেনশন করে। টেনশন নিয়ে তার মাথায় যন্ত্রণা হয়। ছেলেমেয়ে না থাকলে তার কোনো টেনশন হতো না বলেও প্রকাশ করত। এই যন্ত্রণার কারণে অরনী ও আলভীকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় জেসমিন। সাড়ে ৫টা থেকে ৬টার মধ্যে জেসমিন অরনীকে টেনেহিঁচড়ে ফ্লোরে নামিয়ে শ্বাসরোধ করতে চাইলে মেয়ে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে নিস্তেজ হয়ে যায়। এরপর একইভাবে খাটে শুয়ে থাকা ছেলে আলভীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে জেসমিন। এজাহারে আরও বলা হয়েছে, সন্তানদের হত্যার পর জেসমিন আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে। ছেলেমেয়ের পড়ালেখা নিয়ে যে টেনশন জেসমিন করত তা স্বামীর কাছে কোনোদিন প্রকাশ করেনি বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

বনশ্রীর বি ব্লকের ৪ নম্বর রোডের ৯ নম্বর বাড়ির ৫ম তলার ভাড়া বাসায় স্ত্রী জেসমিন দুই সন্তান অরনী ও আলভী এবং ও বৃদ্ধ মাকে নিয়ে থাকেন গার্মেন্ট এক্সেসরিজ ব্যবসায়ী আমানউল্লাহ। তার গ্রামের বাড়ি জামালপুর জেলায়। ২৮ ফেব্রুয়ারি (রোববার) আমান-জেসমিনের ১৪তম বিবাহবার্ষিকী ছিল। সোমবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ওই খাবার খেয়ে নুসরাত ও আলভী বিষক্রিয়ায় মারা গেছে বলে অপপ্রচার চালায় জেসমিন ও স্বজনরা। তবে ঘটনার পর থেকেই রহস্যজনক আচরণ ছিল জেসমিনের। ময়নাতদন্ত শেষে মঙ্গলবার চিকিৎসক বলেন, শ্বাসরোধ ও আঘাতজনিত কারণে শিশু দুটির মৃত্যু হয়েছে। লাশের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ তথ্য পাওয়ার পরপরই আইনশৃংখলা বাহিনীও নড়েচড়ে বসে। বিকালে গৃহশিক্ষিকা শিউলী আক্তার, তাদের দুই স্বজন ও দুই দারোয়ানকে র‌্যাব কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারে, বাসায় দুই শিশু নুসরাত ও আলভী, তাদের দাদি ও মা ছিল। তাই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে মা জেসমিনের হাত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হয়। বুধবার আমান, জেসমিন ও জেসমিনের বোন আফরোজাকে ঢাকায় আনে র‌্যাব। জেসমিনকে জিজ্ঞাসাবাদের পর বৃহস্পতিবার র‌্যাব সদর দফতরে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়- দুই সন্তানকে জেসমিন শ্বাসরোধে হত্যা করেছে। – যুগান্তর

পাঠকের মতামত: