ঢাকা,রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

মাগনা গরুর দাত থাকেনা! ফিঃ ছাড়া করোনা টেস্ট আর হবে না

:: এম.আর মাহামুদ ::

অবশেষে করোনা মহামারীর টেস্ট আর মাগনা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এখন থেকে হাসপাতালের বুথ থেকে টেস্ট করালে জনপ্রতি ২০০ টাকা করে দিতে হবে। আবার কোন রোগী বাড়ীতে বসে করতে চাইলে তাদের কাছ থেকে নেয়া হবে ৫০০ টাকা। গ্রামীন একটি প্রচলিত প্রবাদ “মাগনা গরুর দাত থাকে না” সরকার হয়তো প্রবাদটির যথার্থতা অনুধাবন করে করোনা রোগীদের টেস্টের উপর ফিঃ সংযোজন করেছে। আমার মতে দরিদ্র লোকজন ক্ষতিগ্রস্থ হলেও অর্থশালীদের এ পরিমাণ ফিঃ তেমন বেশি নয়। কারণ, বেসরকারী হাসপাতালে এ টেস্ট করতে গেলে অনেক টাকাই গুনতে হচ্ছে রোগীদের। এক্ষেত্রে সন্দেহের বশিভুত হয়ে ফিঃ দেয়ার ভয়ে অনেকেই টেস্ট করতে হাসপাতালের বুথে যাবেনা। করোনা মহামারী আকারে ছড়িযে পড়ার পর সরকারী হাসপাতালে যেসব রোগী করোনা টেস্ট করেছে তাদের কাছ থেকে কোন ফিঃ সরকার আদায় করেনি। রোগ যখন বেশি ছড়িযে পড়ছে সন্দেহভাজন রোগীরা টেস্টের জন্য হাসপাতালে ব্যাপক ভাবে ভীড় জমাচ্ছে, তখন স্বাস্থ্য বিভাগ টেস্টের উপর ফিঃ ধার্য্য করেছে। এখন হয়তো টেস্টের চাপ অনেকটা কমবে। চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনধিক ২০ জনের উর্ধ্বে করোনার টেস্ট হচ্ছেনা। আগে অবশ্য হয়েছে, তবে গত দু দিনের রিপোর্ট পর্যালোচনা করে দেখা গেছে চকরিয়ায় রোগীর সংখ্যা প্রায় শূণ্য, আলহামদুল্লিাহ্। ইতিমধ্যে চকরিয়ার বেশিরভাগ মানুষ মনে করতে শুরু করেছে চকরিয়া থেকে করোনা বিদায় নিয়েছে। কর্তৃপক্ষ চকরিয়াকে রেড জোন ঘোষনা করলেও হয়তো এখন গ্রীন জোনের দিকেই যাবে। পাশাপাশি চকরিয়া উপজেলার লাগোয়া পেকুয়া, কক্সবাজার, মহেশখালী ও কুতুবদিয়াতে এখনো করোনা রোগী সনাক্ত হচ্ছে। সে কারণে চকরিয়া উপজেলার লোকজন সচেতন না হলে পুনরায় করোনা দেখা দিতে পারে। চকরিয়া উপজেলার একটি পৌরসভা, ১৮ টি ইউনিয়নের ৫ লক্ষাধিক মানুষ বসবাস করে। উপজেলা সদর রেড জোনের আওতামুক্ত হওয়ার সাথে সাথে পেকুয়া, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, বান্দরবানের লামা-আলীকদমের লোকজন ভীড় জমাবে। ওইসব এলাকা এখনো করোনামুক্ত নয়। ফলে ব্যাপক মানুষের ভীড়ে পুনরায় করোনার চাষ যে হবেনা এমন কথা কারও পক্ষে বলা সম্ভভ না। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন চকরিয়া উপজেলাবাসীর কল্যানার্থে রেড জোন প্রত্যাহার করলেও সামাজিক দুরত্ব মেনে ব্যবসা বাণিজ্য হতে সবকিছু পরিচালনা না হলে পুনরায় এ রোগ ছড়িয়ে পড়ার আসংখ্যা করছে অনেকেই। করোনায় যারা আক্রান্ত হয়েছে তাদের পরিবার হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে এ রোগে আক্রান্ত রোগীরা কত ভোগান্তির স্বীকার হয়েছে। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা মানুষের মৌলিক অধিকার এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ার অধিকার সব মানুষের থাকা উচিত। বিশেষ করে ধনাঢ্য ও ক্ষমতাসীনরা যেভাবে সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে সেভাবে গ্রামের সাধারণ লোকজন স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছে বলে মনে হয়না। তারপরও ২শ টাকায় হাসপাতাল বুথ ও ৫শ টাকায় বাড়ীতে বসে করোনা টেস্ট করতে পারলে রোগীদের কল্যাণ হবে। অতীতে দেখা গেছে করোনা টেস্টের জন্য চ্যাম্পল দিয়ে ১৫ দিনেও রিপোর্ট না পাওয়ার নজির অসংখ্যা। এ সময়ের মধ্যে স্বল্প সংখ্যাক রোগী মারা গেছে। আবার কেউ কেউ এমনিতেই চিকিৎসা করে ভাল হয়েছে। রিপোর্ট আসার আগে মারা যাওয়া রোগীদের নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজেটিভ বলেও অনেকেই রিপোর্ট পরে এসেছে। ফলে ওই রোগী যথাযথ চিকিৎসার অভাবে পৃথিবী ছেড়ে না পেরার দেশে চলে গেছে। সাধারণ পাবলিকের দাবী জ্বর, স্বর্দি, কাশি নিয়ে সন্দেহভাজন অনেক রোগী করোনা টেস্ট করতে যাচ্ছে। তারা যেন যথাসময়ে রিপোর্ট পায় সে দিকে নজর দিলে সাধারণ রোগীরা উপকৃত হবে। করোনার মত মহামারী এদেশে বিস্তার না ঘটলে দেশের স্বাস্থ্য সেবার আসল চেহারা পাবলিক কোনদিন জানতনা। সবশেষে সবিনয়ে বলব টাকা দিয়ে হলেও টেস্টের রিপোর্টটা যেন যথাসময়ে পাওয়া যায় সে ব্যবস্থা করলে অসুস্থ রোগীরা সু-চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হবেনা।

লেখক: এম আর মাহমুদ, দৈনিক সমকাল-চকরিয়া প্রতিনিধি

সভাপতি -চকরিয়া অনলাইন প্রেসক্লাব, চকরিয়া, কক্সবাজার ।

পাঠকের মতামত: