লামা প্রতিনিধি :: বান্দরবানের লামা উপজেলার রূপসীপাড়া হয়ে সদর ইউনিয়নের পোপা খালের উপর ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের একটি ব্রিজ এলাকাবাসীর কোনো কাজেই আসছে না। এক বছরের অধিক সময় ধরে ব্রিজটি নির্মিত হলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় দু’পাড়ের মানুষের ব্রিজে উঠতে হয় মই দিয়ে।ব্রিজটির দুই পাশে রাস্তা না থাকায় জন দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে স্থানীয়দের।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ২০১৯-২২ অর্থবছরে ‘লামা রূপসীপাড়া সড়ক হতে মেরাখোলা হয়ে ছোট বমু পর্যন্ত পোপা খালের উপর প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬০ মিটার দীর্ঘ আর.সি.সি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। গত এক বছর আগেই ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ হয়।
নির্মাণের এক বছর পেরিয়ে গেলেও ব্রিজের দু’পাশে সংযোগ সড়ক করে না দেয়ায় ব্রিজটি এলাকাবাসীর কোন কাজে আসছে না। এই বিষয়ে মুঠোফোনে কথা হয় ব্রিজের নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী চিংথোয়াই মার্মার সাথে। তিনি বলেন, ব্রিজটির দু’পাশের এপ্রোচ সড়কের রাস্তার বরাদ্দ ছিল না। আপাতত মানুষ হেঁটে পারাপারের জন্য ব্রিজের দু’পাশে গাইডওয়াল তুলে বালু ফেলা হবে। বরাদ্দ পেলে এপ্রোচ সড়কের কাজ করা হবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার রূপসীপাড়া ইউনিয়ন হতে পোপা সড়ক দিয়ে গেলে পাহাড়পাড়া এলাকায় ব্রিজটি চোখে পড়বে। পোপা খালের উপর দক্ষিণ-উত্তরমুখী নির্মিত ব্রিজটির উত্তর পার্শ্বে স্থানীয়রা হেঁটে পারাপারের জন্য ১৫/২০ ফুট গাছ দিয়ে মই নির্মাণ করেছে। ঝুঁকিপূর্ণ সেই মই দিয়ে উঠতে গিয়ে প্রতিনিয়ত অনেক বৃদ্ধা ও শিশুরা পড়ে আহত হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন, আরাফাত মিয়া, মো. নুরুজ্জামান ও কমলা বেগম বলেন, এতো টাকা ব্যয়ে ব্রিজটি নির্মাণ করা হলেও কোনো উপকারে আসছে না। ভরা বর্ষা মৌসুমে ব্রিজের দুই পাশ পানির নিচে ডুবে থাকে। আর খরার সময় মই দিয়ে উঠতে হয়।
আরেক বাসিন্দা মোবারক হোসেন বলেন, ব্রিজের দু’পাশে রাস্তা না থাকার কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও গ্রামবাসীদের চরম দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করতে হয়। রাস্তা না হলে এই ব্রিজ কোনো কাজে আসবে না। এই ব্রিজটি দিয়ে দুই ইউনিয়নের ২০ হাজারের অধিক লোকজন চলাচল করে।
দুর্ভোগের বিষয়টি স্বীকার করেন রূপসীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ছাচিং প্রু মার্মা বলেন, গত সপ্তাহে পার্বত্যমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশেসিং এমপি’কে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তিনি দ্রুত সংযোগ সড়ক নির্মাণে উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশ দিয়েছেন।
সদর ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন বলেন, ব্রিজটি সচল হলে আমার ইউনিয়নের ৫,৬,৭,৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের মানুষের যাতায়াতে সুবিধা হবে। এছাড়া রূপসীপাড়া ও লামা সদর ইউনিয়নের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ইয়াছিন আরাফাত চকরিয়া নিউজকে বলেন, ব্রিজের সাথে এপ্রোচ সড়কের বরাদ্দ ছিল না। দ্রুত সংযোগ সড়ক নির্মাণে উদ্যোগ নেয়া হবে।
পাঠকের মতামত: