ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ভয়াবহ রূপে জলাবদ্ধতায় আতংকিত চট্রগ্রামবাসী

চট্রগ্রাম প্রতিনিধি :: পুরো বর্ষার শেষ সময়ে এসে গত চার দিনের প্রবল বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার ভয়াবহ রূপ দেখছে চট্টগ্রামবাসী। খলিফাপট্টি থেকে শুরু করে শহরের মধ্যে উঁচু এলাকা হিসেবে পরিচিত নন্দনকাননের সড়কেও জমেছে পানি।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অধীন পাহাড়তলীর ১২ নম্বর সরাইপাড়া ওয়ার্ডের ঝর্নাপাড়ার বাসিন্দা জসিম উদ্দিন আক্ষেপ করে বললেন, ‘আমরা তো গলা পর্যন্ত ডুবছি! আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কি মাথাসহ ডুবে যাবে?”

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ রবিবার (৬ আগস্ট) সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ২১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

বর্ষা মৌসুমের ভারী বর্ষণের প্রথম ধাক্কাটা এসেছিল গত বুধবার (২ আগস্ট)। এরপর থেমে থেমে বৃষ্টি। সর্বশেষ গত তিন দিন ধরে টানা বৃষ্টিতে নগরীর অধিকাংশ এলাকা হয়ে গেছে জলমগ্ন। খলিফাপট্টি, চকবাজার, দেওয়ান বাজার, মুরাদপুর, ষোলশহর ২ নম্বর গেইট, বহদ্দারহাট, বাদুরতলা, শুলকবহর, মোহাম্মদপুর, কাপাসগোলা, কাতালগঞ্জ, বাকলিয়া, ফিরিঙ্গিবাজার, চান্দগাঁও, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকা, তিন পুলের মাথা, রিয়াজুদ্দিন বাজার, মুরাদপুর, চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ, কালারপোল, বড়পোল, হালিশহরসহ বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা।

সড়ক থেকে অলিগলি তলিয়ে গেছে হাঁটু থেকে কোমর সমান পানিতে। দোকানপাট ও বাসা-বাড়িতে পানি ঢুকে যাওয়ায় নষ্ট হচ্ছে আসবাবপত্র। জ্বলছে না রান্নার চুলা। এর মধ্যে বিভিন্ন বেসরকারি অফিস, শিল্প ও কলকারখানা খোলা থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন চাকরিজীবীরা। বাড়তি ভাড়া দাবি করছে রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকরা। উন্মুক্ত নালা ও ফুটপাতের ভাঙা স্ল্যাব পথচারীদের জন্য ঝুঁকি বাড়িয়েছে অনেকটা।

এদিকে, টানা বৃষ্টিপাতের কারণে ঝুঁকিতে থাকা আকবরশাহ এলাকার বিজয় নগর ও ঝিল পাহাড়ে বসবাসরত ২৫০টি পরিবারকে দু’টি আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। মহানগরে ৬টি সার্কেলের মাধ্যমে জেলা প্রশাসনের কয়েকটি টিম জানমাল রক্ষার্থে কাজ করছে। মাইকিং করে মানুষকে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে সরে যেতে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।

জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)-এর একটি, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক)-এর দুইটি এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি প্রকল্পের আওতায় ১১ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছে। আগামী বছরের জুনে এসব প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

পাঠকের মতামত: