সুপারস্টার হওয়া কি আর এতই সোজা? আজকে যাঁরা বলিউডের বড় তারকা, তাঁদের অনেকেরই প্রথম ছবি সাফল্যের মুখ দেখেনি। এমনকি অনেকের ক্যারিয়ারের প্রথম ছবি তো বক্স অফিসে রীতিমতো মুখ থুবড়ে পড়েছিল। অথচ তাঁদের পেছনেই আজ শিডিউলের পাওয়ার জন্য প্রযোজক–পরিচালকদের লম্বা লাইন। কথায় আছে না, একবার না পারিলে দেখো শতবার? অবশ্য শতবার চেষ্টা তাঁদের কাউকেই করতে হয়নি। কেউ দ্বিতীয় ছবিতে ‘ফ্লপ’ থেকে ‘হিট’ তারকা তকমা পেয়ে গেছেন। কয়েকজন তারকাকে আবার সফল হতে অপেক্ষা করতে হয়েছে বেশ কয়েক বছর।
কারিনা কাপুর খান
কারিনার প্রথম ছবি ‘রিফিউজি’। সে সময় তাঁর সবে ১৯। কাপুর পরিবারের এই কন্যা অভিনয়ে তখনো আনাড়ি। এদিকে বড় বোন কারিশমার জনপ্রিয়তা তখন তুঙ্গে। ছোট বোন যেন তাঁর জনপ্রিয়তার আড়ালে ঢাকা না পড়ে যান, সে জন্য স্বেচ্ছায় সেবার বিরতি নিয়েছিলেন কারিশমা কাপুর। কিন্তু তবু খুব একটা লাভ হয়নি। ‘রিফিউজি’ ফ্লপ হয়েছিল। যদিও নবাগত অভিনেত্রী হিসেবে কয়েকটা পুরস্কার জিতেছিলেন কারিনা। কয়েক বছর বাদে ‘চামেলি’ ছবিতে অভিনয় করে সমালোচকদের সুনাম কুড়ান। এরপর ‘ওমকারা’, ‘জব উই মেট’সহ অসংখ্য হিট ছবি উপহার দিয়েছেন দর্শকদের।
রণবীর কাপুর
বলিউডের কাপুর পরিবারের আরেক সদস্য রণবীরের অভিষেক হয় সঞ্জয় লীলা বনসালির বহুল আলোচিত ‘সাওয়ারিয়া’ ছবির মাধ্যমে। ছবিটি আলোচিত হলেও ব্যবসায়িক দিক থেকে এটি সফল হতে পারেনি। রণবীরের কাছ থেকে দর্শকদের যে প্রত্যশা ছিল, তা–ও পূরণ হয়নি সেবার। পরে অবশ্য রণবীর সেই প্রত্যাশা সুদে–আসলেই মিটিয়েছেন। এখনো মিটিয়ে যাচ্ছেন। বলিউডের বর্তমান সময়ের অন্যতম ‘হার্টথ্রব’ এই নায়ক।
শ্রদ্ধা কাপুর
শ্রদ্ধার বাবা বলিউড সিনেমার বিখ্যাত খলনায়ক শক্তি কাপুর। ‘তিন পাত্তি’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন এই নায়িকা। প্রথম ছবিতে কেউই মনে রাখেনি শ্রদ্ধাকে। দ্বিতীয় ছবিও তেমন আলোচনায় আসেনি। তবে তৃতীয় ছবি ‘আশিকি টু’ দিয়ে বাজিমাত করেন তিনি। এই ছবি তাঁকে এনে দেয় অভাবনীয় সাফল্য ও জনপ্রিয়তা। এরপর আর শ্রদ্ধাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
ক্যাটরিনা কাইফ
বলিউডের প্রথম সারির যে নায়িকাদের এখন নামডাক, তার মধ্যে ক্যাটরিনার অবস্থান এখন বেশ ওপরেই থাকার কথা। কিন্তু এই নায়িকার প্রথম ছবি ‘বুম’ শুধু যে ফ্লপ হয়েছিল তা-ই নয়, সমালোচিতও হয়েছিল খুব। বছর খানেক বাদে ‘ম্যায়নে প্যায়ার কিউ কিয়া’ ছবি দিয়েই মূলত পরিচিতি লাভ করেন ক্যাট। এরপর ‘নামাস্তে লন্ডন’, ‘জিন্দেগি না মিলেগি দোবারা’, ‘সিং ইজ কিং’, ‘এক থা টাইগার’সহ তাঁর অনেক ছবি সুপারহিট হয়েছে।
মাধুরী দীক্ষিত
মাধুরী আশির দশকের নায়িকা হলে কী হবে, বলিউডে তাঁর জনপ্রিয়তা কিন্তু এখনো অটুট। তবে এই অভিনেত্রীর প্রথম ছবি ‘অবোধ’ খুব বাজেভাবে ফ্লপ হয়েছিল। সেটা ১৯৮৪ সালের কথা। সফল হওয়ার জন্য মাধুরীকে অপেক্ষা করতে হয়েছিল দীর্ঘ চার বছর। ‘তেজাব’ তাঁর প্রথম বড় ‘হিট’। এরপর মাধুরী শুধু সামনে দিকেই এগিয়ে গেছেন। এখন ভারতের সর্বকালের সেরা সুপারস্টারদের মধ্যে মাধুরী দীক্ষিত একজন।
অক্ষয় কুমার
ব্যাংককের রেস্তোরাঁয় বাবুর্চির কাজ করতেন। ভারতে ফিরে মার্শাল আর্টের প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেন অক্ষয় কুমার । এক শিক্ষার্থীর উৎসাহেই বলিউডে প্রথম কদম রাখেন হাল সময়ের এই তারকা। কিন্তু পরপর তিনটি ছবি বক্স অফিসে ফ্লপ করে। তবু আশা ধরে রেখেছিলেন অক্ষয়। এরপর ‘খিলাড়ি’ ছবি তাঁকে এনে দেয় ব্যাপক জনপ্রিয়তা। মাঝে আবার কয়েক বছর তেমন আলোচনায় না থাকলেও সময়মতো ঠিকই ‘খিলাড়ি’ অক্ষয় বলিউডে তাঁর খেল দেখাতে শুরু করেন। এখন পর্যন্ত এই তারকার সাফল্যের পাল্লাই ভারী।
এমটিভি ইন্ডিয়া অবলম্বনে ঝুমু খান।
পাঠকের মতামত: