ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪

পেকুয়ায় সমাজসেবা কর্মকর্তার দুর্নীতি: বিকলাঙ্গ শিশুর টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

পেকুয়া প্রতিনিধি ::

পেকুয়ায় বিকলাঙ্গ শিশুর টাকা আত্মসাৎ করল সমাজ সেবা অফিসের সেই কর্মকর্তা। সামাজিক ঝুঁকি হ্রাসকরনে সরকারের সমাজসেবা অধিদপ্তর দেশব্যাপী প্রকল্প কাজ বাস্তবায়ন করছে। প্রতিবন্ধী ভাতাসহ মানবিক সহায়তা কাজে ওই অধিদপ্তর সামাজিক ঝুঁকি হ্রাসকরনে কাজ করছে। এ দিকে পেকুয়ায় বিকলাঙ্গ একটি ছোট্র শিশুর প্রতিবন্ধী ভাতা আত্মসাৎ করার গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। একদিকে বিকলাঙ্গ অন্যদিকে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ওই শিশুটি সরকারের এ সহায়তায় অন্তর্ভ্ক্তূ হয়েছে। শিশুটি সমাজসেবা অধিদপ্তর প্রদত্ত প্রতিবন্ধী ভাতার উপকারভোগী। সে হিসেবে তাকে প্রতিমাসে ৭শ টাকা ভাতা দেয়।

তথ্য সুত্র জানায়, ওই শিশুর নাম মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। বয়স-৬ বছর। তার পিতার নাম মো: মনিরুল ইসলাম। বাড়ি উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের সেনায়াত আলী পাড়া গ্রামে। ২০১৭ সালে ওই শিশুটি প্রতিবন্ধী কোটায় ভাতায় উপকারভোগী হয়েছেন। ওই বছর সেপ্টেম্বর মাসে তার অনুকুলে ভাতা বরাদ্দ দেয়। প্রতি ৬ মাস পর ভাতার টাকা ছাড় দেয়। ৬ মাসে ৪২০০ টাকা হারে ভাতার টাকা উত্তোলন করে। দ্বিতীয় দফা ভাতা তুলতে গিয়ে বিপত্তিতে পড়তে হয় ওই শিশুকে। নানান ধরনের অজুহাত সৃষ্টি করা হয়েছে। সমাজসেবা পেকুয়া অফিসের মাঠ কর্মকর্তা শওকত ওসমান ভাতায় অন্তরায় হন। প্রতিবন্ধীর টাকা ওই কর্মকর্তার পকেট ভরতে নানান ধরনের বাহানা চল চাতুরি ও অজুহাত তৈরী করে। কুলোপ দৃষ্টিতে ওই কর্মকর্তা মাসিক উত্তোলিত অর্ধেক টাকা পকেটে নিতে দুরন্ত কৌশল অবলম্বন করে। এক পর্যায়ে দ্বিতীয় দফায় উত্তোলিত টাকা থেকে সমান অর্ধেক টাকা তার পকেট ভরে। এ ছাড়া ওই শিশুকে অনলাইন রেকর্ডভূক্তি দেখিয়ে তিন থেকে চার দফা ঘুষ নেয়। এ ভাবে প্রতিবন্ধী ওই শিশুটির প্রতি তার অমানসিকতার লোলুপ দৃষ্টি পড়ে।

সুত্র জানায়, টাকা দিতে দিতে শিশুটির পিতা ওই সেবা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার মত অবস্থায় পতিত হয়। বিকলাঙ্গ শিশুর পিতা মনিরুল ইসলাম পেশায় একজন দিন মজুর। তিনিও শারীরিক অক্ষম ব্যক্তি। দিন মজুরী করে সংসার চালান। মাতা সাজেদা বেগম জানায়, সরকার আমার প্রতিবন্ধী এ শিশুটিকে ভাতা দিচ্ছে। অথচ অফিসের ওই কর্মকর্তা সব টাকা আত্মসাতের পথ খোঁজছে। টাকা কয়েকবার দিয়েছে। দ্বিতীয় দফায় যা টাকা পেয়েছি এর সমান টাকা তারা আত্মসাৎ করেছে। আমি জেনেছি এটি হয়রানি ও দুর্নীতি।

মনিরুল ইসলাম জানায়, শওকত আমার কাছ থেকে ফরম পূরন বাবদ ১০০০ টাকা, এর আগে তালিকাভূক্তি করতে নেয় ২ হাজার টাকা, এরপর পুনরায় ২ হাজার টাকা নেয়। এ ভাবে প্রতি ৬ মাসে ২ হাজার টাকা হারে ঘুষ দিতে হয়। সমাজ সেবা কর্মকর্তা শওকত ওসমান জানায়, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। অফিস যদি টাকা নিয়ে থাকে অবশ্যই ওই টাকা ফেরত দেওয়া হবে। অফিসে আসতে হবে। সমাজসেবা কর্মকর্তা পেকুয়ার হামিদুল্লাহ মিয়া জানায়, ছয় বছর বয়স থেকে ভাতায় অন্তর্ভূক্তি করা হয়। এ সবে টাকার কোন প্রয়োজন নেই। ওই শিশুর কাছ থেকে টাকা নিয়ে থাকলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি তদন্ত চলবে।

পাঠকের মতামত: