পেকুয়া প্রতিনিধি ::
পেকুয়ায় ৩ ছাত্রকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। জখমী ওই ছাত্রদের উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এদের মধ্যে ১ জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে দ্রুত এ্যাম্বুলেন্স যোগে চমেক হাসপাতালে রেফার করে। এর সুত্র ধরে পেকুয়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান উপকুলীয় কলেজে বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্টান পন্ড হয়েছে। পুলিশ এ ঘটনায় ২ জনকে আটক করেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এ সময় উত্তেজনা প্রশমিত করতে পুলিশ কলেজ এরিয়ায় নিরাপত্তা বলয় তৈরী করে। ২৮ মার্চ (বৃহস্পতিবার) দুপুর ১ টার দিকে পেকুয়া শহীদ জিয়াউর রহমান উপকুলীয় কলেজে এ ঘটনা ঘটে। ছুরিকাঘাতে জখমী ৩ যুবকের নাম সাইফুল ইসলাম (২০), লিয়ন (১৬) ও ফোরকান (১৭)। এদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম জিয়াউর রহমান কলেজের প্রাক্তন ছাত্র বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে ও অপর ২ জন তার সহযোগী। সাইফুল ইসলাম সদর ইউনিয়নের শেখেরকিল্লাঘোনা গ্রামের মাষ্টার নুরুল ইসলামের ছেলে, লিয়ন মগনামা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ইউনুছ চৌধুরীর সন্তান। আটককৃতরা হলেন শহীদ জিয়াউর রহমান উপকুলীয় কলেজের ১ম বর্ষের ছাত্র আরমানুল হক প্রিন্স ও জাহেদ। প্রত্যক্ষদর্শী সুত্র জানায়, ওই দিন জিয়াউর রহমান কলেজে ২০১৯ সালে এইচ,এস,সি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্টান ও দোয়া মাহফিল হচ্ছিল। দুপুরের দিকে হঠাৎ মারপিট ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় জিয়া কলেজের ১ম বর্ষের ছাত্র আরমানুল হক প্রিন্স ও সাবেক ছাত্র সাইফুল ইসলামের মধ্যে হাতাহাতি হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, এ সময় প্রিন্স সাইফুল ইসলামকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। লিয়ন ও ফোরকান সাইফুলকে বাঁচাতে সেখানে পৌছে। এ সময় এ ২জনকেও ছুরিকাঘাত করে। এ পরিস্থিতিতে হঠাৎ কলেজে ভীতি ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত দেখে কলেজ কর্তৃপক্ষ অনুষ্টান বন্ধের ঘোষনা দেয়। ছাত্র-ছাত্রীদের অনুষ্টানসহ দ্রুত ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে নির্দেশ দেয় কলেজ অধ্যক্ষ ওবাইদুর রহমান। এ সময় শিক্ষার্থীরা দ্রুত কলেজ থেকে নিরাপদ স্থানের দিকে ছুটছিলেন। শহীদ জিয়াউর রহমান উপকুলীয় কলেজের শিক্ষক ড. জাকির হোসেন হাওলাদার ছুরিকাঘাতের সত্যতা স্বীকার করেছেন। তবে তিনি জানান, ঘটনা হয়েছে কলেজ এরিয়ার বাইরে। শান্তি শৃংখলা বিনষ্টের এ দায় কলেজের নয় বলে তিনি মত দেন। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের সময়েও এদের মধ্যে বিরোধ দেখা গেছে। প্রেম সংক্রান্ত বিষয়ে মুলত এদের বিরোধের উৎপত্তি সেটি চিহ্নিত হয়েছে। জিয়াউর রহমান কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সাংবাদিক ছফওয়ানুল করিম জানান, আমি বক্তব্য দিচ্ছিলাম। এমন মুহুর্তে ছাত্রদের মধ্যে মারপিট হয়েছে। এর দায় কলেজের উপর বর্তাবে কেন? এ পরিস্থিতিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ মোটেই দায়বদ্ধ নয়। কারও ব্যক্তিগত দায় কলেজ কর্র্তৃপক্ষ নিবে কেন। পেকুয়া থানার ওসি (তদন্ত) মিজানুর রহমান জানায়, আমরা এসে উত্তেজনা প্রশমিত করেছি। কিছু উত্তেজিত ছাত্র পরিস্থিতি উত্তেজনা করার চেষ্টা করছিল। তারা পুলিশকেও লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোঁড়ে। ইটের একটি টুকরো আমার শরীরে লাগে। আমি মনে করি এ ঘটনাগুলি কলেজ কর্তৃপক্ষের সংকীর্ণ মনোভাব, একপেশী আচরন ও ব্যর্থতায় হয়ে থাকে। তারা এ ধরনের অনুষ্টান করবে পুলিশকে পর্যন্ত অবহিত করেন না। কলেজের অধ্যক্ষ ওবাইদুর রহমান জানায়, যারা আঘাত হয়েছে এরা কলেজের কেউ নন। বহিরাগত এ সব লোকের সাথে কলেজের শিক্ষার্থীদের মারপিট হয়েছে। আমরা এ ঘটনায় মোটেই বিচলিত নই। আমরা কেন এর দায় নেব। পুলিশ কর্মকর্তার এ বক্তব্য অবান্তর। আমাদের এ অনুষ্টানে ওসিকে বিশেষ অতিথি করেছি। আমরা ওসি ইনচার্জকে দাওয়াত দিয়েছি। সেটি তদন্ত ওসির বরদাশত হচ্ছে না বলে মনে হচ্ছে। হয়তো ওদের মধ্যে গ্যাপ থাকতে পারে। এখানে আমাদের কোন ব্যর্থতা নেই।
পাঠকের মতামত: